দলকে এক সুতোয় বাঁধার কাজ করে চলেছেন কোচ তিতে।
দু’ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষে ব্রাজিল। আজ, বুধবার মস্কোর স্পার্টার্ক স্টেডিয়ামে গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থাকা সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ড্র করলেই বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় পৌঁছে যাবেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-রা। কিন্তু তিতে সতর্ক। সার্বিয়াকে হারিয়েই প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যোগ্যতা অর্জন করাই লক্ষ্য ব্রাজিল কোচের। জানিয়ে দিয়েছেন, কোস্টা রিকার ম্যাচের দলই অপরিবর্তিত রাখছেন তিনি।
মস্কো থেকে সোমবার রাতে সোচিতে পৌঁছয় ব্রাজিল দল। ঠান্ডা উপেক্ষা করেই নেমারদের দেখতে টিম হোটেলের সামনে ভিড় করেছিলেন ভক্তেরা। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে তিতে বলেছেন, ‘‘সার্বিয়ার বিরুদ্ধে দলে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। আগের ম্যাচে যারা খেলেছিল, তারাই শুরু করবে।’’
ব্রাজিল দলে পরিবর্তন বলতে শুধু অধিনায়ক। কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ‘ক্যাপ্টেন্স আর্মব্যান্ড’ থাকবে আর এক ডিফেন্ডার জোয়াও মিরান্দার হাতে। তাঁর দাবি, কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে জয়ের পরেই যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে গিয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে মিরান্দা বলেছেন, ‘‘কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয় দলের আবহটাই বদলে দিয়েছে। সব সমস্যা দূর হয়ে গিয়েছে।’’ সার্বিয়া ম্যাচে অধিনায়কত্বের সুযোগ পেয়ে যে তিনি অভিভূত, গোপন করেননি। মিরান্দা বলেছেন, ‘‘ব্রাজিল জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়ার গৌরবের কিছু হয় না। আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। অধিনায়ক না-হলেও আক্ষেপ থাকত না। আমার প্রধান লক্ষ্য ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমে নিজেকে উজাড় করে দেওয়া।’’
তিতের মতো মিরান্দাও জয় ছাড়া কিছু ভাবতে চান না। তিনি বলেছেন, ‘‘গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছনোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তাই জয় ছাড়া আমরা অন্য কিছু ভাবছিই না এই মুহূর্তে।’’
সার্বিয়া ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠক। কিন্তু তিতে ফিরে গিয়েছিলেন অতীতে। শোনালেন ব্রাজিলের কোচ হিসেবে তাঁর অভিষেকের অজানা কাহিনি। কোপা আমেরিকার ব্যর্থতার পরে ২০১৬ সালে তিতের হাতে জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে দেন ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা। অভিষেক ম্যাচই বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে। ৩-০ জিতেছিল ব্রাজিল। জোড়া গোল করেছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। একটি গোল করেন নেমার। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে তিতে বলছিলেন, ‘‘জয়ের পরে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।’’
সাংবাদিক বৈঠকে হঠাৎ তিতের দু’বছর আগের ঘটনা টেনে আনার কারণ একটাই, নেমারের পাশে দাঁড়ানো। কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে গোল করে কেঁদে ফেলেছিলেন ব্রাজিল তারকা। তা নিয়ে অনেকে কটাক্ষও করেছেন। নিজের কাহিনি শুনিয়ে তিতে বুঝিয়ে দিলেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সব সময় সম্ভব হয় না। এখানেই শেষ নয়।
তিতে জানিয়ে দিয়েছেন, একা নেমারের পক্ষে ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন করা সম্ভব নয়। বলছেন, ‘‘দলের সাফল্য কখনও এক জন ফুটবলারের উপরে নির্ভর করে না। তবে সবাই মিলে চেষ্টা করলে বিশ্বকাপ জেতা কঠিন নয়।’’