Travel With Kids

শিশুকে নিয়ে নাথুলার মতো পাহাড়ি জায়গায় যাবেন? সন্তানের বয়স কত হলে ভাল? সঙ্গে কী রাখবেন?

উঁচু পাহাড়ি জায়গায় শিশুদের নিয়ে যাওয়া কি ঠিক হবে? হাজার প্রশ্ন থাকে অভিভাবকদের মনে। শি‌শুকে নিয়ে পাহাড়ে ভ্রমণের অভি়জ্ঞতা ভাগ করে নিলেন মায়েরা। পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ১৮:৩১
Share:

নাথুলা, গুরুদোংমারের মতো অনেক উঁচু পাহাড়ি জায়গায় শিশুদের নিয়ে যাওয়া কতটা নিরাপদ? ছবি: শাটারস্টক।

‘ছেলের বয়স তিন। ওকে নিয়ে যাওয়া যাবে ছাঙ্গু-বাবা মন্দির, নাথুলার মতো জায়গায়?’

Advertisement

‘চার বছরের মেয়েকে নিয়ে গুরুদোংমার যাওয়া কি ঠিক হবে?’

‘এক বছরের শিশুকে নিয়ে শীতে দার্জিলিং গেলে কোনও সমস্যা হবে না তো!’

Advertisement

কারও আবার প্রশ্ন থাকে, ‘ছ’মাসের সন্তান নিয়ে বেড়ানো কি নিরাপদ হবে?’

কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে বাড়ির খুদে সদস্যদের অভিভাবকদের মনে থাকে এমন হাজার প্রশ্ন। তার কারণ, পাহাড়ের ঠান্ডা আর কোথাও কোথাও বেশি উচ্চতা। সমতলে বেড়ে ওঠা শিশুদের ক্ষেত্রে তা মানিয়ে নেওয়াতে কোনও সমস্যা হবে না তো! উদ্বেগ তৈরি হয়। যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সন্তান সেখানে সুস্থ থাকবে কি না, তা নিয়ে মনে সংশয় থেকেই যায়। বিশেষত তা নাথুলা, গুরুদোংমার, লাদাখের মতো বেশি উচ্চতার জায়গা হলে। নাথুলা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪ হাজার ফুটের বেশ উঁচু। উত্তর সিকিমের লাচুং থেকে যাওয়া হয় জিরো পয়েন্ট। তার উচ্চতা ১৫ হাজার ফুটের বেশি। আর সিকিমের অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ গুরুদোংমার হ্রদের উচ্চতা ১৭ হাজার ৮০০ ফুট।

বেশি উচ্চতাজনিত অসুস্থতা- এই ধরনের বেশি উচ্চতার জায়গায় বাতাস হয়ে যায় হালকা। কম থাকে অক্সিজেনের মাত্রাও। ফলে, অনেক সময়ে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষত খুব কম সময়ে নিচু থেকে অনেকটা উঁচু কোনও জায়গায় গেলে শরীরের মানিয়ে নিতে অসুবিধা হয়। আচমকা মাথা ব্যথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া, বুকে চাপ লাগা, নাক দিয়ে জল পড়া, বমি ভাব-সহ নানা রকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

সে ক্ষেত্রে শিশুকে নিয়ে পাহাড়ে যাওয়া, বিশেষত নাথুলা, গুরুদোংমার, লাদাখের মতো জায়গায় যাওয়া কতটা ঠিক?

সম্প্রতি চার বছরের মেয়েকে নিয়ে নাথুলা, লাচুং-জিরো পয়েন্ট ঘুরে এসেছেন আন্দুলের বাসিন্দা টুম্পা সাঁপুই। জানালেন, নাথুলাতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কারও কারও একটু শরীর খারাপ লাগলেও মেয়ের কোনও সমস্যাই হয়নি। জিরো পয়েন্টেও মেয়ে ছিল একদম সুস্থ। যদিও আগাম সতর্কতা হিসাবে নাথুলা ওঠার আগেই একটি জায়গা থেকে অক্সিজেন ক্যান নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে তা ব্যবহারের দরকার হয়নি। তবে, নাথুলাতেই ৮-১০ বছরের একটি মেয়েকে বসিয়ে অক্সিজেন দিতে দেখেছেন তিনি।

১০ বছরের মেয়েকে নিয়ে লাদাখ গিয়েছিলেন অলি কর রাহা। লাদাখের কিছু জায়গা বেশ উঁচু। তেমনই একটি জায়গা চাং লা। যার উচ্চতা ১৭ হাজার ৫৮৫ ফুট। এমনিতেই সেখানে ১০-১৫ মিনিটের বেশি থাকা যায় না। মেয়ের মাথাব্যথা আর গা বমির কিছু উপসর্গ দেখা দেওয়ায়, চালকের পরামর্শে কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁরা সেখান থেকে নেমে আসেন। পরে ওষুধ খেয়ে শরীর ঠিক হয়ে যায়। তা ছাড়া, পুরো ঘোরায় কোনও সমস্যা কিছু হয়নি।

শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল বলছেন, ‘‘সাধারণত শিশুদের বেশি উচ্চতায় সমস্যা হয় না। তাদের সহ্য ক্ষমতা বেশি। জন্মগত ভাবে হৃদ্‌যন্ত্র, ফুসফুসে কোনও সমস্যা না থাকলে বা কোনও ক্রনিক রোগ না থাকলে যেতে বাধা থাকে না। কার সমস্যা হবে, কার হবে না, তা নিশ্চিত ভাবে বলা কখনও সম্ভব নয়। তবে শ্বাসকষ্ট বা কোনও সমস্যা মনে হলে দ্রুত তাকে নীচে নামিয়ে আনতে হবে।’’

কোন বয়সে নিয়ে যাওয়া যাবে?

নাথুলা, গুরুদোংমারের মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিশুর বয়স অন্তত তিন-সাড়ে তিন হলে ভাল, যাতে কষ্ট হচ্ছে কি না, সেটা সে নিজে বলতে পারে। পাশাপাশি, বেড়াতে যাওয়ার আগে শিশুর ডাক্তারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা করিয়ে নেওয়া উচিত। সম্ভব হলে অক্সিজেনের ক্যান সঙ্গে রাখা যেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement