৭৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ওখরে অচেনা সিকিমের এক অপূর্ব গ্রাম্য ছবি তুলে ধরে পর্যটকদের কাছে। ছবি: সুদীপা দাশগুপ্ত
মধুচন্দ্রিমা মানেই এখন নয় মলদ্বীপ, আর না হয় মরিশাস! ফেসবুক খুললেই দেখা যাচ্ছে মধুচন্দ্রিমার জন্য ভারতীয়দের পছন্দের তালিকায় থাকছে এই দুই দেশ। তবে এই দেশেও কিন্তু মধুচন্দ্রিমা কাটানোর অনেক জায়গা আছে। চেনা শহরের বাইরে শান্ত পরিবেশে প্রিয়জনের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে চাইলে আপনার গন্তব্য হতে পারে সিকিমের ওখরে।
৭৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ওখরে অচেনা সিকিমের এক অপূর্ব গ্রাম্য ছবি তুলে ধরে পর্যটকদের কাছে। সৌন্দর্যমণ্ডিত সেই ছোট্ট গ্রামে দূষণ নেই, কোলাহল নেই, ব্যস্ততা নেই, আছে শুধু অপার শান্তি। সুখানুভূতি আর প্রাণভরে নিশ্বাস নেওয়ার জন্য দেদার অক্সিজেন। আর হ্যাঁ, অবশ্যই আছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গের নজরকাড়া রূপ। সারা গ্রামে চাষাবাদ হয় বিস্তর। কমলালেবু, মটর, আদা, এলাচ, লঙ্কার চাষ প্রচুর পরিমাণেই হয়। গাছপালা, ক্ষেত, চারণভূমি, উপত্যকা— এই সব কিছু মিলিয়ে যে অন্তহীন সবুজ রঙের চিত্রণ গোটা নিসর্গের ক্যানভাসে, তা শুধু যে চোখই জুড়োবে তা নয়, মনকেও করবে আহ্লাদিত। প্রিয়জনের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর জন্য এমন পরিবেশ পেলে তো আর কোনও কথাই নেই। এখানে গেলে বিলাসবহুল রেস্তরাঁ হয়তো পাবেন না। তবে দ্বিতল হোমস্টেগুলিতে যেই আতিথেয়তা আপনি পাবেন, তা মন ছুঁয়ে যাবে আপনার। একটি দিন গ্রামেই কাটিয়ে পরের দিন আপনার গন্তব্য হতে পারে বার্সে।
নানা ধরনের পাখির দেখা যেমন পাবেন, তেমনই ভাগ্য সহায় হলে বিরল প্রজাতির রেড পান্ডার দেখাও পেয়ে যেতে পারেন হঠাৎই । ছবি: সুদীপা দাশগুপ্ত
বার্সে রডোডেনড্রন স্যাঙ্কচুয়ারির মধ্যেই বার্সেতে পৌঁছতে হলে আপনাকে ট্রেক করতে হবে। হিলে অবধি আপনি গাড়িতে যেতে পারেন। সেখান থেকে মনোরম হাঁটাপথে সাড়ে চার কিলোমিটার পথ পেরোলে পৌঁছে যাবেন বার্সে। সময় লাগবে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। উচ্চতা ১০,০০০ ফুট। পুরো হাঁটার রাস্তাটাই গিয়েছে ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। চেস্টনাট, ওক, ম্যাপ্ল, ফার, বাঁশের মতো নানা রকমের গাছ ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির রডোডেনড্রন, অর্কিডেও সমৃদ্ধ করেছে হেঁটে যাওয়ার পথটিকে। মার্চ-এপ্রিল মাসে এলে দেখতে পাবেন বিভিন্ন রঙের রডোডেনড্রনের অপূর্ব দৃশ্য পুরো পথ জুড়েই।
নানা ধরনের পাখির দেখা যেমন পাবেন, তেমনই ভাগ্য সহায় হলে বিরল প্রজাতির রেড পান্ডার দেখাও পেয়ে যেতে পারেন হঠাৎই । কাঞ্চনজঙ্ঘা-সহ এক বিস্তৃত তুষারশ্রেণির মনোরম দৃশ্য চোখে পড়বে বার্সে ট্রেকার্স হাটের সামনে থেকে। সেখানেই টেন্টে আপনি চাইলে রাত্রিবাস করতেই পারেন। রোমাঞ্চটা মন্দ লাগবে না!
এখানে গেলে বিলাসবহুল রেস্তরাঁ হয়তো পাবেন না, তবে দ্বিতল হোমস্টেগুলিতে যেই আতিথেয়তা আপনি পাবেন, তা মন ছুঁয়ে যাবে আপনার। ছবি: সুদীপা দাশগুপ্ত
কোথায় থাকবেন?
ওখরে একাধিক হোমস্টে আছে। থাকতে পারেন রয়্যাল বার্সে হোমস্টেতে। যোগাযোগ: ০৮৯৪২৮৩১৮৭৫
এ ছাড়াও রয়েছে কিলখোর ইন হোমস্টে। যোগাযোগ: ০৭৬৭৯৪৫২১৯৪
কী ভাবে যাবেন?
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করেই পৌঁছে যেতে পারবেন ওখরে। সেখান থেকে বার্সে। সফরের কয়েকটি দিনের জন্য একটি গাড়ি ভাড়া করে নিতে পারেন। প্রতি দিনের জন্য ভাড়া পড়বে ৪০০০ টাকার কাছাকাছি।