নতুন প্রজন্মের হাতে ব্যাটন নয়, বুঝিয়ে দিল শারাপোভা

দক্ষতা, আবেগ ও ইচ্ছাশক্তি যেখানে মিলেমিশে একাকার, তারই নাম মারিয়া শারাপোভা। এই তিনের মিশেলই এ বারের ফরাসি ওপেন খেতাব জিতিয়ে দিল ২৭ বছরের টেনিস সুন্দরীকে। শনিবার রোলাঁ গারোর লাল কোর্টে টেনিসের নতুন প্রজন্মের মুখ সিমোনা হালেপ ও শারাপোভা মুখোমুখি হওয়ার আগে থেকেই টেনিস দুনিয়ায় প্রশ্ন উঠে যায়, এখান থেকেই কি মেয়েদের টেনিসের নতুন প্রজন্মের হাতে ব্যাটন বদল হবে? এমন প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।

Advertisement

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৪ ০৩:৫২
Share:

ট্রফি জিতে আত্মহারা। শনিবার রোলাঁ গারোয় মারিয়ার দিনে।

দক্ষতা, আবেগ ও ইচ্ছাশক্তি যেখানে মিলেমিশে একাকার, তারই নাম মারিয়া শারাপোভা। এই তিনের মিশেলই এ বারের ফরাসি ওপেন খেতাব জিতিয়ে দিল ২৭ বছরের টেনিস সুন্দরীকে।

Advertisement

শনিবার রোলাঁ গারোর লাল কোর্টে টেনিসের নতুন প্রজন্মের মুখ সিমোনা হালেপ ও শারাপোভা মুখোমুখি হওয়ার আগে থেকেই টেনিস দুনিয়ায় প্রশ্ন উঠে যায়, এখান থেকেই কি মেয়েদের টেনিসের নতুন প্রজন্মের হাতে ব্যাটন বদল হবে? এমন প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। স্টেফি গ্রাফ যখন গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে ক্রিস এভার্ট, মার্টিনা নাভ্রাতিলোভাদের মুখোমুখি হত, তখনও একই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করত। স্টেফি তার আন্তর্জাতিক টেনিস জীবনের শুরু থেকেই যে ভাবে ব্যাটন ছিনিয়ে নিতে পেরেছিল, হালেপ তা পারল না। বরং বলা উচিত শারাপোভা তা হতে দিল না। বুঝিয়ে দিল, এই প্রজন্মান্তর এখনই ঘটছে না।

প্রথম সেট ৬-৪ জেতার পর দ্বিতীয় সেটও টাই ভেঙে জেতার মুখে চলে গিয়েছিল। কিন্তু পরপর তিনটে আনফোর্সড এরর-এর জন্য সেই জায়গা থেকে ফিরে আসতে হয় শারাপোভাকে। এই স্তরে একটা ছোট ভুলেরই অনেক বড় খেসারত দিতে হয়। আর এখানে তো তিন তিনটে ভুল। কিন্তু দ্বিতীয় সেট হেরেও তৃতীয় সেটে যে ভাবে ফিরে এল শারপোভা, তাতে বোঝাই যায় ওর ইচ্ছাশক্তি আগের মতোই রয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে ও বুঝিয়ে দিল আরও দু-এক বছর ও সার্কিটে থাকতে পারে।

Advertisement

নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের সঙ্গে শারাপোভাদের ফারাকটা কোথায়, তা বোঝানোর জন্য ফাইনালের তৃতীয় সেটটাই যথেষ্ট। এক দিকে শারাপোভার হাতের মুঠোয় চলে আসা ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার চাপ। অন্য দিকে প্রায় হারা ম্যাচ বাঁচিয়ে রেখে এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ হালেপের। তৃতীয় সেটে লড়াইটা মূলত এই দুইয়ের মধ্যে। প্রথম কাজটা কিন্তু অনেক কঠিন। পরেরটা অপেক্ষাকৃত সোজা। কিন্তু শারাপোভাই কঠিনতর কাজটা করে দেখাল। প্রথমে হালেপই বিপক্ষের সার্ভিস ভাঙে। পরের গেমেই বদলা নিয়ে নেয় শারাপোভা। বুঝে দেখুন, কী খিদে! এর পর যে ফোরহ্যান্ড উইনারটা মেরে শারাপোভা দ্বিতীয়বার হালেপের সার্ভিস ব্রেক করল, তাতে মনে হচ্ছিল ম্যাচের শুরুতে যে জায়গায় ছিল, তখনও সেই জায়গায়। শক্তিক্ষয়ের ছিটেফোঁটা প্রভাবও নেই। আর ৫-৪ এগিয়ে থাকা মারিয়া শারাপোভা যখন নিজে সার্ভিস করে, তখন তার জয় আটকানো হালেপের মতো খেলোয়াড়ের পক্ষে সম্ভব নয়। যদি আগামী সোমবারের র্যাঙ্কিংয়ে রোমানিয়ার মেয়েটি তিন নম্বরে উঠে আসবে। কিন্তু ওর প্রতি এতটুকু অসম্মান না দেখিয়ে বলছি, ফর্মের শিখরে থাকা শারাপোভা বা সেরেনা উইলিয়ামসকে রোখার মতো ক্ষমতা এখনও ওর শরীরে জন্মায়নি।

একটা সময় সেলেস, পিয়ার্সদের কোচ স্বেন গ্রোয়েনভেল্ডের সঙ্গে কাজ শুরু করার পর থেকে ভুলের প্রবণতাটা অনেক কমিয়েছে শারাপোভা। আগে ওর স্ট্রোকগুলো ফ্ল্যাট হত বলে ভুলের সম্ভাবনা বেশি থাকত। যদিও শনিবার ফাইনালে প্রচুর আনফোর্সড এরর করল ও (৫২)। কিন্তু শেষ সেটে তার সংখ্যাটা নামিয়ে আনতে পারাটাই ওর কৃতিত্ব।

কিন্তু উইম্বলডনের খেতাবটা না জিততে পারলে এই ক্লাসের প্রতিই অবিচার হবে। আর সে জন্য সেরেনা উইলিয়ামসকে হারাতে হবে ওকে। এই জায়গাটাতেই বারবার মার খেয়ে যাচ্ছে শারাপোভা। ১৮ বারের মুখোমুখিতে মাত্র দু’বার জিততে পেরেছে। উইম্বলডনে তো দু’বারই হেরেছে। এ বার পারে কিনা, দেখা যাক।

ছবি: রয়টার্স

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন...

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement