travel

শান্ত পরিবেশে ছুটি কাটানোর কথা ভাবছেন? পাহাড়-নদী-জঙ্গল ঘেরা শ্রীখোলা থেকে ঘুরে আসুন

সান্দাকফু-ফালুট ট্রেকিং করতে যেতে চাইলে পথেই পড়বে শ্রীখোলা। রিম্বিক থেকে খুব কাছে, মিনিট পনেরোর রাস্তা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে এমন মনোরম পরিবেশে ছুটি কাটাতে মন্দ লাগবে না!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:৫২
Share:

সান্দাকফু-ফালুট ট্রেকিং করতে যেতে চাইলে পথেই পড়বে শ্রীখোলা। ছবি: সংগৃহীত।

শহরে জাঁকিয়ে বসেছে শীত। বছরের এই সময়টা যেন বাড়িতে মন টেকে না! মনের ভিতর ইচ্ছেডানা পাখা মেলতে শুরু করেছে। কোথাও বেড়াতে না গেলেই নয়। কিন্তু কোথায় যাওয়া যায়? অফিস থেকে তো কিছুতেই তিন-চার দিনের বেশি ছুটি পাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার গন্তব্য হতেই পারে শ্রীখোলা। দার্জিলিংয়ের একটি ছোট্ট গ্রাম শ্রীখোলা। তথাকথিত পর্যটনকেন্দ্র নয়, তবে শ্রীখোলা যাঁরা এক বার গিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের মনের মণিকোঠায় চিরদিনের জন্য বেঁচে আছে পাহাড়-নদী-জঙ্গল ঘেরা শ্রীখোলার কিছু সুন্দর ফ্রেম।

Advertisement

সান্দাকফু-ফালুট ট্রেকিং করতে যেতে চাইলে পথেই পড়বে শ্রীখোলা। রিম্বিক থেকে খুব কাছে, মিনিট পনেরোর রাস্তা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে এমন মনোরম পরিবেশে ছুটি কাটাতে মন্দ লাগবে না! এই জায়গায় গেলেই আপনাকে স্বাগত জানাবে শ্রীখোলা নদীর কলরব, নদীর উপরেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে দু’শো ব‌ছরের পুরনো ঝুলন্ত ব্রিজ। অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য আর তারই মাঝে ইতিউতি ছড়িয়ে কিছু কাঠের বাড়িঘর। বাড়িগুলি সুদৃশ্য কটেজের মতো দেখতে লাগে। সামনে ছোট ছোট ফুলের বাগান। নদীর ধারে গিয়ে কিছু ক্ষণ বসলে বিশুদ্ধ বাতাসে শরীর-মনের ক্লান্তি উধাও হবে। শ্রীখোলা গ্রামের মাঝেই রয়েছে একটি মন্যাস্ট্রি। সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানের পাদদেশে শ্রীখোলা গ্রামের অবস্থান। গ্রামের প্রান্তে রয়েছে বার্চ, পাইনের বন। এক দিন জাতীয় উদ্যানটিও ঘুরে দেখতে পারেন। হরেক প্রজাতির বন্য প্রাণীর দেখা মিলবে সেখানে। গ্রামের মধ্যে বড় এলাচ, ভুট্টার চাষ হয়। এখানে থ্রাশ, সুইফ্‌ট, স্কারলেট মিনিভেট, জাঙ্গল ওয়ার্বলারের মতো পাখির আনাগোনাও আছে। অখণ্ড নিস্তব্ধতার নেশায় তলিয়ে যেতে যেতে মনে হতে পারে, আপনি বোধ হয় সভ্য মানুষের পৃথিবী থেকে বিচ্যুত হয়ে কোটি আলোকবর্ষ দূরের অন্য এক গ্রহে চলে এসেছেন।

শ্রীখোলায় আপনি বিলাসবহুল হোটেল পাবেন না।

এক দিন গ্রামে কাটানোর পর সময় থাকলে ট্রেকিংয়ের সু্যোগও যথেষ্ট। শ্রীখোলা থেকে ৬ কিলোমিটার ট্রেক করে ৭,১৫০ ফুট উচ্চতার গুরদাম উপত্যকায় যাওয়া যায়। ঘন অরণ্যে ঘেরা গুরদাম উপত্যকার বন্য রূপের সৌন্দর্য নজরকাড়া। এই গুরদাম থেকে আরও ১০ কিলোমিটার ট্রেক করে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পয়েন্ট ১১,৯২৯ ফুট উচ্চতার সান্দাকফুতে পৌঁছে যাওয়া যায়। অর্থাৎ শ্রীখোলা থেকে মোট ১৬ কিলোমিটার ট্রেক করে সান্দাকফু পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। আবার শ্রীখোলা থেকে ১২ কিলোমিটার ট্রেক করে রাম্মাম পৌঁছনো যায়। সেখান থেকে ৯ কিলোমিটার এগলে গোর্কে গ্রাম। গোর্কে থেকে আরও ১৫ কিলোমিটার ট্রেক করে পৌঁছনো যায় ফালুট, উচ্চতা ১১,৮১১ ফুট।

Advertisement

কী ভাবে যাবেন?

গাড়ি ভাড়া করে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং চলে যান। দার্জিলি‌ং থেকে আর একটা গাড়ি ভাড়া করে ঘণ্টা ছয়েকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন শ্রীখোলা। গাড়ি না চাইলে বাসে করেও রিম্বিক পৌঁছে যেতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

শ্রীখোলায় আপনি বিলাসবহুল হোটেল পাবেন না। ছোট ছোট লজ, হোটেল আর হোমস্টে রয়েছে। হোটেল শোভরাজ, ফোন: ৯৯৩৩৪-৮৮২৪৩, ৯৮৩২৩-৭৫৫৪৬। লিপ্পোহোচ্ছা হোমস্টে, ফোন: ৮৯৭২৮-৫৯২৩১, ৯৭৩৫০-৩৪৬২৬। পানকর্মা হোমস্টে, ফোন: ৭০০১৯-৬৭২৯৭। রেড পান্ডা হোটেল, হোমস্টে, ফোন: ৯৭৩৩০-৬১৭৯৩। ট্রেকার্স হাট, ফোন: ৯৭৪৯৮৬৪৮৬৫। রিভার ভিউ, ফোন: ৯৭৩৩৩৯৩৬১৭। ক্রেজি স্টে, ফোন: ৬২৯১৭৫০০১৩। ক্লাব মুসাফির, ফোন: ৯৯৩৩৩১২০১২।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement