কুল-চা জুুটি। ফাইল চিত্র
আজ, রবিবার, কটকে ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ নিষ্পত্তির ম্যাচ। যে ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দিতে পারে কিছু প্রশ্নের উত্তর।
কী হওয়া উচিত চূড়ান্ত এগারো: যে ভাবে হোক যুজবেন্দ্র চহালকে প্রথম এগারোয় রাখতে হবে। কুল-চা, মানে কুলদীপ যাদব ও চহালকে একসঙ্গে দলে চাই। দুই স্পিনারে খেললে রবীন্দ্র জাডেজার জায়গায় আসতে পারে চহাল। জানি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে বেশ কয়েক জন ভাল বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান আছে। কিন্তু জাডেজাও বাঁ-হাতি স্পিনার। ফলে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানরা ওকে খেলার ক্ষেত্রেও সুবিধে পাবে। মাথায় রাখতে হবে, মাঝের ওভারে জাডেজার বাঁ-হাতি স্পিনের চেয়ে চহালের লেগস্পিনে উইকেট পড়ার বেশি সম্ভাবনা আছে। কুল-চা জুটি একটু রান দিলেও ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং ভাঙতে পারে। কুলদীপ আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে তা বুঝিয়ে দিল। যে-হেতু ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ভাল ফর্মে আছে, তাই জাডেজাকে বসানোর ঝুঁকি নেওয়া যায়।
দীপক চাহারের না-থাকা: নতুন বলে নিঃসন্দেহে দীপক চাহার ভাল ছন্দে আছে। ওর হাতে সুইং আছে। কিন্তু মনে হয় না, ওর অভাবে খুব ভুগতে হবে ভারতকে। নবদীপ সাইনি এসেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ও ভাল খেলেছিল। বলের গতি খুব ভাল। দেখতে হবে, ভারতের মাটিতে কত দূর কী করতে পারে। তবে মহম্মদ শামির ফর্ম আর স্পিনারদের উইকেট নেওয়ার ক্ষমতাই ম্যাচের মোড় ঘোরাতে পারে। তেমন হলে শার্দূল ঠাকুর বা সাইনির মধ্যে এক জনকে বসিয়ে তিন স্পিনারও খেলানো যায়।
তরুণদের ছন্দে থাকা: ভারতীয় দলকে নিয়ে বলা হয়, ব্যাটিংয়ে ‘বিগ থ্রি’ না-খেললে সে রকম বড় রান তুলতে পারে না। ‘বিগ থ্রি’ অর্থাৎ রোহিত শর্মা, কে এল রাহুল/শিখর ধওয়ন এবং বিরাট কোহালি। আগের ওয়ান ডে-তে দেখলাম, কোহালি শূন্য রান করলেও ভারত ৩৮৭ রানের বিশাল স্কোরে পৌঁছে গেল। যদিও বিশাখাপত্তনমে রোহিত এবং রাহুল সেঞ্চুরি করেছিল, কিন্তু তাও বলব, শ্রেয়স আইয়ার-ঋষভ পন্থ ও রকম দুটো ইনিংস খেলতে না পারলে ভারত ওই স্কোরে পৌঁছয় না। ঋষভের বড় শট নেওয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। শ্রেয়স বুঝিয়ে দিল, ও পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে পারে। চেন্নাইয়ে প্রথম দিকে ধরে খেলেছিল। বিশাখাপত্তনমে প্রথম থেকেই মেরেছে। এই দুই তরুণ ক্রিকেটারের ফর্ম কিছুটা চাপমুক্ত রাখবে ‘বিগ থ্রি’-কে। তবে শ্রেয়সদের আসল পরীক্ষা বিরাট বা রোহিতের বড় অবদান ছাড়া রান তাড়া করে ম্যাচ জেতানোয়।
ছয়-সাতে আদর্শ অলরাউন্ডার: এই জায়গার জন্য শিবম দুবের নাম কোনও ভাবেই ভাবা যায় না। ও এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য তৈরি হয়নি। বিশেষ করে বোলিং। ব্যাটিংয়েও বলব পরের দিকে নেমে দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা দেখাতে হবে। প্রতি বার তিন নম্বরে নামার সুযোগ পাবে না। আমার মতে, ঘরোয়া ক্রিকেটে আরও অনেক ম্যাচ খেলে তৈরি হতে হবে শিবমকে। অলরাউন্ডারের তালিকায় জাডেজা অবশ্যই আছে। কিন্তু পেসার-অলরাউন্ডার হিসেবে হার্দিক পাণ্ড্যের কোনও বিকল্প নজরে পড়ছে না। সত্যি কথা হল, হার্দিক যদি সুস্থ না হতে পারে তা হলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমরা বড় ধাক্কা খাব।
কটকের পিচে ক্যারিবিয়ানরা: কটকের পিচ নিয়ে আমার যা অভিজ্ঞতা, তার থেকে বলতে পারি, ব্যাটসম্যানরা ভালই সুবিধে পাবে। প্রচুর চার-ছয় দেখতে পাব। সে কারণে বলব, ভারত যদি প্রথমে ব্যাট করে তা হলে ৩২০-৩৩০ রানের উপরে স্কোর করতেই হবে। কটকের পিচে কুল-চাকে খেলানোর কথা বলছি, কারণ ওরা উইকেট তুলতে পারে। আর উইকেট তুললেই ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংকে চাপে রাখা যাবে।
নিলাম পরবর্তী হেটমায়ার: কোনও সন্দেহ নেই শিমরন হেটমায়ার, শেল্ডন কটরেলরা আইপিএলে ভাল দাম পাওয়ার পরে দারুণ মেজাজে থাকবে। ওদের নিয়ে যে দিল্লি বা পঞ্জাব ভুল করেনি, সেটা প্রমাণ করার জন্য কটকের এই ম্যাচকে বেছে নিলে অবাক হব না।