ওলন্দাজদের গোরস্থান
আপনি কি জীবনে রোমাঞ্চ পছন্দ করেন? গা ছমছমে পরিবেশে ঘুরতে যাওয়া কি আপনার নেশা? পার্ক স্ট্রিটের গোরস্থানে ঘুরতে গিয়ে জায়গাটা বেশ মনে ধরেছে? এমন আরও কিছু জায়গা ঘুরে দেখার শখ জেগেছে মনে?
কলকাতা থাকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার দূরেই চুঁচুড়ায় রয়েছে এমনই আর এক গোরস্থান। নাম ওলন্দাজদের গোরস্থান। ঘুরে আসতেই পারেন সেখান থেকে। দীর্ঘ দিন জীর্ণ দশায় থাকার পর অবশেষে এই গোরস্থানের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এই গোরোস্থানটি চুঁচুড়ার ইতিহাসের সাক্ষাৎ নিদর্শন।
ঊনবিংশ শতকে চুঁচুড়ায় বসবাসকারি ওলন্দাজরা এই সমাধি তৈরি করেন। হুগলির চন্দননগর যেমন ছিল ফরাসি উপনিবেশ, তেমনি চুঁচুড়া ছিল ওলন্দাজদের উপনিবেশ। তৎকালীন গভর্নর তিল্লেফার্ট এটির স্থাপনা করেন। তৎকালীন বহু ওলন্দাজদের সমাধি তৈরি করা হয়েছে সেখানে। উল্লেখযোগ্য, সমাধিগুলির মধ্যে একটি হল লুকাস জুলিয়েন জুদান্দের। লুকাস ছিলেন তৎকালীন ফরাসি নৌবাহিনীর সেনাপতি।
এখানে অবস্থিত সবচেয়ে পুরনো সমাধিটির মধ্যে একটি হল স্যর কর্নওয়ালিস জং-এর। ওলন্দাজদের হাত থেকে যখন ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয় ইংরেজদের হাতে, তখন শেষ ওলন্দাজ গভর্নর ছিলেন ড্যানিয়েল অস্থানি। ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা তুলে দিয়ে শেষ জীবনে এখানেই বসবাস করেন তিনি। ১৮৪০ সালে তার মৃত্যু হয়। তাঁরও সমাধি রয়েছে এখানে। লেখা আছে সে কালের গভর্নের জীবন সম্পর্কে নানা তথ্য। পরবর্তীতে এই সমাধি ক্ষেত্রটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমাধি হিসাবে ঘোষিত হয়।
প্রতীকী ছবি
ঠিক কোথায় অবস্থিত এই গোরস্থান?
চুঁচুড়ার ফুলপুকুর রোড এবং জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষ সরণির সংযোগস্থলে গেলেই এই গোরস্থানটির খোঁজ মিলবে। এই গোরস্থানটি গুস্তাভাস দুর্গের কাছে প্রায় ৭৪০০ বর্গ-কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে।
চুঁচুড়ায় গেলে ওলন্দাজদের বেশ কিছু শিল্পের নিদর্শন চোখে পড়ে। চুঁচুড়ার ডাচ গির্জা, সুসান্না আন্না মারিয়ার সমাধি, বর্ধমানের ডিভিশন কমিশনারের বাংলো অন্যতম। চুঁচুড়ায় গেলে এই স্থানগুলিতেও এক বার ঢুঁ মারতেই পারেন।