কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়ক ধরে নতিডাঙা হয়ে গোড়ভাঙা মোড়। সেখান থেকে একটা রাস্তা গ্রামের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। রাস্তার দু’ধারে বাঁশবাগান আর পুকুর। গ্রামের একেবারে শেষপ্রান্তে ‘দাতাবাবা লালন আশ্রম’। আশ্রমের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই কাঁঠালগাছের গোড়ায় একটা ছাগল বাঁধা। সেই ছাগলকেই পরম যত্নে গাছ থেকে কাঁঠাল পাতা ভেঙে খাওয়াচ্ছেন ছ’ফুট দুই ইঞ্চির বাবু ফকির। কাগজেকলমে নাম নুরুল ইসলাম। ছোটবেলায় মা নুরুন্নেসা বিবি আদর করে ডাকতেন ‘বাবু’। সেই নামেই লোকসঙ্গীতের দুনিয়ায় পরিচিতি তাঁর।
বাবু ফকিরের একটাই উদ্দেশ্য— লালনগীতি, সুফি সঙ্গীতের সম্প্রীতির বাণী ও সুর দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে দেওয়া বিশ্ব দরবারে। গোড়ভাঙার এক আখড়ায় একচিলতে ঘরে শুরু হয়েছিল বাবু ফকিরের ‘অবৈতনিক বাউল শিক্ষা কেন্দ্র’। ২০১৭ সালে স্মার্ট ফোন আর নেটমাধ্যমের দৌলতে বাবু ফকিরের যোগাযোগ তৈরি হল জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। নিজের প্রচেষ্টাতেই জেলা থেকে জেলান্তরের গণ্ডি ছাড়িয়ে খুঁজে আনতে থাকলেন খুদে প্রতিভাদের। এমনকি, বিভিন্ন অনাথ আশ্রম থেকেও তাঁর বিনা বেতনের স্কুলে ভিড় বাড়তে থাকল।