লড়াই: চোট লাগা পায়ের পাতা ব্যান্ডেজ করা নেমারের। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
দীর্ঘ আটানব্বই দিন পরে মাঠে নেমেই দর্শনীয় গোল করেছেন। আর তার পরেই নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র) ফাঁস করলেন তার ডান পায়ের বর্তমান অবস্থা। বুঝিয়ে দিলেন মাঠে নামতে ঠিক কতটা মরিয়া ছিলেন তিনি।
ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের পরে অস্ত্রোপচার হওয়া পায়ের ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন নেমার। সেখানে দেখা গিয়েছে, আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় এখনও ব্যান্ডেজ বাঁধা রয়েছে তাঁর। সেই অবস্থাতেই রবিবার মাঠে নেমেছিলেন তিনি। ছবিতে দেখা গিয়েছে নেমারের শিন গার্ডও। যার উপর পর্তুগিজ ভাষায় লেখা ‘ঈশ্বরই ভরসা’। আর ছবির সঙ্গে নেমার লিখেছেন, ‘ফিরে আসার লড়াইটা ভালই লাগছে। আবেগকে আঁকড়ে ধরেই এগিয়ে চলেছি। সাহাসটা হারাইনি। কারণ বিশ্বটা সাহসীদের।’
প্রস্তুতি ম্যাচে রবিবার ক্রোয়েশিয়াকে হারানোর পরে অ্যানফিল্ডের মিক্সড জোনে নেমার বলেন, ‘‘ফের মাঠে নামলাম ভালবাসার ফুটবল নিয়ে। আর সেই ম্যাচে গোল করে ফিরছি, এর চেয়ে মজাদার কিছু হয় না।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ধীরে ধীরে ম্যাচ ফিট হওয়ার দিকে এগোচ্ছি। এই মুহূর্তে আমি ৮০ শতাংশ ম্যাচ ফিট। কারণ, এখনও পায়ে লাগছে। তবে তা গুরুতর কিছু নয়। প্রত্যেক দিন অনুশীলনের মাধ্যমে ফের চোট লাগার ভয় ধীরে ধীরে কমছে।’’
ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোল করেই ব্রাজিল রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন নেমার। সেখানেই ছিলেন ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার। তাঁকে জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছিলেন তিনি। মার্চের শুরুতে এই ব্রাজিলীয় চিকিৎসকের কাছেই ভেঙে যাওয়া ডান পায়ে কনিষ্ঠার হাড়ে অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন নেমার। তার পরেই ব্রাজিলের এই তারকা ফুটবলার ধন্যবাদ জানান দলের ফিজিক্যাল ট্রেনার রিকার্দো রোসা এবং ফিজিও রাফায়েল মার্তিনিকে। তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নেমার বলেন, ‘‘এই তিন জন গত কয়েক মাস ধরে চব্বিশ ঘণ্টা আমার সঙ্গে রয়েছেন। আমাকে সুস্থ করে মাঠে ফেরানোর আসল লোক তো ওরাই। সেই কারণেই গোলের পরে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে ওদের জড়িয়ে ধরেছিলাম।’’
লুকা মদ্রিচদের বিরুদ্ধে গোল করায় ৮৪ ম্যাচে ৫৪ বার ব্রাজিলের জার্সি গায়ে বিপক্ষের জালে বল ঢোকালেন নেমার। আপাতত তাঁর সামনে রয়েছেন তিন জন। পেলে (৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল), রোনাল্ডো (৯৮ ম্যাচে ৬২ গোল) ও রোমারিও (৭০ ম্যাচে ৫৫ গোল)। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে গোল করায় নেমার ইতিমধ্যেই ছাপিয়ে গিয়েছেন জিকো, বেবেতো, রিভাল্ডো, জেইরজ়িনহো এবং রোনাল্ডিনহোদের। এই মুহূর্তে ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ দেওয়া রোমারিওর প্রায় ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছেন তিনি।
সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নেমার বলছেন, ‘‘ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের সঙ্গে আমার কোনও লড়াই নেই। ওঁরা সকলে আমার আদর্শ। পেলে, জিকো, রোমারিও, রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহোদের মতো আদর্শদের দেখে বড় হয়েছি। সুতরাং ওঁদের চেয়ে বড় ফুটবলার কখনও হতে পারব না। গোলের সংখ্যা দিয়ে ওঁদের মাপা যাবে না।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘গোল করে দলকে জেতাতে পারলেই আমি খুশি। ওই সব কিংবদন্তিদের চেয়ে বড় হতে চাই না। আর সেটা যে আমি নই, তা খুব ভাল করেই জানি। গোটা বিশ্ব ওঁদের ইতিহাস আর ওঁদের গুরুত্ব ভাল করে জানেন।’’