মহড়া: তৈরি হচ্ছেন নেমার। ব্রাজিলের অনুশীলনে। ছবি: গেটি ইমেজেস
জার্মানির কাছে গত বিশ্বকাপের সেই কলঙ্কজনক হারের প্রতিশোধ এ বারই নেওয়ার জন্য ছটফট করছেন নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)। রাশিয়ায় বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়ার ফাঁকেই সেই মনোভাব পরিষ্কার করে দিয়েছেন ব্রাজিলের তারকা। ‘‘এ বার যদি জার্মানিকে সামনে পাই এবং হারাতে পারি তা হলে সেটা হবে ব্রাজিলের কাছে সবথেকে সুখের দিন, সব চেয়ে বড় প্রতিশোধ,’’ বৃহস্পতিবার বলে দিয়েছেন ব্রাজিলের ‘পোস্টার বয়’।
ছয় বার বিশ্বকাপ জেতার লক্ষ্য নিয়ে সোচিতে ঘাঁটি গেড়েছে ব্রাজিল। রাশিয়ায় পা দেওয়ার পর থেকেই ঝকঝকে ব্রাজিলকে ধরা হচ্ছে খেতাবের অন্যতম দাবিদার হিসেবে। নেমার, ফিলিপে কুটিনহোরা সেই লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছেন প্রত্যেক দিন। কিন্তু খেতাব জেতার পাশাপাশি তাদের কাছে চার বছর আগে ১-৭ গোলে হারের যন্ত্রণা কতটা দগদগে হয়ে রয়েছে, সেটা প্রকাশ্যে এনে দিয়েছেন নেমার। ২০১৪-তে অভিশপ্ত সেমিফাইনালে ব্রাজিলের সেই হারের কথা বলতে দিয়ে নেমার বলে দিয়েছেন, ‘‘বেলো অরিজন্তের সেই হার কোনও ব্রাজিলিয়ান ভুলতে পারেনি। আমাদের দেশের ফুটবলে ওটা লজ্জার দিন। সেই কালো দিন মোছার জন্য মানসিকভাবে তৈরি হয়ে এসেছি আমরা।’’ বোঝাই যাচ্ছে, শাপমোচনের সুযোগ খুঁজছেন তিনি।
জার্মানির একটি ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বারবার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন তিতের দলের এক নম্বর অস্ত্র। ‘‘সে দিন আমি মাঠে থাকলে ব্রাজিলের ফল এত খারাপ হত না। এ ভাবে সাত গোল খেতে হত না। ফল অন্য রকম হত।’’ চোটের জন্য সেই ম্যাচের আগেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি। নেমার জানেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি এ বারও যথেষ্ট শক্তিশালী। তারাও খেতাবের অন্যতম দাবিদার। তা সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছেন, ‘‘আমি একবার ওই ম্যাচটা খেলতে চাই। বলতে পারেন খুবই আগ্রহী। সেটা এ বার হলেই ভাল হয়। দেখবেন তখন ফল কী হয়!’’
গত বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে চোট পেয়েছিলেন নেমার। তার পিঠের হাড়ে চিড় ধরে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে ব্রাজিলের হার্টথ্রব বলেছেন, ‘‘ওটা একটা দুর্ঘটনা। হঠাৎই এমনভাবে যে টুনার্মেন্ট থেকে ছিটকে যাব, ভাবতেও পারিনি।’’ রবিবার ব্রাজিল তাদের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। পরের দিকে জার্মানির সঙ্গে দেখা হতেই পারে নেমারদের। প্যারিস সাঁ জারমাঁ রেকর্ড অর্থ দিয়ে বার্সেলোনা থেকে নিয়েছিল নেমারকে। সেই প্রসঙ্গ উঠলে তিনি মবলে দেন, ‘‘বিশ্বের সর্বকালের দামি ফুটবলার হয়েছি আমি। তবে এটা তো শুধু টাকা। এর বাইরে অন্য কিছু নয়। এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’ তার পরেই মজা করে বলেন, ‘‘আমি ওই ক্লাবের মালিক হলে নেমারকে এত টাকা দিয়ে কিনতাম না।’’ সবশেষে বলে ফেলছেন, ‘‘বিশ্বকাপ জয় অন্য অনুভূতি। কোনও অর্থ দিয়েই যে তা মাপা যায় না!’’