প্রকৃতির সান্নিধ্যে একান্তে বেশ খানিকটা সময় কাটাতে চান? আপনার গন্তব্য হতেই পারে তামিলনাড়ুর শৈল শহর কুন্নুর। ছবি: সংগৃহীত।
আদ্রিজ ও রোহিনী দু’জনেই বেড়াতে ভালবাসেন। তবে খুব চেনা বা জনবহুল স্থান তাঁদের পছন্দ নয়! বিয়ের পর মধুচন্দ্রমার জন্য দু’জনেই এমন জায়গার খোঁজ করছেন, যেখানে প্রকৃতির সান্নিধ্যে একান্তে বেশ খানিকটা সময়ও কাটানো যাবে আর ঘোরাঘুরিও করা যাবে জমিয়ে। আপনিও কি এমনই জায়গার সন্ধানে রয়েছেন? তবে আপনার গন্তব্য হতেই পারে তামিলনাড়ুর শৈল শহর কুন্নুর। উটির কাছেই এই শহরের অবস্থান।
চারপাশে নীলচে পাহাড়ে সবজে পরত দেওয়া পাহাড়ি ঢাল বেয়ে কফি ও চায়ের খেত। চাবাগানের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আর নীলগিরি পাহাড়ে ট্রেক করার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, সবটাই উপভোগ করতে পারবেন এই শহরে। সিলভার ওক-ফার্ন-ইউক্যালিপটাস-পাইন গাছে ভরা কুন্নুর শহরটা ঘুরে দেখতে মন্দ লাগবে না আপনার। পাহাড়ের মৃদু ঢাল বেয়ে শুধুই সবুজের আশ্বাস। কুন্নুরে গিয়ে ডলফিন নোজ ভিউ পয়েন্ট, সিমস পার্ক, ল্যাম্ব রক, দ্রুগস ফোর্ট, ওয়েলিংটন গলফ কোর্স, লস ফলস ঘুরে দেখতেই পারেন। চারদিকে সবুজ আর ঠান্ডা পরিবেশে দিন দুয়েক কাটিয়ে চলে যেতে পারেন উটি।
সিলভার ওক-ফার্ন-ইউক্যালিপটাস-পাইন গাছে ভরা কুন্নুর শহরটা ঘুরে দেখতে মন্দ লাগবে না আপনার। ছবি: সংগৃহীত।
ছায়াচ্ছন্ন নিরালা পাহাড়ি পথের ধারে ব্রিটিশ আমলের দৃষ্টিনন্দন বাংলো বাড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শহরের নানা প্রান্তে। সুদৃশ্য হলিডে হোম, সুন্দর দেখতে কটেজ, সুদৃশ্য হোম স্টে থাকার জায়গা নিয়েও কোনও সমস্যা নেই। সারি সারি হোম মেড চকোলেটের লোভনীয় হাতছানি ও বিখ্যাত নীলগিরি চায়ের দোকান রয়েছে শহরের অলিগলিতে।
কুন্নুর থেকে উটির দূরত্ব মাত্র ১৯ কিলোমিটার। যাওয়ার পথ খুব সুন্দর ঘন সবুজে ঢাকা। হঠাৎ হঠাৎ মেঘের দল যেন চারপাশটা ঝাপসা করে যায়। গাড়িতে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন উটি। হাতে সময় থাকলে টয় ট্রেনে চেপেও যেতে পারেন। সেই যাত্রাপথটি হবে আরও সুন্দর। উটিতে গিয়ে বটানিক্যাল গার্ডেন, রোজ গার্ডেন, থ্রেড গার্ডেন, স্টোন হাউস, মিউজিয়াম, বোট ক্লাব, উটি লেক দোদাবেতা শৃঙ্গ আরও অনেক স্থানই ঘুরে দেখতে পারেন। দিন দুয়েক চোখের পলকে কী ভাবে পেরিয়ে যাবে বুঝতেও পারবেন না।
কুন্নুর-উটি অঞ্চলটি বলিউডের পরিচালকদেরও ভারী পছন্দের। ছবি: সংগৃহীত।
পাখিপ্রেমীদের কাছে ঈপ্সিত পাখিটির দেখা পাওয়া, লেন্স বন্দি করার মোক্ষম পছন্দের জায়গা কুন্নুর নীলগিরির কাছেই মধুমালাই জঙ্গল। কুন্নুর-উটি অঞ্চলটি বলিউডের পরিচালকদেরও ভারী পছন্দের। ক্যামেরায় ধরতে গেলেই মনোরম ছবি ওঠে। দেখে মনে হবে যেন সব ছবিই হাতে আঁকা।
কুন্নুর থেকে উটির দূরত্ব মাত্র ১৯ কিলোমিটার। যাওয়ার পথ খুব সুন্দর ঘন সবুজে ঢাকা। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে যাবেন?
বেঙ্গালুরু থেকে সড়কপথে যাওয়া যায় কুন্নুর। কলকাতা থেকে কোয়েম্বাটুরগামী ট্রেনে চড়েও যেতে পারেন কুন্নুর। কোয়েম্বাটুর স্টেশন থেকে সড়কপথে কুন্নুর যেতে সময় লাগে দু’ঘণ্টা। আকাশপথে যেতে হলে সবচেয়ে কাছের হল কোয়েম্বাটুর বিমানবন্দর।