অম্বানীদের অনুষ্ঠানে চর্চিত দীপিকার ‘ঐতিহাসিক’ হার। ছবি: সংগৃহীত।
ধনকুবের পরিবারের ছোট সন্তানের বিয়ে বলে কথা! সে কি আর যেমন-তেমন হয়? শুক্রবারই চার হাত এক হয়েছে মুকেশ অম্বানীর কনিষ্ঠ পুত্র অনন্তের সঙ্গে আর এক শিল্পপতি বীরেন মার্চেন্টের কন্যা রাধিকা মার্চেন্টের। তার ৪৮ ঘণ্টা পরেও সমাজমাধ্যমে চর্চায় সেই বিয়ের মেনু থেকে বর-কনে, অতিথি-অভ্যাগতদের সাজপোশাক।
অনন্ত অম্বানীর বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশ ও বিদেশের তারকারা। সেই চাঁদের হাটে নজর কেড়েছেন হবু মা দীপিকা পাড়ুকোন। তাঁর মুখে ছিল আলাদাই লাবণ্য। লাল জরদৌসি সালোয়ার-কামিজের ভিতর থেকে উঁকি দিচ্ছিল পদ্মাবতের নায়িকার স্ফীতোদর। জমকালো পোশাকের সঙ্গে ছিল মানানসই অলঙ্কারও। তবে নায়িকার রূপ ও সাজপোশাকের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে তাঁর হার। কারণ, সেই হারে ব্যবহৃত ‘বাজুবন্ধ’-এ রয়েছে ইতিহাসের ছোঁয়া।
বাজুবন্ধের ব্যবহার হাতের অলংকার হিসাবে। তবে তা দিয়ে যে এমন হার তৈরি হতে পারে, অনেকেই ধারণার বাইরে ছিল। বলিউড অভিনেত্রীর সাজ ও অলঙ্কারের ভাবনা ছিল শালিনা নাথানির। জানা গিয়েছে, দীপিকা অনন্তের বিয়েতে যে হার পরেছিলেন, তাতে ব্যবহৃত বাজুবন্ধ শিখ সাম্রাজ্যের প্রথম মহারাজ রঞ্জিত সিংহের সময়ের। বলতে গেলে এ এক ইতিহাসের দলিল।
এই হারের সঙ্গে মানানসই পাথর বসানো ঝোলা কানের দুল পরেছিলেন নায়িকা। হাতে ছিল ভারী ব্রেসলেট। মাথায় গজরা। তার সঙ্গে ঠাসা কাজের লাল সালোয়ার-কামিজের যুগলবন্দি ছিল চোখে পড়ার মতোই। বিংশ শতাব্দীর চোগা সালোয়ারের ভাবনায় তৈরি হয়েছিল অভিনেত্রীর গাঢ় লাল বিয়েবাড়ির বেশ। এর সঙ্গে মিশেছিল দীপিকার নিজস্ব সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের গ্ল্যামার। তবে সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু অবশ্য সেই হার। ফ্যাশন ডিজ়াইনার অনন্ত শেঠি বলছেন, ‘‘এই বাজুবন্ধ শক্তি ও সম্মানের প্রতিভূ। শিখ মহারাজ রঞ্জিত সিংহের ধনভান্ডারের এই অলঙ্কার অসাধারণ শিল্পকর্ম ও রাজকীয়তার প্রতীক।’’ তাঁর কথায়, বাজুবন্ধের এমন ব্যবহার শুধু প্রাচীনত্বের গৌরব নয়, বরং ভারতীয় অলঙ্কারের বৈচিত্রকেও প্রতিফলিত করেছে। আর এক ফ্যাশন ডিজ়াইনার অঙ্কুর শুক্লও অলঙ্কারের এমন ব্যবহারে দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি মনে করেন, দীপিকা ওই বাজুবন্ধকে শুধু সুন্দর ভাবে সর্বসমক্ষে তুলেই ধরেননি, মধ্যমণি করে তুলেছেন। অনন্তের সঙ্গীত অনুষ্ঠানে অভিনেত্রীর দেড়লাখি তোরানি সংগ্রহের শাড়িও প্রশংসা কুড়িয়েছিল।