আকর্ষণ: মিশন বিশ্বকাপ। সোচি বিমানবন্দরে সোনার জল করা ব্যাগ নিয়ে নেমার। ছবি: রয়টার্স
গোটা ব্রাজিলের প্রত্যাশার চাপ তাঁর কাঁধে। বিশ্বকাপ খেলতে ইতিমধ্যেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন রাশিয়ায়। সেই নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র)-এর লক্ষ্য, ব্রাজিলকে ষষ্ঠ বার বিশ্বকাপ জেতানো।
কিন্তু ব্রাজিলের সেই দাপুটে ফুটবলার যে ছোটবেলার ঘরে ঢুকে কেঁদে ভাসাবেন তা কে জানত? রাশিয়া উড়ে যাওয়ার দিন কয়েক আগে ব্রাজিলের একটি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল তাদের শো-এর জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নেমারকে। যেখানে গিয়ে কাঁদতে শুরু করে দেন নেমার।
আসলে সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেল অনুষ্ঠানের সেটটি সাজিয়েছিল অন্যরকম ভাবে। সাও পাওলো শহরতলীর ছোট্ট শহর সান ভিসেন্তের যে বাড়িতে নেমার বড় হয়েছেন হুবহু সেই বাড়ির মতো করে। এমনকি ঘরের আসবাবপত্র, শোকেস, কাপবোর্ড, ট্রফি নেমারের সেই ছোটবেলার স্মৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়েই তৈরি করে রাখা ছিল। অনুষ্ঠানের প্রযোজকরা নেমারকে না জানিয়েই এর আগে তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলে সান ভিসেন্তের সেই বাড়ির বিবরণ শুনে এসেছিলেন। সেই মতোই ছোটবেলায় খেলে পাওয়া নেমারের ট্রফিগুলো রাখা ছিল শোকেসের এক কোণে। আর ঘরের অন্য প্রান্তে জড়ো করে রাখা ছিল ফুটবল। বাদ যায়নি ছোটবেলায় গান শোনার সেই টেপরেকর্ডার ও পছন্দের গায়িক-গায়িকাদের ক্যাসেটও। যা অবসরে অন্যতম বিনোদন ছিল নেমারের। নিখুঁত ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল ২৬ বছর বয়স্ক এই ফুটবলারের প্রথম শোওয়ার ঘরটিও। মোদ্দা কথায়, একদম নেমারের সেই ছোটবেলার বাড়ির রেপ্লিকা বানানো হয়েছিল অনুষ্ঠানের সেটকে।
সেখানেই ঘরে ঢোকার পরে আবেগমথিত হয়ে পড়েন ব্রাজিলের এই ভরসা। দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকেই হতবাক হয়ে পড়েছিলেন প্যারিস সাঁ জারমাঁ-র এই স্ট্রাইকার। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ আগাম আন্দাজ করেছিল এ রকম কিছু একটা ঘটতে পারে। তাই নেমারের অজান্তেই তাঁর মা ও বোনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসেছিল তারা। যাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়। নেমার কান্নায় ভেঙে পড়তেই ঘরে ঢুকে পড়েন তাঁর মা ও বোন। এই দু’জনকে দেখতে পেয়ে শেষ পর্যন্ত কান্না থামে নেমারের। জড়িয়ে ধরেন মাকে।
ব্রাজিলের বিশ্বকাপ অভিযান নিয়ে স্বল্পদৈঘ্যের ছবি বানাতে গিয়ে এই অনুষ্ঠানটি তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে বার্তা মাঠের বাইরে গোল করতে আগ্রাসী হলেও মাঠের বাইরে নেমার ব্রাজিলের আর চার-পাঁচটা বাচ্চার মতোই আবেগপ্রবণ ও পরিবারকেন্দ্রিক ব্যক্তিত্ব। জানা গিয়েছে, বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিলের টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে এই ছবিটি।
তবে নেমারকে নিয়ে গোটা ব্রাজিলকে একাত্ম করার মাঝে অন্য ছবিও ধরা পড়েছে রাশিয়ায়। সেখানে বসবাসকারী বেশ কিছু ব্রাজিলীয় নাকি চেনেনই না নেমারকে। এমনটাই জানিয়েছে ব্রাজিলের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম। এমনই একজন মস্কো থেকে নয় হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা ভ্লাদিভস্তকের বাসিন্দা ইউলিয়ান রিউতোভ। ব্রাজিলের পারানায় ছোটবেলা কাটলেও আপাতত তিনি থাকেন রাশিয়ায়। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘নেমারের নাম শুনিনি। তবে ব্রাজিল ফাইনালে উঠলে খেলা দেখতে যেতে পারি স্টেডিয়ামে।’’