আজ নামছেন: চমক: অনুশীলনে নতুন চেহারার নেমার। শনিবার রস্তভে। ছবি: রয়টার্স।
সোনার ছেলের সোনালি মুহূর্ত কি প্রথম ম্যাচ থেকেই শুরু হবে? চার বছর আগে তাঁর গোলেই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল ব্রাজিল। এ বার রাশিয়াতেও কি পারবেন তিনি একই ভাবে দেশের আশা-ভরসা কাঁধে নিয়ে এগিয়ে দিতে? নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-কে নিয়েই যে স্বপ্ন দেখছেন সাম্বার দেশের মানুষ।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামার আগে ফুটবল বিশ্বে এই প্রশ্নগুলোই ভাসছে। বিশ্বের সব চেয়ে দামি ফুটবলার গুরুতর চোট থেকে ফিরে এসে প্রস্তুতি ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে দুর্দান্ত গোল করে সমর্থকদের আশা দ্বিগুণ করে দিয়েছেন। এ বার মাঠে নামার আগে দ্বিতীয় চমকটা দিলেন তিনি। নয়া চুলের ছাঁট দিয়ে। এই নতুন চুলের ছাঁটেই হয়তো রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু করতে চলেছেন নেমার। তাঁকে ঘিরে সামান্য সংশয় থাকলেও সমর্থকেরা ধরে নিয়েছেন, নেমারকে প্রথম ম্যাচ থেকেই দেখা যাবে।
ব্রাজিলের বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর আগে প্রবল উন্মাদনা চলছে গোটা দেশে। রিয়ো দে জেনেইরো-সহ ব্রাজিলের বড় শহরগুলিতে সরকারি কর্মীরা চাইলে নেমারদের ম্যাচে নামার দিন ছুটি নিতে পারেন। বড় বড় রেস্তরাঁতে ব্রাজিলের সব ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। মালিক ব্রাজিলীয় না হলেও একই ব্যবস্থা থাকছে বড় শহরের বেশ কিছু রেস্তরাঁয়।
এক মেক্সিকান রেস্তরাঁর মালিক ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘ফুটবল ম্যাচে উত্তেজনার কথা ধরা হলে ব্রাজিল ম্যাচের ধারে-কাছে কিছু আসবে না। ব্রাজিলের সমর্থকরা খেলা দেখতে দেখতে উত্তেজনায় পাগল হয়ে যায়। সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তাঘাট ঠাসা থাকবে সমর্থকদের ভিড়ে।’’ মাস তিনেক আগে ব্রাজিলে চোট সারিয়ে ওঠার সময় নেমার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের জন্য নতুন চুলের ছাঁটের ছবি পোস্ট করেছিলেন। সেই ছাঁটকে বলা হচ্ছিল ‘ডেডলক’। মনে করা হচ্ছিল বিশ্বকাপে সেই চুলের ছাঁটেই তাঁকে দেখা যাবে। কিন্তু সেই ছাঁটের সঙ্গে নতুন চুলের ছাঁটের মিল নেই। এ বারে তিনি চুলে রংও করেছেন। সোনালি কোঁকড়ানো চুলেই সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামার কথা নেমারের।
১-৭ হারের দুঃস্বপ্ন ভুলে চার বছর পরে রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে কলঙ্কমুক্ত করবেন নেমার, এমন আশায় বুক বেধেঁ আছেন ভক্তরা। তার একটা কারণ বিশ্বকাপে সেরা তারকারা যে বয়সে জ্বলে উঠেছেন, কেরিয়ারের ঠিক সেই জায়গাতেই আছেন এখন ২৬ বছর বয়সি নেমার। গত ফেব্রুয়ারিতেই তাঁর ২৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে প্রায় একার হাতে দেশকে জেতানো দিয়েগো মারাদোনার বয়স ছিল ২৬। ১৯৯০ বিশ্বকাপে সালভাতোর স্কিলাচি ২৫ বছর বয়েসেই বিশ্বকাপে সোনার বুট জিতেছিলেন। ১৯৮২ সালে পাওলো রোসি একই কাণ্ড করে দেখান ২৬ বছর বয়েসে। ১৯৯৪ সালে ইতালিকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে দেওয়ার মুখে নিয়ে আসা রবার্তো বাজ্জোর বয়স ছিল ২৭। ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ফাইনালে যখন জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তখন জ়িনেদিন জ়িদানের বয়স ছিল ২৬।
নেমার কি পারবেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে?