জোধপুরে ঘুরে এলে সারা আলি খান। আপনিও কি সেখানে যেতে চান? গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
অভিনয় জগৎ, শুটিংয়ের ব্যস্ততা যতই থাক, মাঝেমধ্যেই দেশভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন অভিনেত্রী সারা আলি খান। তাঁর সমাজমাধ্যমে চোখে রাখলেই দেখা যায় সে সব ছবি। পটৌডি পরিবারের এই কন্যার বেড়ানোর শখের কথা তাঁর অনুরাগী মহল জানে। সম্প্রতি নায়িকার সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নেওয়া ছবি থেকেই জানা গিয়েছে, রাজস্থানে গিয়েছেন তিনি। জোধপুরে ঘুরছেন।
রাজস্থানের ঐতিহাসিক শহর জোধপুর জনপ্রিয় একটি পর্যটন কেন্দ্র। এই শহরে ছড়িয়ে রাজপুতদের নানা শিল্প-স্থাপত্য। এখানেই রয়েছে বহু প্রাচীন মেহরানগড় দুর্গ। জোধপুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা থাকলে জেনে নিন এখানে কী কী দেখবেন?
অভিনেত্রী সারা আলি খানের অবসর যাপন । ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
মেহরানগড় দুর্গ: জোধপুরের মূল আকর্ষণ ৪০০ ফুট উঁচু মেহরানগড় দুর্গ। ১২০০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই দুর্গের ভিতরে গেলে মনে হবে যেন আর এক শহর। ১৪৫৯ সালে রাজপুত রাজা রাও জোধা এটির নির্মাণ শুরু করেন। পরবর্তীতে অন্যান্য রাজাদের আমলে দুর্গটি আড়ে-বহরে বেড়ে ওঠে। এখানে রয়েছে সাতটি প্রবেশপথ। বিভিন্ন যুদ্ধজয়ের পর রাজপুত রাজারা সেগুলি জয়ের স্মারক হিসাবে নির্মাণ করিয়েছিলেন। কোনওটির নাম জয় পোল, কোনটি ফতেহ্ পোল।
মেহরানগড় দুর্গের রাতের রূপ। ছবি: সংগৃহীত।
এই দু্র্গের ভিতরে রয়েছে রাজপুত ঘরানার স্থাপত্যশৈলী। কাচের কারুকাজ করা সিসমহল। সোনা, রুপোর জল দিয়ে আঁকা চিত্র, রানিদের ব্যবহৃত অলঙ্কার, পালকি থেকে রাজাদের তরবারি, পোশাক। বিশাল এই দুর্গ ভাল ভাবে ঘুরে দেখতে গাইডের সহায়তা প্রয়োজন।
প্রাচীন জলাশয়: জোধপুরে এলে গভীর এই কুয়ো বা জলাশয় দেখতেই হবে। রাজস্থানের আনাচ-কানাচে রয়েছে ইতিহাস। রয়েছে নানা গল্প। সেই কাহিনি ছড়িয়ে পড়ে লোকমুখে। জোধপুরের প্রাচীন এই জলাশয়টি রানি তোয়ারজি বা তুরজির আবদারে তাঁর স্বামী অভয় সিংহ বানিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। ৩০০ ফুট গভীর এই কূপের চারপাশে রয়েছে অজস্র ধাপ বা সিঁড়ি। শোনা যায়, রানি ছিলেন গুজরাতের রাজকুমারী। সেখানে এমন জলাধার ছিল। রাজপুত পরিবারে রানি হয়ে আসার পর তাঁর আবদারে এটি তৈরি হয়। স্থানীয় লোকজন এই স্থানকে বলেন 'তুরজি কা ঝলরা'। S
এই সেই জলাশয়। ছবি: সংগৃহীত।
যশবন্ত থাড়া: মেহরানগড়ের অদূরেই রয়েছে মহারাজা যশবন্ত সিংয়ের স্মৃতিসৌধ। সাদা মার্বেল পাথরের কারুকাজের প্যালেসটি ‘যশবন্ত থাড়া’ নামে পরিচিত। সৌধের উল্টোদিকে জলাধার। শীতের মরসুমে এখানে উড়ে বেড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি।
উমেদ ভবন: মহারাজা উমেদ সিংহের নামাঙ্কিত প্রাসাদটি এখন অবশ্য পর্যটকেরা শুধু বাইরে থেকেই দেখতে পান। এই প্রাসাদ এখন নামী হোটেল। ভিতরে ৩৪৭টি ঘর রয়েছে। উমেদ ভবনের একাংশ সংগ্রহশালা। সেখানে যেতে পারেন পর্যটকেরা। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক কাহিনি। এক বার এক সন্ন্যাসী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সেই অঞ্চলে খরা হবে। তা মিলে যায়। প্রজারা মহারাজ উমেদ সিংহের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। প্রজাদের কাজ দেওয়ার জন্যই রাজা এই ভবন নির্মাণ করান।
বালসমন্দ হ্রদ: জোধপুর-মন্ডোর রাস্তা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই হ্রদটি আর একটি পর্যটক আকর্ষণ। মন্ডোরে জল সরবরাহ হয় এখান থেকেই। স্থানীয়রা শীতের মরসুমে এখানে পিকনিক করতে আসেন। জলাশয় ঘিরে রয়েছে বিশাল উদ্যান। রয়েছে লেক প্যালেস।