চেনা নয়, গন্তব্য হোক অচেনা অসম। ছবি: ফ্রিপিক।
অসম বললেই মানসপটে ভেসে ওঠে মানস জাতীয় উদ্যানের গহীন জঙ্গল, কাজিরাঙার একশৃঙ্গ গন্ডার, দিগন্ত বিস্তৃ চা-বাগিচা। অসম বললেই মাথায় আসে বিহুর তাল, মেখলার রূপ সৌন্দর্য।
তবে চেনা গন্তব্য নয়, যদি এই অসমের আনাচ-কানাচে ঘুরে নিতে চান, তা হলে চলুন হাফলং। এই ঠিকানা কিঞ্চিৎ চেনা মনে হলে ঘুরে নিতে পারেন পানিমুর জলপ্রপাত ও মাইবাং। পাহাড়, ঝর্না, ছবির মতো সুন্দর গ্রাম, তিন গন্তব্যের মধ্যে বেছে নেওয়ার দায়িত্ব আপনার।
হাফলং
ডিমা হাসাও জেলার সুন্দর একটি শৈলশহর হাফলং। রেল স্টেশনের নাম নিউ হাফলং। পাহাড় ঘেরা স্টেশনটির সৌন্দর্য যে কোনও পর্যটককে মোহিত করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। সবুজ পাহাড় ঘেরা স্থানটির অন্যতম আকর্ষণ, মাঝ বরাবর বয়ে চলা হাফলং হ্রদ। শহরের সৌন্দর্যায়নে ব্যবহৃত হয়েছে ডিমাসা যোদ্ধার মূর্তি।হাফলঙের আশপাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি ভিউ পয়েন্ট।
জগন্নাথ মন্দির থেকে চার্চ সবই পাবেন এখানে। কিছু জায়গা পায়ে হেঁটেই ঘুরে নেওয়া যায়। এ ছাড়া, এখান থেকে ঘুরে নিতে পারেন অর্কিডের বাগান, জতিঙ্গা গ্রাম, ওয়াইন শপ। এখান থেকে যাওয়া যায় আরও একটি সুন্দর জায়গায়। তার নাম পানিমুর জলপ্রপাত।
ছবির মতোই সুন্দর অসমের হাফলং। ছবি: সংগৃহীত।
কী ভাবে যাবেন?
হাফলঙের নিকটবর্তী স্টেশন নিউ হাফলং। শিয়ালদহ-আগরতলা স্পেশ্যাল ট্রেনে নিউ হাফলং পৌঁছনো যায়। নিউ হাফলং স্টেশন থেকে হাফলঙের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। স্টেশনের বাইরে অটো এবং বাস দুই-ই পাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন?
হাফলঙে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের হোটেল রয়েছে।
পানিমুর জলপ্রপাত
ডিমা হাসাও জেলাতেই রয়েছে জলপ্রপাতটি। বর্ষার দিনে এর রূপ-সৌন্দর্য তুলনাহীন। তবে এর উচ্চতা বেশি নয়। কপিলি নদীর জলই জলপ্রপাত হয়ে এখানে ঝরে পড়েছে। এই জায়গাটি তার সৌন্দর্যের জন্য এখন ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শীতের দিনে এখানে স্থানীয়রা পিকনিক করতে আসেন। তবে জায়গাটি মূল রাস্তা থেকে অন্তত ১০০ কিলোমিটার ভিতরে। ফলে কেউ যদি প্রকৃতির সঙ্গে নির্জনতা উপভোগ করতে চান, তিনি এই স্থানটি বেছে নিতে পারেন।
কী ভাবে যাবেন?
হাফলং শহর থেকে পানিমুরের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। কেউ হাফলঙে বেড়াতে এলে তিনি সেখান থেকে জলপ্রপাতটি ঘুরে নিতে পারেন। অসমের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে এই জলপ্রপাতের দূরত্ব ২২০ কিলোমিটার। নগাঁও জেলা হয়ে এখানে আসতে হয়।
কোথায় থাকবেন?
পানিমুরের খুব থাকার জায়গা না থাকলেও, নগাঁওতে থাকার জন্য হোটেল রয়েছে। সেখান থেকে জলপ্রপাতের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার।
মাইবং
দূরে পাহাড়ের সারি। তার নীচে দিগন্ত বিস্তৃত ধানক্ষেত। ডিমা হাসাও জেলার মাইবঙের সৌন্দর্য অতুলনীয়। মাইবঙে রয়েছে খুব সুন্দর একটি ভিউ পয়েন্ট। এটি এক সময়ে ডিমাসা রাজত্বের রাজধানী ছিল। এখান থেকে নদীপথে ট্রেকিং করা যায়। এখানে রয়েছে রামচণ্ডী মন্দির। এ ছাড়া দেখে নেওয়া যায় অজস্র ছোট ছোট জলপ্রপাত। স্থানীয়দের কাছে এই জায়গাটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট।
কী ভাবে যাবেন?
হাফলং শহর থেকে মাইবঙের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। কেউ হাফলঙে বেড়াতে এলে মাইবাংও পর্যটনের তালিকায় রাখতে পারেন। গুয়াহাটি থেকে মাইবঙের দূরত্ব ৩৩৮ কিলোমিটার। নিকটবর্তী রেলস্টেশন লামডিং। সেখান থেকে গ্রামটির দূরত্ব ৭৬ কিলোমিটার।
কোথায় থাকবেন?
মাইবঙে থাকার জন্য তেমন কোনও জায়গা নেই। তবে হাফলঙে থাকতে পারেন। সেখানে হোম স্টে, হোটেল সবই আছে।