Parikhi Sea Beach At Odisha

নদী, সাগর দুই-ই আছে, এই মরসুমে দিন দুয়েকের ছুটিতে ঘুরে আসুন নিরালা সৈকত থেকে

দিঘা, পুরী, মন্দারমণি এড়িয়ে নতুন কোথাও যেতে চান? তালিকায় রাখতে পারেন ওড়িশার এক নির্জন সৈকত। বুড়িবালাম নদীর বেশ কাছে এই সৈকতের নাম পরিখী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৩১
Share:

ওড়িশার এক নতুন সৈকত, চাঁদিপুর থেকে ঘণ্টাখানেকের পথ। ছবি: সংগৃহীত।

কেউ ছুটছেন বরফ দেখতে। কেউ আবার পাহাড়-জঙ্গলের শোভায় মোহিত হতে। নদী, জলাধার যেখানেই যান না কেন, ভরা জানুয়ারিতে হইহই-রইরই কাণ্ড। কেউ যাচ্ছেন পিকনিকে, কেউ এক বেলা ঘুরে আসতে।

Advertisement

শীতের মরসুমে আগাম পরিকল্পনা না থাকলে ট্রেনের টিকিট পাওয়া দুষ্কর। তা ছাড়া ভিড় এড়িয়ে কোথায় যাওয়া হবে ভাবতে ভাবতেই সপ্তাহ কেটে যায়। তা হলে কোথায় যাবেন, যেখানে প্রকৃতির কোলে দু’দণ্ড শান্তি মিলবে?

কথায় আছে, খুঁজলে কী না মেলে? দিঘা, পুরী, মন্দারমণি এড়িয়ে যেতে পারেন ওড়িশার এক নির্জন সৈকতে। বুড়িবালাম নদীর বেশ কাছে এই সৈকতের নাম পরিখী।

Advertisement

ট্রেন অথবা গাড়িতে বালেশ্বর বা বালাসোর পৌঁছতে পারলেই হল। সেখান থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে সেই বেলাভূমি। যেখানে চোখজুড়ানো ঝাউবন কেউ কেটে ফেলেনি। সকালের নরম রোদ্দুরে বালুময় সাগরতটে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ায় লাল কাঁকড়ার দল। পায়ে পায়ে সে স্থানে হাঁটলে চোখে পড়ে অজস্র ঝিনুক, ভেসে আসে শঙ্খ।

পরিখী সৈকতের অদূরেই থাকার জন্য তৈরি হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি পরিবেশবান্ধব ক্যাম্প। তবে ক্যাম্প হলেও এখানে আধুনিক সুবিধাযুক্ত কটেজ রয়েছে। সমুদ্রের গায়ে বলে এখানে মেলে টাটকা মাছ, কাঁকড়া, চিংড়িও।

তবে প্রশ্ন আসতেই পারে হাতের কাছে দিঘা, মন্দারমণি থাকতে, কেন পরিখীর খোঁজ? যেখানে নেই-এর তালিকাটাই বেশি। ঝিনুক, হারের দোকান নেই, শহুরে খানার সুবাস নেই, হইহল্লা কিছুই নেই এখানে। সেই ‘নেই’-এর মধ্যের পাওয়াটুকু নিতে হলে বেছে নিতে পারেন এই সৈকত। সঙ্গীর সঙ্গে একলা হতে চাইলে, আঁধার নেমে আসা সাগরের বুকে জ্বলে থাকা ট্রলারের আলো গুনতে চাইলে চলে আসতে পারেন পরিখী।

ঝাউঘেরা বালুকাবেলার ভোর, সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, রাত— এ জায়গার রূপ বড় বর্ণময়। এখানে এসে পায়ে হেঁটে ঘোরা ছাড়া তেমন কিছুই করার নেই। তবে আশপাশ দেখতে চাইলে সকালের জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন বুড়িবালামের উদ্দেশে।

নদীর ধারে সার বাঁধা পানসি। খেয়া চেপে ভেসে যেতে পারেন জলপথে। মাঝিভাই বৈঠা বাইলেই মুখেচোখে ঝাপটা দেবে হিমেল হাওয়া। ধীরে ধীরে প্রশস্ত নদী ছাড়িয়ে খাঁড়িপথে ঢুকলেই দেখা দেবে ম্যানগ্রোভের সারি। উড়ে বেড়াবে সিগাল। প্রকৃতিকে এমন ভাবে যাঁরা পেতে চান, তাঁদের জন্যই অপেক্ষারত পরিখী।

কোন মরসুমে যাবেন?

ওড়িশার সমুদ্রতটে শীতের মরসুম খুবই আরামদায়ক। তাই শীত থেকে বসন্ত এখানে আসার জন্য আদর্শ। তবে গ্রীষ্ম বা বর্ষায় আসা যায় না, এমন নয়। গরমের দিনে সূর্যের রক্তচক্ষু সহ্য করতে হবে দিনের বেলা। যদিও ঝাউয়ের ছায়া, সাগরের হাওয়া সেই কষ্টে প্রলেপও দিতে পারবে।

কী ভাবে যাবেন?

ওড়িশাগামী যে ট্রেন বালেশ্বর যাচ্ছে সেগুলির কোনও একটিতে যেতে পারেন। হাওড়া, সাঁতরাগাছি থেকে একাধিক ট্রেন মিলবে। কলকাতা থেকে বাসেও বালেশ্বর যাওয়া যায়। মোটামুটি ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগে। সড়কপথে বালেশ্বর সমস্ত বড় শহরের সঙ্গে যুক্ত। কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। গাড়িতেও যেতে পারেন।

কোথায় থাকবেন?

পরিখী সৈকতের কাছে ক্যাম্প রয়েছে। থাকার ঘর এবং তাঁবু মিলবে সেখানেই। তাঁবুতে থাকলে মাথাপিছু থাকা এবং খাওয়ার খরচ একদিনে ১৩০০ টাকা, ঘরে থাকলে ১৭০০টাকা। ক্যাম্প বা মরসুম অনুযায়ী খরচ এ দিক-ও দিক হতে পারে। দুপুরের খাবার, সন্ধ্যা, রাতের জলখাবার এবং প্রাতরাশ নিয়ে মাথাপিছু খরচ নেওয়া হয়। বুড়িবালামে নৌকাবিহার করতে চাইলে মাথাপিছু খরচ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement