ইডেনে নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে ঋদ্ধিমান। ফাইল চিত্র
নৈশালোকে গোলাপি বলে খেলার অভিজ্ঞতা তিন বছর আগেই হয়ে গিয়েছে ঋদ্ধিমান সাহার। ২০১৬-তে সিএবি সুপার লিগ ফাইনালে ভবানীপুরের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। কিন্তু টেস্ট খেলার জন্য সেই অভিজ্ঞতা কতটা কার্যকরী হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন ভারতীয় উইকেটকিপার। টেস্টের আগে যে দু’দিন প্রস্তুতির সময় পাবেন, তা পুরোপুরি কাজে লাগাতে চান। কোকাবুরার পরিবর্তে গোলাপি ‘এসজি টেস্ট’ বল কী রকম ব্যবহার করে তা নিয়েও বিশেষ উৎসাহ তৈরি হয়েছে ঋদ্ধির মধ্যে।
তিন বছর আগে গোলাপি বলে খেলার অনুভূতি নিয়ে আনন্দবাজারের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করলেন ভারতীয় ক্রিকেটের ‘সুপারম্যান’। ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা ভাল হলেও উইকেটকিপার হিসেবে খুব একটা সুখের নয়। ঋদ্ধি বলছিলেন, ‘‘সুপার লিগের ম্যাচ হয়েছিল কোকাবুরার গোলাপি বলে। নৈশালোকে সেই বলটি দেখতে অসুবিধা হয়েছে। শুধু কিপার নয়, স্লিপ ফিল্ডারেরাও সমস্যায় পড়েছিল বল গ্রিপ করতে। কিন্তু এসজি টেস্ট বল কোকাবুরার চেয়ে একেবারেই আলাদা। আশা করা যায়, এসজির গোলাপি বলও লাল বলের মতোই আচরণ করবে।’’
অভিজ্ঞতা থেকে ঋদ্ধি জানিয়েছেন, গোলাপি বলের পালিশ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই নৈশালোকে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ঋদ্ধির কথায়, ‘‘রাতের আলোয় সাদা বল দেখতে সমস্যা হয় না। কিন্তু গোলাপি বল পুরনো হয়ে গেলে দেখতে সামান্য অসুবিধা হয়। বিশেষ করে, সেই সমস্যা হয় ফিল্ডারদের। কারণ, বলের পালিশ উঠে যায়। ব্যাটসম্যানেরা সেই ফারাকটা বুঝতে পারবে না।’’
২২ নভেম্বর থেকে শুরু ইডেন টেস্ট। শীতকালে নৈশালোকে সমস্যা তৈরি করতে পারে কুয়াশা ও শিশির। বুধবার সন্ধ্যায় মাঠে যথেষ্ট পরিমাণ কুয়াশা লক্ষ্য করা গিয়েছে। যদিও দীপাবলির আতসবাজির ধোঁয়া ও কুয়াশা মিশে সেই স্তর তৈরি হয়েছে কি না বোঝা যাচ্ছে না। এখনই কুয়াশা পড়তে শুরু করলে নভেম্বরে কী হবে? ভেজা বলে বোলারদের কতটা সমস্যা হতে পারে? ঋদ্ধির উত্তর, ‘‘আমরা জুনে ম্যাচ খেলেছিলাম। তখন শিশির ছিল না। তবুও গোলাপি বলে স্পিনাররা সফল হতে পারেনি। বল ঘুরছিল না। বলের সিমও দ্রুত বসে গিয়েছিল। নভেম্বরে শিশির পড়বেই। এই পরিস্থিতিতে স্পিনাররা কী করে সেটাই দেখার।’’
২০১৬-র সেই ম্যাচে সব চেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছিলেন পেসারেরা। ৪০টি উইকেটের মধ্যে পেসাররাই পেয়েছিলেন ৩৩টি উইকেট। তা হলে গোলাপি বলে পেসাররাই কি বেশি সুবিধা পান? ঋদ্ধির ব্যাখ্যা, ‘‘সে ম্যাচের উইকেট কিন্তু সবুজ ছিল। ‘গ্রিন টপ’-এ পেসাররা সাহায্য পাবেই। আসন্ন বাংলাদেশ ম্যাচে উইকেট কী রকম থাকে, তার উপর সমস্ত কিছু নির্ভর করছে। তবে স্পিনারদের থেকে পেসাররা কিছুটা বেশি সাহায্য পেতে পারে। কারণ, নৈশালোকে বল নড়াচড়া করে। রিভার্স করবে কি না বলা যাচ্ছে না।’’
ইডেন টেস্ট শুরু হওয়ার আগে মাত্র দু’দিন গোলাপি বলে অনুশীলন করার সময় পাবেন ঋদ্ধি। সেই দু’দিনই তাঁর কাছে সময় নিজেকে তৈরি করে নেওয়ার। নৈশালোকে বোলারের সুইং বোঝা এক জন কিপারের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তার জন্য আলাদা করে কোনও অনুশীলন করার পরিকল্পনা রয়েছে? ঋদ্ধি বলছিলেন, ‘‘গোলাপি বলে অনুশীলন করাই যায়। কিন্তু সিরিজ শুরু হওয়ার আগে নৈশালোকে অনুশীলন করার সুযোগ পাব না। শুধু গোলাপি বলে অনুশীলন করে তো লাভ নেই। নৈশালোকে বল কী রকম নড়াচড়া করে সেটাই প্রশ্ন। আশা করা যায়, এসজির লাল বলের মতোই সুইং করবে। হয়তো একটু বেশিই করবে।’’ আরও বলেন, ‘‘দিনরাতের টেস্টের আগে আরও কয়েক দিন অনুশীলন করার সময় পাওয়া গেলে ভাল হত। কিন্তু সেটা পাওয়া সম্ভব নয়। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই এক জন ক্রিকেটারের চ্যালেঞ্জ।’’