উদ্বেগ: নেমারকে এই ভাবে বসে পড়তে দেখেই চিন্তা শুরু। ছবি: এএফপি
নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র থেমে যেতেই কেঁপে গেল ব্রাজিল। আবার কিছু হল না তো?
বিশ্বকাপে ব্রাজিলের আশা ভরসা সব কিছু তাঁকে ঘিরেই। নিজেকে ফিরে পেতে কার্যত সময়ের বিরুদ্ধেই ছুটছেন পেলের দেশের মহাতারকা। রবিবার অ্যানফিল্ডে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে খেলতে নামার আগে টটেনহ্যামে জাতীয় শিবিরের অনুশীলনে হঠাৎই ডান পা ধরে বসে পড়েছিলেন নেমার। যা দেখে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় অনুশীলন। ছুটে আসেন তিতে। আর নেমার স্বয়ং ‘ব্যাপারটা তেমন কিছুই না’ জানাতেই ফের সব স্বাভাবিক!
ব্যাপার যে আদৌ তেমন কিছু নয়, উল্টে লিয়োনেল মেসির প্রাক্তন সতীর্থ যে নিজের সেরা ফর্মের থেকে খুব দূরে নেই, এমন আশ্বাসবাণীও পেয়ে গেলেন ব্রাজিল ভক্তেরা। দিলেন রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার দানিলো লুইজ দ্য সিলভা।
কোচ তিতে প্রস্তুতি শিবিরে দানিলোর উপরই দায়িত্ব দিয়েছেন, নেমারকে ট্যাকল করে বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করার। টটেনহম্যামে শিবিরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির দানিলো বললেন, ‘‘গত ১০ দিন ধরে ওর সঙ্গে প্রচুর কথা হচ্ছে। ট্রেনিংয়ে আমার উপরই দায়িত্ব পড়ছে ওকে আটকানোর। প্রতিদিন মনে হচ্ছে উন্নতি করছে। গতিও বাড়ছে। যত দিন যাচ্ছে তত ওকে আটকানো কঠিন হয়ে পড়ছে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আশা করছি একশো শতাংশ না হলেও, তার কাছাকাছি সুস্থতা নিয়েই নেমার রাশিয়ায় পৌঁছবে। সেটা আমাদের জন্য
ভীষণ দরকারও।’’
এ দিকে, বিশ্বকাপের বাজারেই নেমার নিয়ে নতুন জল্পনা উসকে দিল ব্রাজিলের এক পত্রিকা। প্রসঙ্গ সেই একই। হালফিলে তাঁর প্যারিস সাঁ জারমাঁ ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা। এমনও শোনা যাচ্ছে, নেমারকে প্যারিস থেকে স্পেনে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে মূল উদ্যোগ তাঁর বাবা নেমার সিনিয়রের। ব্রাজিলের পত্রিকাটিতে নেমার যার বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘‘আমার ফুটবল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মোটেই বাবা নেন না। যা কিছু নিজেই ঠিক করি। তবে বাবা সেরা পরামর্শদাতা। অবশ্যই যদি কিছু জানতে চাই তবেই। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সব সময় একা নিই।’’ তা হলে তাঁর ফুটবল জীবনে বাবার ভূমিকা কী? নেমারের জবাব, ‘‘ফুটবলের পাশাপাশি অন্য আরও অনেক কাজ থাকে। বাবাই সে সব দেখেন। ফলে আমি নিজে খেলায় মন দিতে পারি।’’
নেমার অবশ্য বলেছেন, আপাতত তিনি ক্লাব ফুটবল নিয়ে ভাবছেন না। দানিলোও তেমনটাই জানাচ্ছেন। নেমার নাকি বিশ্বকাপ ভাবনায় এতটাই ডুবে আছেন যে আপাতত অন্য সব কিছু থেকে দূরে থাকছেন। তিতে ও তাঁর সহকারীদের প্রতিটি নির্দেশ মানছেন একেবারে নিয়ম করে। বিশ্বকাপে ভাল কিছু করাই এখন একমাত্র লক্ষ্য। ২০১৪ সালের গ্লানি থেকে মুক্ত হওয়াই যেন তাঁর মোক্ষ। ব্রাজিল বিশ্বকাপে পিঠে মারাত্মক চোট পাওয়ায় জার্মানির বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি তিনি। সেই ম্যাচ ব্রাজিল ১-৭ হারে। এ বারও চোট নিয়েই রাশিয়ায় যাচ্ছেন। ব্রাজিল শিবির অবশ্য মনে করছে, রাশিয়ায় তাঁদের মহাতারকা সদস্য তৈরি হয়েই যাবেন। দানিলোর কথাতেও তেমনই ইঙ্গিত।
এমনিতে দানিলো নিজে এ বার তিতের প্রথম দলে থাকতেও পারেন। দানি আলভেসের চোট সে সুযোগ এনে দিয়েছে। যদিও দানিলোর খুবই খারাপ লাগছে আলভেস না থাকায়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আলভেসের চোটটা আমাদের কাছে বড় ধাক্কা। ওর কথা ভাবলে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’’ সঙ্গে ম্যা়ঞ্চেস্টার সিটির ডিফেন্ডার দানিলের আরও কথা, ‘‘ও থাকলে খুব ভাল হতো। দলকে একাই নেতৃত্ব দেওয়া ক্ষমতা আলভেসের মতো কারও নেই। তবে আমি আর ফ্যাগনার (করিন্থিয়াসের ডিফেন্ডার) চেষ্টা করছি ওর অভাবটা খানিকটা হলেও আড়াল করার।’’