জাপানের পুতুলগ্রাম। ছবি: ‘‘নাগোরো ভ্যালি অফ্ ডল্স ’’ তথ্যচিত্রের দৃশ্য।
গ্রামের চায়ের দোকানে চা বিক্রেতাও পুতুল, খদ্দেরও পুতুল। ইস্কুলের ছাত্রছাত্রীও পুতুল, আবার চক হাতে শিক্ষকও তাই। গ্রামের মাঠে ধান বোনে একদল পুতুল-চাষী। জাপানের ক্ষুদ্রতম ও কম বসতিপূর্ণ দ্বীপ শিকোকুর অন্তর্গত গ্রাম ‘নাগোরো’-তে দেখা যায় এই দৃশ্য।
বর্তমানে এই গ্রামে মাত্র ২৭ জন মানুষ বাস করেন। ছাত্রছাত্রী না থাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে গ্রামের একমাত্র স্কুল। গ্রামের অধিকাংশ বাড়িই এখন পরিত্যক্ত। আর এই পরিত্যক্ত বাড়িগুলি দখল করছে মানুষের মতো দেখতে পুতুলের দল!
জাপানের পুতুলগ্রাম নাগোরো। ছবি: ‘‘নাগোরো ভ্যালি অফ্ ডল্স ’’ তথ্যচিত্রের দৃশ্য।
নাগোরো গ্রামে জন্মানো শেষ মানব সন্তানের নাম সুকিমি আয়ানো। সুকিমির পরিবারও জীবিকার খোঁজে নাগোরো ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। ৪৯ বছর বয়সে ফের গ্রামে ফিরে আসেন সুকিমি। ছোটবেলার গ্রামকে এমন জনশূন্য দেখে তাঁর মনে এক অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া হয়।
নিজের ছেলেবেলার গ্রামের বুক থেকে নিঃসঙ্গতার ছবি মুছে দিতে তিনি নিজের হাতে পুতুল তৈরি শুরু করেন। প্রায় মানুষের মতো দেখতে এই পুতুলগুলি দিয়ে সাজিয়ে দেন গ্রামের পরিত্যক্ত দোকান, বাড়িঘর, স্কুলবাড়ি।
স্কুলবাড়ি ভর্তি পুতুল ছাত্রছাত্রী। ছবি: ‘‘নাগোরো ভ্যালি অফ্ ডল্স ’’ তথ্যচিত্রের দৃশ্য।
সুকিমির এই অভূতপূর্ব উদ্যোগে এখন আর খালি পড়ে নেই নাগারো গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দার সংখ্যা বেশি না হলেও ভিড় হয় পর্যটকদের। ফলে নিঃসঙ্গতা মুছে, উপার্জনও বেড়েছে নাগোরো গ্রামে।
২০১৪ সালে ফ্রিৎস স্যুম্যানের ‘‘নাগোরো ভ্যালি অফ্ ডল্স ’’ তথ্যচিত্র সুকিমির এই ঘটনাকে জগতের সামনে নিয়ে আসে। বর্তমানে বহু পর্যটকের আকর্ষণের কেন্দ্র, জাপানের এই পুতুলগ্রাম।