পুজোয় চলুন গুড়গুড়িপাল। ছবি: সংগৃহীত।
পাইন নেই তো কী হয়েছে, শালবন আছে তো! শুধু কংক্রিটের জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে হবে। কলকাতা থেকে সড়কপথে ঘণ্টা চারেক গেলেই মিলবে এমন এক ঠিকানা, যেখানে রাস্তার পাশেই শালের বন। যেখানে প্রকৃতির সান্নিধ্যে, গা-ছমছমে পরিবেশে দিব্যি সময় কাটানো যায়। এ এমন এক জায়গা, যেখানে আচমকা হস্তীপরিবারের মুখোমুখিও হতে পারেন।
এ জায়গার নাম হল গুড়গুড়িপাল। পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি ছোট্ট গ্রাম। তবে ভ্রমণের জন্য গ্রাম নয়, রয়েছে গুড়গুড়িপালের জঙ্গল। মূলত শালের এই বনে মাঝেমধ্যে দেখা মেলে সেগুন, আকাশমণিরও। খানিক দূর দিয়ে বয়ে গিয়েছে কাঁসাই নদী। এখানেই রয়েছে একটি ইকো পার্কও। মেদিনীপুর শহর থেকে যার দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার।
তবে শুধু ইকো পার্ক দর্শন নয়, এই জায়গায় যাওয়া যায় প্রকৃতির সঙ্গে একলা হতে। যাওয়া যায় নিঝুম দুপুরে গাছেদের সঙ্গ পেতে। প্রিয়জনের সঙ্গে কাঁসাইপারে বসে কিছু ভাললাগা ভাগ করে নিতে। নদীর পারে সূর্যাস্ত দেখতে।
চোখ-কান খোলা রাখলে শালের বনে ও আশপাশে দেখা মিলতে পারে জার্ডন’স নাইটজ়ার, জাঙ্গল আওলেট, ইন্ডিয়ান পিট্টার মতো পাখির।
যেতে সময় কতক্ষণ সময় লাগবে?
কলকাতা থেকে গুড়গুড়িপালের দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। যেতে ঘণ্টা চারেকের মতো সময় লাগবে।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে কোলাঘাট-ডেবরা হয়ে মেদিনীপুর শহর পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে ধেড়ুয়াগামী রাস্তা ধরে গোপগর পার হয়ে খানিক এগোলেই গুড়গুড়িপালের জঙ্গল।
কোথায় থাকবেন?
গুড়গুড়িপালে বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি একটি নেচার ক্যাম্প রয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা। এ ছাড়া আর কোনও থাকার জায়গা নেই। তবে মেদিনীপুর শহরে ছোট-বড় থাকার জায়গা পেয়ে যাবেন। তবে কোথাও থাকতে না চাইলে, ভোরে বেরিয়ে রাতে ফিরেও আসতে পারেন কলকাতায়।
আর কী দেখবেন?
এখান থেকে ঘুরে নিতে পারেন আশপাশের মেঠোপথ। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতেও ঢুঁ মারতে পারেন। এ ছাড়া ঘুরে নিতে পারেন মন্দিরের জন্য বিখ্যাত গ্রাম পাথরা। ঝাড়গ্রাম এখান থেকে মাত্রা ৪০ কিলোমিটার দূরে। ঝাড়গ্রামের রাজবাড়ি, কনকদুর্গার মন্দির দেখে নেওয়া যায়। এ ছাড়া বাংলার ‘গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ বলে পরিচিত গনগনিতেও যেতে পারেন। কর্ণগড় মহামায়া মন্দিরও ঘুরে নেওয়া যায়। এ ছাড়া মেদিনীপুরে অ্যানিকাট জলাধারও ঘুরে নিতে পারেন। আবার গুড়গুড়িপালে রাত্রিবাস করে চলে যেতে পারেন বেলপাহাড়িতেও।