ট্রফি ম্যান সিটির

কাবালেরোকে দেখে শিবাজি মনে পড়ল

ক্যাপিটাল ওয়ান কাপ ফাইনালের আগে যখন দুটো দল মাঠে নামছে তখন টিভিতে দেখলাম লিভারপুল কোচ য়ুরগেন ক্লপের মুখে হাসি। দেখে মনে হল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি যতই তারকাখোচিত হোক না কেন, ‘আন্ডারডগ’ তকমাটার তোয়াক্কাই করছেন না তিনি। যতই সের্জিও আগেরো, ইয়াইয়া তোরে, দাভিদ সিলভা থাকুক না কেন, ক্লপও যেন তৈরি তাঁর ব্র্যান্ডের ফুটবল দিয়ে কাপ ফাইনাল জিততে।

Advertisement

ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৪:১০
Share:

মরসুমের প্রথম ট্রফি ম্যাঞ্চেস্টারে। ক্যাপিটাল ওয়ান কাপ জিতে ম্যান সিটির উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি

ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ১(৩) (ফার্নান্দিনহো) : লিভারপুল ১(১) (কুটিনহো)

Advertisement

ক্যাপিটাল ওয়ান কাপ ফাইনালের আগে যখন দুটো দল মাঠে নামছে তখন টিভিতে দেখলাম লিভারপুল কোচ য়ুরগেন ক্লপের মুখে হাসি। দেখে মনে হল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি যতই তারকাখোচিত হোক না কেন, ‘আন্ডারডগ’ তকমাটার তোয়াক্কাই করছেন না তিনি। যতই সের্জিও আগেরো, ইয়াইয়া তোরে, দাভিদ সিলভা থাকুক না কেন, ক্লপও যেন তৈরি তাঁর ব্র্যান্ডের ফুটবল দিয়ে কাপ ফাইনাল জিততে। কোচের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস অনেক সময় দুর্বল দলকেও চাঙ্গা করে দিতে পারে।

দুটো দলের মধ্যে ক্লপের লিভারপুলের মধ্যেও তো সেই আত্মবিশ্বাসটা দেখলাম। ম্যাচটা দারুণ শুরু করল ওরা। ফির্মিনো, কুটিনহো, মিলনারদের বারবার পজিশন বদলানো। মাঝমাঠে চ্যান ও হেন্ডারসনের যুগলবন্দি। ম্যান সিটি বল পেলেই দু’তিনজন মিলে ঘিরে ধরছিল। ক্লাসিক প্রেসিং বলতে যা বোঝায়। দুর্ভাগ্যবশত সুযোগ কাজে লাগাতে পারল না। ম্যান সিটি প্রতিআক্রমণে খেলছিল। মাঝমাঠে ইয়াইয়া তোরেও যতটা সম্ভব ডিফেন্সিভ কাজ করছিল। দ্বিতীয়ার্ধে ফার্নান্দিনহোর গোলটা লিভারপুল গোলরক্ষক সাইমন মিনিয়োলেটের দোষেই হল। বাকি ম্যাচ দুর্দান্ত খেললেও শটটা আরও ভাল করে কভার করা উচিত ছিল মিনিয়োলেটের। লিভারপুল ১-১ করল দুর্দান্ত পাসিং মুভের সৌজন্যে। কুটিনহোর মতো প্রতিভাবান ফুটবলারের কাছে ফিনিশটা সহজই ছিল।

Advertisement

ক্লপ বনাম পেলেগ্রিনি মানেই তো ক্লাসিক প্রেসিং বনাম ডিপ ডিফেন্স। লিভারপুল কোচ শুরুর থেকেই আক্রমণ করতে ভালবাসেন। বিপক্ষকে পজিটিভ মুভ তৈরি করতে দেন না। ফুলব্যাকদেরও মাঝমাঠে একস্ট্রা সাপোর্ট হিসাবে ব্যবহার করেন। পেলিগ্রিিন আবার ডিফেন্স সংগঠন করে আক্রমণে যেতে ভালবাসেন। ম্যাচের মধ্যেই বিভিন্ন ফর্মেশন নিয়ে পরীক্ষা করতে অভ্যস্ত পেলেগ্রিনি।

প্রথমার্ধে ম্যাচটা লিভারপুলের দখলে থাকলেও, সেকেন্ড হাফ থেকে একস্ট্রা টাইম ম্যান সিটিও আক্রমণ করেছে। এই খেলা টাইব্রেকারে যাওয়ার পিছনে দুই দলের ফরোয়ার্ড লাইনকে দোষ দেওয়ার থেকেও দুই গোলকিপারের প্রশংসা করব বেশি। লিভারপুলের মিনিয়োলেট হোক বা ম্যান সিটির উইলি কাবালেরো। অবধারিত দু’তিনটে গোলের সুযোগ বাঁচিয়েছে দুই কিপার। লিভারপুলের ওরিগি হোক বা ম্যান সিটির আগেরো। গোল করে ম্যাচ জেতাতে দেয়নি কাউকে।

টাইব্রেকারে ম্যাচ যাওয়া মানে গোলকিপাররা ওই একটা সময় চাপমুক্ত থাকে। কাবালেরোকে দেখে আমার শিবাজির(বন্দ্যোপাধ্যায়) কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। টাইব্রেকারের সময় মাথা ঠান্ডা রেখেছিল কাবালেরো। ফার্নান্দিনহো প্রথম পেনাল্টি মিস করাতেও ভয় পেয়ে যায়নি। বরং লিভারপুল ফুটবলারদের মুভমেন্ট ঠিকঠাক অ্যান্টিসিপেট করেছিল কাবালেরো। জাম্পগুলো ঠিক হাইটে নিয়েছিল। বিশেষ করে অ্যাডাম লাল্লানার পেনাল্টিটা। মনেই হচ্ছিল কাবালেরোকে টপকে আর কাপ ধরতে পারবে না লিভারপুল। গোটা ম্যাচেও কাবালেরো দুর্দান্ত ফর্মে ছিল। ভেবে অবাক লাগছিল এটা ম্যান সিটির রিজার্ভ কিপার। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রেও কাবালেরোর দুটো গ্লাভসই তাই অপরিহার্য হয়ে থাকল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement