হুঙ্কার: গোলের পরে সতীর্থের কোলে নেমার। ছবি: রয়টার্স।
অস্ট্রিয়া ০ • ব্রাজিল ৩
বিশ্বকাপের আগে তাঁকে নিয়েই উদ্বেগ ছিল সব চেয়ে বেশি। কিন্তু যত কাপের লড়াই এগিয়ে আসছে, নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-এর খেলা তত ভরসা দিচ্ছে ব্রাজিল কোচ তিতে-কে। অস্ত্রোপচারের পরে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নেমে দুরন্ত গোল পেয়েছিলেন। রবিবার অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে নেমেও গোল পেলেন তিনি। যে ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলে জিতল ব্রাজিল। প্রথম গোলটা করেছিলেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। দ্বিতীয় গোল এল নেমারের পা থেকে। তিন নম্বর গোলটা করলেন ফিলিপে কুটিনহো।
প্রথম ম্যাচে নেমারকে দ্বিতীয়ার্ধে নামিয়েছিলেন তিতে। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যে শুরু থেকেই খেলাবেন, তার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন আগের দিনই। দেখা গেল তাই ঘটল। প্রথম একাদশেই নেমারকে রেখেছিলেন তিতে। এবং কোচের আস্থার অমর্যাদা করেননি তিনি। আরও একটা দুরন্ত গোল করে যান।
লড়াকু অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে ভিয়েনায় খেলতে নেমে শুরু থেকেই দাপট ছিল ব্রাজিলের। ৩৬ মিনিটের মাথায় দলকে এগিয়ে দেন জেসুস। এর পর নেমারের পালা। ৬৩ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে বল পেয়ে অস্ট্রিয়ার ডিফেন্ডার আলেকজান্ডার দ্রাগোভিচকে ড্রিবল করে মাটিতে ফেলে দেন নেমার। এর পর গোলকিপারের দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে বল গোলে পাঠিয়ে দেন। যে ভাবে অস্ট্রিয়াকে নিয়ে ছেলেখেলা করে গোল করে গেলেন নেমার, তাতে ব্রাজিল সমর্থকেরা তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেই পারেন।
নেমারের এই গোলের পরে ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘‘বিপক্ষকে এই ভাবে অপমান করা উচিত হয়নি নেমারের!’’ রবিবার ৮৪ মিনিট মাঠে ছিলেন নেমার। যে সময়ের মধ্যে তাঁকে অস্ট্রিয়ার ফুটবলারদের কড়া ট্যাকলও হজম করতে হয়েছে। এক বার তো মাঠে পড়ে ছটফট করতে দেখা যায় নেমারকে। হঠাৎ করে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যার পরে মাঠের পরিবেশও উত্তপ্ত হয়ে পড়েছিল। এর ঠিক ছ’মিনিট বাদে রবের্তো ফির্মিনোর কাছ থেকে বল পান কুটিনহো। বাঁ দিক থেকে ঢুকে এসে দুরন্ত শটে দলের তিন নম্বর গোলটি করেন তিনি। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ অভিযান শুরু ১৭ জুন, সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তার আগে দল যা খেলছে, তাতে স্বস্তিতে থাকতেই পারেন ব্রাজিল কোচ। এখান থেকেই মস্কো চলে যাবে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের বিখ্যাত টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া এস্থার বুয়েনোর মৃত্যুতে ব্রাজিল ফুটবলাররা এ দিন কালো আর্মব্যান্ড পরে খেলতে নেমেছিলেন। যে ম্যাচে গোল করার পরে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ স্কোরারদের তালিকায় যুগ্মভাবে তিন নম্বরে উঠে এলেন নেমার। তাঁর গোল সংখ্যা এখন ৫৫। রোমারিয়োর সঙ্গে এক আসনে রয়েছেন তিনি। নেমারের আগে এখন ব্রাজিলের দুই কিংবদন্তি ফুটবলার— পেলে (৭৭ গোল) এবং রোনাল্ডো নাজারিয়ো দে লিমা (৬২)।
তিতের আমলে ব্রাজিল কিন্তু শুধু গোলই করছে না, গোল খাচ্ছেও কম। পরিসংখ্যান বলছে, ২১ ম্যাচে ১৭টি জয় পেয়েছে তিতের ব্রাজিল। তিনটি ড্র, একটি হার। ৪৭টি গোল করেছে, পাঁচটি খেয়েছে। ১৬টি ম্যাচে বিপক্ষ কোনও গোল করতে পারেনি।