Travel with Senior Citizen

জঙ্গল থেকে পাহাড়, বয়স্ক বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরে নিতে পারেন যে পাঁচ জায়গায়

বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়ে শুধু তীর্থ নয়, ঘুরে আসতে পারেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পাহাড় থেকে জঙ্গল, রইল বয়স্কদের নিয়ে ঘোরার ৫ ঠিকানা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪ ০৯:৩০
Share:

বাবা-মাকে নিয়ে করে নিতে পারেন পারিবারিক ভ্রমণ। খুদে থেকে বয়স্ক, মন ভাল থাকবে সকলেরই। ছবি: ফ্রি পিক

ছোটবেলায় যে বাবার হাত ধরে বড় হওয়া, ঘুরতে যাওয়া, বয়স হলে সেই মানুষটি হয়ে পড়েন অসহায়। অশক্ত শরীর ও দুর্বল মন খোঁজে ভরসার হাত। মনে রয়ে যায় এমন অনেক ইচ্ছা, যা হয়তো সন্তানকে বড় করতে গিয়ে কখনও পূরণ করা হয়নি। তার উপর বয়স হলে স্বামী ও স্ত্রী কেউ আগে চলে গেলে অন্য মানুষটি মানসিক ভাবে হয়ে পড়েন আরও অসহায়, একলা। তাঁদের পাশে থাকার, ভাল রাখার জন্য বরং বেরিয়ে পড়ুন হাতটি ধরে ভ্রমণে।

Advertisement

‘টনিক’ বাংলা ছবিটি মনে করিয়ে দেয় বয়স্ক মানুষের গোপনে থাকা ইচ্ছার কথা। বয়স মানেই যে শুধু সমুদ্রের ধার তাঁর জন্য উপযুক্ত, সমস্ত অ্যাডভেঞ্চার ব্রাত্য, এমনটা কিন্তু না-ও হতে পারে।

বয়স্ক বাবা-মায়ের মন ভাল রাখতে, তাঁদের একাকিত্ব দূর করতে, বরং ঘুরে আসুন তাঁদের নিয়ে। ধর্মীয় স্থানেই যে যেতে হবে, এমনটা নয়। বরং দেখুন, তিনি পাহাড় না জঙ্গল পছন্দ করেন, না কি ইতিহাসের ছোঁয়া পেতে যেতে চান কোনও পুরনো গন্ধ মাখা শহরে।

Advertisement

বয়স্কদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এর মধ্যে কোনও এক জায়গায়

কাফের গাঁও

পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলার ছবির মতো সাজানো একটি গ্রাম হল কাফের গাঁও। বয়স্ক বাবা-মায়ের জন্য এমন জায়গা বেছে নেওয়ার কারণ হল, হোম স্টে-র চত্বরে মিঠে রোদে গা এলিয়ে দিব্যি পাখির ডাক শুনতে শুনতে তাঁদের সময় কেটে যাবে। বয়স্ক মানুষদের ঘোরার ক্ষেত্রে বিশ্রামের সময়টা বেশি রাখা দরকার। অনেকেরই বেশি ক্ষণ গাড়ি চাপলে কোমরে-পায়ে ব্যথা হয়। পাইন ঘেরা কাফের গাঁওতে দিনভর খেলা করে মেঘ-রোদ্দুর। সারা দিনই পাখির কলতান শোনা যায়। রকমারি ফুলে সেজে থাকে এই গ্রাম। এখান থেকে আলাদা ভাবে কোথাও না গেলেও সমস্যা নেই, প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে সহজ-সরল পাহাড়ি মানুষের আতিথেয়তায় কয়েকটা দিন এখানে দিব্যি কাটিয়ে দেওয়া যায়।

হরিদ্বার ও হৃষীকেশ

হরিদ্বারের স্রোতস্বিনী গঙ্গা, তার ঘাটে আরতির শোভা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন। পাহাড়ি এই শহর থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে নেওয়া যায়। রোপওয়ে চেপে যাওয়া যায় মনসা মন্দির। আর কাছেই আছে হৃষীকেশ, যেখানে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সুযোগ রয়েছে। বয়স হলেও মনে যদি ‘টনিক’ ছবির পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শখ থাকে আর শরীরও সায় দেয়, তা হলে র‌্যাফটিংয়ের শখও এখানে পূরণ করে নিতে পারেন। তবে হ্যাঁ, রুপোলি পর্দা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে কিছু করার আগে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

জয়পুর

রাজস্থানের বহু শহরেই জড়িয়ে আছে ইতিহাস। আছে কত অজানা কাহিনি। এ রাজ্যের বড় বড় প্রতিটি শহরেই রয়েছে রাজাদের দুর্গ। যেগুলির অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী পর্যটকদের মুগ্ধ করে আজও। জয়পুর এমনই একটি শহর। ভূগোল বইয়ের পাতায় ‘পিঙ্ক সিটি’ বলে যার সঙ্গে পরিচয়। এই শহরের আনাচকানাচ ঘুরিয়ে দেখাতে পারেন বাবা ও মাকে।

পুরী

সমুদ্রপারের এই শহরটি বাঙালিদের চিরকালীন ভাললাগার অন্যতম জায়গা। পুরীর সমুদ্রের মতো এমন বড় ঢেউ, গর্জন সমস্ত জায়গায় বড় একটা মেলে না। শুধু সমুদ্রের ধারে বসে, রকমারি খাবার খেয়ে দিব্যি কাটিয়ে দেওয়া যায় একটা গোটা সন্ধ্যা। আর ঠাকুর-দেবতায় ভক্তি থাকলে রয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির। তবে এই পুরীরই ব্লু ফ্ল্যাগ স্বীকৃতি পাওয়া সৈকতে গেলে মনে হতে পারেই, এ যেন বিদেশের কোনও সৈকত। সবুজের সমারোহ, নজর মিনার আর মিহি বালুতটের এই সৈকত একেবারেই কোলাহল বর্জিত। কোথাও এতটুকু নোংরা নেই। ‘গোল্ডেন বিচ’ নামে পরিচিত এই সৈকতের পাশেও কিন্তু বাবা-মাকে নিয়ে দুটো দিন দারুণ কাটবে।

জয়ন্তী

পাহাড়, নদী, সমুদ্র ছাড়িয়ে মন যদি চায় সবুজের ছোঁয়া, বন্য প্রাণীর আনাগোনা দেখতে তবে যাওয়া যেতে পারে ডুয়ার্সে। জয়ন্তী নদীর ধারে জঙ্গলের ঘেরা জয়ন্তী বয়সকালে অবসর কাটানোর অন্যতম পছন্দ হতেই পারে। নুড়িপাথরের উপর দিয়ে বইছে স্বচ্ছ জলধারা, সামনে পাহাড়ের সারি। গান শোনায় পাখিরা। এমন জায়গায় গিয়ে পড়লে হয়তো ফিরতেই ইচ্ছে করবে না শহুরে জীবনে।

এর বাইরেও অসংখ্য জায়গা আছে যেখানে বয়স্ক মানুষেরা স্বচ্ছন্দে ঘুরতে পারেন। তবে খুব উঁচু কোনও পাহাড়ি জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা করতে গেলে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement