আশাবাদী: ব্রাজিলের প্রাক্তন যুব কোচ মার্কোস পাকেত্তা। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর কোচিংয়ে ২০০৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। তাঁর হাতে তৈরি ফের্নান্দিনহো লুইস রোসা এই মুহূর্তে পাঁচ বারের বিশ্বজয়ীদের অন্যতম সেরা অস্ত্র। তিনি, মার্কোস পাকেত্তা এই মরসুমেই দায়িত্ব নিয়েছেন আইএসএলের ক্লাব পুণে সিটি-র। কিন্তু তাঁর মন পড়ে রয়েছে রাশিয়ায়। আজ, রবিবার সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে অভিযান শুরু করছেন নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস (জুনিয়র), ফিলিপে কুটিনহোরা। তাঁরা কি পারবেন ব্রাজিলকে ষষ্ঠ বার বিশ্বসেরা করতে?
শনিবার ইতালি থেকে পর্তুগাল হয়ে ব্রাজিলের রিয়ো দে জেনেইরো রওনা হওয়ার আগে আনন্দবাজারকে ফোনে মার্কোস বললেন, ‘‘বিশ্বকাপে ব্রাজিলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’’ কেন? মার্কোসের ব্যাখ্যা, ‘‘এ বারের ব্রাজিল দলটার ভারসাম্য অনেক বেশি। একঝাঁক দুর্দান্ত ফুটবলার রয়েছে। তাই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখা যেতেই পারে। শুধু আমি একা নই, ব্রাজিলের ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ এখন এই স্বপ্নই দেখছেন।’’
চার বছর আগে নিজেদের দেশে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানি ৭-১ বিধ্বস্ত করেছিল ব্রাজিলকে। বিপর্যয় ভুলে দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়ান নেমাররা। রাশিয়া বিশ্বকাপের মূলপর্বে সবার আগে যোগ্যতা অর্জন করেন তাঁরা। মার্কোসের মতে, ব্রাজিলের ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে মূল কারিগর কোচ তিতে। তিনি বললেন, ‘‘তিতেই ব্রাজিলকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছেন। জাতীয় দলের জন্য একঝাঁক প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার তুলে এনেছেন। যারা শুধু দক্ষই নয়, মানসিক ভাবেও দারুণ শক্তিশালী। আধুনিক ফুটবলে মানসিক ভাবে শক্তিশালী হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘ব্রাজিলকে একটা দল হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছেন তিতে। তাই দলটার খেলা এত আকর্ষণীয় হয়েছে।’’
মার্কোস মুগ্ধ নেমারের মানসিকতায়। বললেন, ‘‘নেমার যে অসাধারণ ফুটবলার, তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। ওর সব চেয়ে বড় গুণ, দলের কথা ভেবে খেলে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘নেমার একেবারেই স্বার্থপর নয়। ওর কাছে দলের সাফল্যই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’
তিতে, নেমারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেও মার্কোস মনে করেন, এখনও কিছুটা ভুলভ্রান্তি থেকে গিয়েছে ব্রাজিলের খেলায়। বলছিলেন, ‘‘বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে বলের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে ব্রাজিলের ফুটবলাররা। আশা করছি, এত দিনে নিশ্চয়ই নেমাররা সেই ভুলত্রুটি শুধরে নিয়েছে।’’
ফুটবল পণ্ডিতেরা সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ব্রাজিলের পাশাপাশি আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, জার্মানি ও স্পেনকে রেখেছেন। মার্কোস অবশ্য পুরোপুরি তাঁদের সঙ্গে একমত নন। খোলাখুলি বলে দিলেন, ‘‘ব্রাজিলের পরে আমি রাখব একমাত্র জার্মানিকেই।’’ লিয়োনেল মেসির আর্জেন্টিনা, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগাল বা আন্দ্রে ইনিয়েস্তার স্পেন কি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল নয়? মার্কোস বললেন, ‘‘আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, ইংল্যান্ড, স্পেন, ফ্রান্স অবশ্যই ভাল দল। কিন্তু ওদের আমি খেতাবি দৌড়ে রাখছি না।’’
বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে কোস্তা রিকা ও সার্বিয়া। ২২ জুন দ্বিতীয় ম্যাচে নেমাররা খেলবেন কোস্তা রিকার বিরুদ্ধে। পাঁচ দিন পরে শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ সার্বিয়া।