ফের ‘ইউনাইটেড-ম্যানিয়া’র ভ্রুকুটি ইস্টবেঙ্গলে! ট্রেভর জেমস মর্গ্যান যে রোগে ভুগতেন, সেই রোগে আক্রান্ত আর্মান্দো কোলাসোও!
মর্গ্যান-জমানায় ইউনাইটেড নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠলেই বিরক্তি চেপে রাখতে পারতেন না ব্রিটিশ কোচ। শনিবার লাল-হলুদের নতুন গোয়ান কোচও পারলেন না, “১৯৪৯ সালে যা হয়েছে, সেটা যে ২০১৪-তেও হবে, কোনও মানে নেই। ডার্বির আগে কলকাতা লিগ জিততে চাই। এবং তার জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত,” ইউনাইটেড-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের পরিসংখ্যান তুলে ধরা মাত্র আর্মান্দোর কড়া প্রতিক্রিয়া।
আর্মান্দোর আচরণ দেখে অবাক হওয়ার বোধহয় কোনও কারণ নেই। কেননা রবিবারের ম্যাচ জিতে এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করতে চাইছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ! আর সেটা কী? ডার্বির আগে কলকাতা লিগের ট্রফি নিশ্চিত করে ধর্মীয় কাজে গোয়ায় চার দিনের ছুটিতে যাওয়া। হয়তো সে জন্যই ইউনাইটেড যখন রবিবারের ম্যাচকে ফেডারেশন কাপের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছে, তখন ইস্টবেঙ্গল কোচ জয় ছাড়া আর কিছুই ভাবতে চাইছেন না। কিন্তু কাজটা কি খুব সহজ হবে?
আর্মান্দোর স্বপ্নপূরণের মাঝে শক্ত গাঁট হয়ে দাঁড়িয়ে যারা, সেই ইউনাইটেডের ‘সৌজন্যে’ ডার্বি-জয়ের উৎসবও বেশি দিন করতে পারেননি ময়দানের প্রথম গোয়ান কোচ। এ বার তাঁর ‘ছুটি’র সামনেও প্রধান কাঁটা এলকো সাতোরি। ইউনাইটেডের ডাচ কোচ অবশ্য বলছেন, “ইস্টবেঙ্গল সব দিক থেকে এগিয়ে। আমার দলে প্রচুর চোট-আঘাত আছে। বেলো রাজ্জাক নেই। এরিক, সংগ্রামের চোট। লাজং থেকে যে গোলকিপারকে নিয়ে এসেছি, সেও খেলতে পারবে না। কাগজপত্র ঠিক নেই।” এলকোর যা অসহায় অবস্থা, তাতে রবিবারের ম্যাচ ড্র করতে পারলেই নৈতিক জয় হয়ে যাবে ইউনাইটেডের। সে জন্যেই সম্ভবত প্রথমে রাজি না হলেও পরে মত বদলে র্যান্টি-হাসানকে নামাচ্ছেন এলকো। ইউনাইটেডের আর্থিক অবস্থা তলানিতে। এর মধ্যে হঠাৎ-ই টোলগে ওজবেকে দলে নেওয়ার জন্য দরবার করতে শুরু করেছেন ইউনাইটেড কোচ। এতে কর্তারা বিরক্ত। তাদের বক্তব্য, যারা আছে তাদেরই টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। টোলগেকে নেওয়া হবে কী করে? শোনা যাচ্ছে, টোলগে না কী কলকাতায় খেলার জন্য এলকোর সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ করছেন।
তবু আর্মান্দো মনে হল কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছেন না! শনিবার সকালে লাল-হলুদ তাঁবুতে গিয়ে দেখা গেল, প্র্যাকটিসে মোগা-সুয়োকার ওপর বেশি নজর তাঁর। বুঝতে অসুবিধা হল না, গোলের জন্য কতটা মরিয়া আর্মান্দো। আগের মহমেডান ম্যাচেও গোল নষ্টের খেসারত দিতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। আর্মান্দো বলছিলেন, “জিততে হলে গোল করতে হবে। আর আমরা গোলটাই করতে পারছি না।” গোল করা ছাড়া চোট-আঘাত ও কার্ড-সমস্যা নিয়েও চিন্তিত লাল-হলুদ কোচ। রবিবারের ম্যাচে চোটের জন্য খেলতে পারবেন না দলের নাইজিরিয়ান স্টপার উগা ওপারা। আর এক স্টপার অর্ণবের আবার কার্ড। এই অবস্থায় রক্ষণে গুরবিন্দরের পাশে ফের সৌমিককে স্টপারে খেলতে দেখা যেতে পারে। দুই সাইডব্যাক নওবা-রবার্ট। মাঝমাঠে সবচেয়ে বড় ধাক্কা মেহতাব। ফেড কাপে তাঁকে পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও প্রবল অনিশ্চয়তা। মেহতাবের অনুপস্থিতিতে দলের চার মিডিও হরমনজ্যোৎ-লোবো-লালরিন্দিকা-ভাসুম। ফরোয়ার্ডে মোগা-সুয়োকা জুটি। আর্মান্দো বলছিলেন, “মেহতাব এখন সুস্থ। একটু ভয় পাচ্ছে মাঠে নামতে। ওর ভয়টাই কাটাতে হবে। দেখি মেহতাবের সঙ্গে কথা বলব।”
কোচের ‘ভোকাল টনিকে’ মেহতাবের ভয় কাটে কি না, সে তো সময় বলবে। তবে রবিবারই ইউনাইটেড ম্যাচ জিতে ‘ছুটি’ নিশ্চিত করতে চাইছেন আর্মান্দো।
রবিবারে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে
ইস্টবেঙ্গল: ইউনাইটেড (যুবভারতী-৪-০০)