ঝ্যাং ঝিঝেন। ছবি রয়টার্স
প্রথম পুরুষ চিনা টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের যোগ্যতা অর্জন করে ইতিহাস গড়লেন ঝ্যাং ঝিঝেন। তিন বারের চেষ্টায় এই প্রথম কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের যোগ্যতা অর্জন করলেন তিনি। ১৯৬৮-তে ওপেন-যুগ শুরু হওয়ার পর কোনও পুরুষ চিনা খেলোয়াড়ই উইম্বলডনের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় ম্যাচে আর্জেন্তিনার ফ্রান্সিসকো সেরুন্দোলোকে ৬-০, ৬-৩, ৬-৭ (৪-৭), ৭-৬ (৮-৬) গেমে হারিয়ে দেন ঝ্যাং। বর্তমানে এটিপি ক্রমতালিকায় ১৭৮ নম্বরে রয়েছেন তিনি। ঝ্যাংয়ের আগে তিন চিনা খেলোয়াড় উয়ু দি, ঝ্যাং জে এবং লি জে— তিনজনেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলেছেন। গ্র্যান্ড স্ল্যামের চিনের সাফল্য বলতে একমাত্র লি না। এই মহিলা খেলোয়াড় ২০১১-র ফরাসি ওপেন এবং ২০১৪-র অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন। উইম্বলডনেও একাধিকবার কোয়ার্টারে উঠেছেন। ২০১৯-এ তাঁকে আন্তর্জাতিক হল অফ ফেম-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
চিনের সাংহাইতে থাকেন ঝ্যাং। বাবা ঝ্যাং ওয়েইহুয়া নামী ফুটবলার ছিলেন। চিনের ক্লাব সাংহাই শেনহুয়ার হয়ে দীর্ঘদিন খেলেছেন। মা কিন ওয়েই ছিলেন শুটার। ছোটখাটো চেহারা হওয়ার জন্য বাবা চাননি ঝ্যাং ফুটবলার হোন। তাই মাত্র চার বছর বয়সেই টেনিসে হাতেখড়ি হয়। স্থানীয় স্তরে টেনিস খেলে উঠে এসেছেন ঝ্যাং। ১২ বছর বয়সে সাংহাইয়ের দলে যোগ দেন। পেশাদার টেনিসচর্চা শুরু অস্ট্রেলিয়াতে। বর্তমানে তিনি ফ্রান্সের কান গার্ডেন টেনিস ক্লাবে খেলা শেখেন। চিনের জাতীয় গেমসে দু’বার সোনা জিতেছেন।
এই মুহূর্তে চিনের সেরা টেনিস খেলোয়াড় তিনিই। গত বছর থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলে ক্রমতালিকায় ক্রমশ উপরের দিকে উঠে এসেছেন। লক্ষ্য ছিল প্রথম একশোয় ঢোকা। কিন্তু কোভিড সেই স্বপ্নে জোর ধাক্কা দিয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে দুবাইয়ে একটি প্রতিযোগিতায় খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন। রিটার্ন করতে যাওয়ার সময় বল সপাটে চোখে এসে লাগে। ভেবেছিলেন অন্ধ হয়ে যাবেন। কিন্তু চিকিৎসকদের সহায়তায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরে পান।
চিন ততদিনে কোভিডে বিধ্বস্ত। তাই দেশে না ফিরে ঝ্যাং চলে যান ক্রোয়েশিয়ায়। সেখানেই অনুশীলন চালাতে থাকেন। আপাতত লক্ষ্য প্রথম একশোয় ঢোকা। এখন ১৭৮ নম্বরে থাকলেও বছরখানেক আগে উঠে এসেছিলেন ১৩৬-এ, যা কোনও চিনা খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিং। এটিপি-র ওয়েবসাইটে ঝ্যাং বলেছেন, “আজ পর্যন্ত আমার দেশের কেউ প্রথম একশোয় জায়গা পায়নি। তবে আমার কাছে প্রথম একশো মানে পেশাদার টেনিসে প্রথম পা রাখা। একলাফে উপরে উঠতে চাই না। কারণ গত কয়েক বছরে এরকম অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। আমি ধীরে ধীরে উন্নতি করতে চাই।”
সোমবার উইম্বলডনের প্রথম রাউন্ডে ফ্রান্সের আঁতোয়া হোয়াংয়ের বিরুদ্ধে খেলবেন ঝ্যাং।