আবেগপূর্ণ: স্ত্রী হেজল কিচ ও মা শবনমের সঙ্গে যুবরাজ। পিটিআই
সোমবারই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন যুবরাজ সিংহ। তাঁর অবসরকে কেন্দ্র করে বিষণ্ণ ক্রিকেটমহল। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাক্তন ও বর্তমান ক্রিকেটারেরা করেছেন স্মৃতিরোমন্থন। কিন্তু ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়ে দিলেন, আরও ভাল অবসর প্রাপ্য ছিল যুবরাজের।
রোহিতের টুইট, ‘‘চলে যাওয়ার আগে বুঝতে পারিনি কি চলে গেল। তোমাকে খুব ভালবাসি। আরও ভাল অবসর প্রাপ্য ছিল তোমার।’’
যুবরাজের ম্যাচ মাঠে বসে দেখতে ভয় পেতেন তাঁর মা শবনম সিংহ। ভয় পেতেন, যদি দ্রুত আউট হয়ে যায়! ছেলের অনুরোধ সত্ত্বেও বাড়িতে বসেই টিভিতে ছেলের ব্যাটিং দেখতেন। আর প্রার্থনা করতেন। সোমবার যখন ছেলের অবসরের ঘোষণা বসে শুনছিলেন, চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। দূরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত দিনগুলির কথা ভেসে উঠছিল তাঁর চোখে।
সোমবার মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁর ছেলে অবসর ঘোষণার দিন শবনম বলেন, ‘‘আমার ছেলের জীবন স্বার্থক। যা চেয়েছিল, সব পেয়েছে। বিশ্বকাপ জিতেছে। দর্শকদের ভালবাসা পেয়েছে। একজন ক্রিকেটারের জীবনে আর কী-ই বা পাওয়ার আছে। ওর অবসরের সিদ্ধান্ত একেবারেই ব্যক্তিগত। আমি একেবারেই এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি।’’ ছেলের অবসরের দিন মায়ের চোখে ভেসে উঠল সেই লড়াইয়ের দিনগুলি। শবনমের কথায়, ‘‘ছোটবেলা থেকেই খুব ডাকাবুকো। ম্যাচ হারলে খাওয়া বন্ধ করে দিত। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকত। সেই ছেলে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করেও সফল। ওকে হারতে বেশি দেখিনি।’’
কিন্তু মাঠে যেতে তিনি ভয় পেতেন। ‘‘ছোটবেলায় বেশ কয়েক বার মাঠে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে ম্যাচগুলোয় ও ভাল খেলতে পারেনি। তাই বড় হওয়ার পরে আমি মাঠে যেতে ভয় পেতাম। বলতে পারেন কুসংস্কার।’’
যুবরাজের অবসরকে সমর্থন করেছেন তাঁর স্ত্রী হেজ়েল কিচও। যুবরাজের সঙ্গে দেখা হওয়ার আগে ক্রিকেট সম্পর্কে কোনও জ্ঞান ছিল না তাঁর। কিন্তু ২০১৪ সালে ভারতীয় দলে যুবি ডাক পাওয়ার পরে হেজ়েল বুঝেছিলেন, ক্রিকেটই তাঁর স্বামীর ভালবাসা। এমনকি ভারতীয় দলের কিটব্যাগ দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন তাঁর স্বামী। হেজ়েলের কথায়, ‘‘যুবির সঙ্গে দেখা হওয়ার পরেই ক্রিকেট বুঝতে শিখেছি। বুঝতে পেরেছি, কী করে একটি খেলা জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে যেতে পারে। ২০১৪ সালে যুবি ভারতীয় দলে ফের ডাক পাওয়ার পরে ওর বাড়িতে ভারতীয় দলের কিট পাঠানো হয়েছিল। সেই কিট দেখে কেঁদে ফেলেছিল ও। সেই মুহূর্তে আবেগটা বুঝতে পারিনি। মনে হয়, একজন ক্রিকেটারই বুঝতে পারবে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কতটা বিশেষ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে।’’
যুবরাজের অবসরের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে হেজ়েল বললেন, ‘‘স্ত্রী হলেও কিছু সিদ্ধান্ত একেবারে ব্যক্তিগত। ওর অবসরের সিদ্ধান্তে আমার পুরোপুরি সমর্থন রয়েছে। ও এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না যা আমি সমর্থন করতে পারব না।’’