Mainpath Monsoon Trip

সবুজ পাহাড়ের গায়ে বাদল মেঘের ঘনঘটা, জলের উল্টো ধারা, বৌদ্ধ মঠ অপেক্ষা করছে মৈনপাটে

মেঘের আনাগোনা আর দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ। বর্ষায় পড়শি রাজ্য ছত্তীসগঢ়ের মৈনপাট যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি। বৌদ্ধ মঠ, ঝর্না, গুহার সমারোহে স্বল্পচেনা শৈলশহর ক্রমশ হয়ে উঠছে জনপ্রিয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ০৮:৫৮
Share:

বর্ষায় অপরূপ রপ ছত্তীসগঢ়ের মৈনপাটে। ছবি: সংগৃহীত।

বছর ভর রুক্ষতা, তবে বর্ষা এলেই বদলে যায় দৃশ্যপট। শৈলশহরটিতে যখন ঘনিয়ে আসে বাদল মেঘ, তখন সবুজ পাহাড়ের চারপাশে যেন আরও সবুজ হয়ে ওঠে। ঘাসের গালিচা বিছানো সেই রূপ থেকে চোখ ফেরানো দুষ্কর। সবুজের বুক চিরে চলে গিয়েছে কুচকুচে কালো মসৃণ পিচরাস্তা। পাহাড়ি পাকদণ্ডীর এক এক বাঁকে প্রকৃতির ক্যানভাস যেন তুলনাহীন।

Advertisement

মৈনপাট। ভ্রমণপিপাসুদের কেউ কেউ এ নামের সঙ্গে পরিচিত হলেও, অনেকের কাছেই অজানা এর ঠিকানা। ছোট্ট জনপদটির আরও পরিচয় আছে অবশ্য। এই জায়গাকে বলা হয় ‘মিনি তিব্বত’। নামকরণের সার্থকতাও রয়েছে। এখানেই রয়েছে তিব্বতিদের ডেরা। শোনা যায়, চিন কর্তৃক তিব্বত অধিকারের পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে তিব্বতিরা ঘাঁটি করেছিলেন। তার মধ্যে এই জায়গাটিও পড়ে। পাহাড় ঘেরা শহরটির বুকেই রয়েছে একাধিক বৌদ্ধ মঠ। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি গ্রামের মতোই এ পথেও চোখে পড়ে রঙিন পতাকা।

মৈনপাট। পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্য ছত্তীসগঢ়ের সুরগুজা জেলার শান্ত একটি শৈলশহর। রূপের জন্য অনেকে একে 'ছত্তীসগঢ়ের শিমলা'ও বলেন। মৈনপাটে দেখার জায়গা কম নয়। ‘উল্টাপানি’, জলজলি পয়েন্ট, কুটুমসার গুহা থেকে শুরু করে ঝর্না, মন্দির, বৌদ্ধ মঠ, কী নেই এখানে! রয়েছে বক্সাইটের খনিও। এখানে ভ্রমণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এক জায়গার সঙ্গে অন্যটির দূরত্বও খুব বেশি নয়। ফলে দিন দুই হাতে রাখলেই ভাল ভাবে জায়গাগুলি ঘুরে নেওয়া যায়।

Advertisement

মৈনপাটের অন্যতম আকর্ষণ ‘উল্টাপানি’। নামেই রয়েছে বিশেষত্ব। ভিসারপানি গ্রামের ভিতরে ছোট্ট একটা জলের ধারা। তবে জল উপর থেকে নীচে নয়, প্রবাহিত হয় উল্টো দিকে। সেই জলপথে কাগজের নৌকো ভাসিয়ে দিলে স্পষ্ট হবে গতিবিধি।

উল্টো জলপ্রবাহ দেখা যায় এই স্থানে। ছবি: সংগৃহীত।

এখান থেকেই ঘুরে নেওয়া যায় পরপটিয়া ফিশ পয়েন্ট। সিঁড়ি ভেঙে বেশ কিছুটা হেঁটে পৌঁছনো যায় এখানে। পাহাড়ে গা বয়ে আপন মনে বয়ে চলেছে ঝর্নার জলস্রোত। ঘুরে নিতে পারেন জলজলি পয়েন্ট। এখানে এক অদ্ভূত ভূমিরূপের সাক্ষী থাকা যায়। এই জায়গাটিতে লাফালে বুঝতে পারবেন, কী হচ্ছে? এই জায়গাকে বলা হয় ‘বাউন্সিং গ্রাউন্ড’।

এ শহর জুড়ে রয়েছে তিব্বতি ছোঁয়া। বাজার থেকে খাবার, সবেতেই সেই স্বাদ মিলবে। এখান থেকেই ঘুরে নিতে পারেন টাকপো মঠ। সূর্যাস্ত দেখার জন্যেও নির্দিষ্ট প্রান্তর রয়েছে। তবে বর্ষায় কালো মেঘের আড়ালে সূর্য ঢাকা পড়লেও, সবুজের মোহময় রূপ আপনাকে আবিষ্ট করে রাখবে।

জলজলি পয়েন্ট, এখানে লম্ফঝম্ফের মজাই আলাদা। ছবি: সংগৃহীত।

মৈনপাটের বৌদ্ধ মঠ। ছবি: সংগৃহীত।

এ শহরের আনাচ-কানাচে রয়েছে এমন অনেক দর্শনীয় স্থান। প্রত্যেকটিরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ঘুরে নিতে পারেন কুটুমসার গুহা। উপভোগ করতে পারেন টাইগার পয়েন্ট জলপ্রপাত, রাজপুরী জলপ্রপাত। টাইগার পয়েন্টের নামের পিছনে রয়েছে বাঘের গল্প। কোনও এক সময় সেখানে নাকি বাঘের দেখা মিলত। জল খেতে আসত তারা।

কী ভাবে আসবেন

হাওড়া থেকে রাতের সমলেশ্বরী এক্সপ্রেস ধরে ঝাড়সুগুদা স্টেশনে নেমে গাড়ি নিয়ে চলে আসতে পারেন মৈনপাট। গাড়িতে ৬-৭ ঘণ্টা লাগবে। আসার পথেই এক-দুটো দর্শনীয় স্থান ঘুরে নিতে পারেন। সরাসরি গাড়ি নিয়েও ছত্তীসগঢ়ের মৈনপাট আসতে পারেন।

কী খাবেন

তিব্বতী খাবারের পাশাপাশি ছত্তীসগঢ়ের খাবার ধুসকা, আলুচোখা, পুরি চেখে দেখতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

মৈনপাটে থাকার জন্য একাধিক রিসর্ট রয়েছে। সেখানেই থাকার পাশাপাশি খাবারেরও সুবন্দোবস্ত আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement