ব্রাজিলের অনুশীলনে খোশমেজাজে নেমার। মঙ্গলবার টটেনহ্যামে।ছবি:রয়টার্স
চেলসির জার্সি গায়ে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে সদ্য সমাপ্ত মরসুমে দাপিয়ে খেলেছেন তিনি। ব্রাজিলের সেই উইঙ্গার উইলিয়ান বোর্জেস দ্য সিলভা বিশ্বকাপে ফর্ম আরও ক্ষুরধার করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এক রাগবি গুরুর কাছে।
প্রস্তুত হচ্ছেন ব্রাজিলকে বিশ্বকাপে স্বপ্ন দেখানোর কান্ডারিও। তিনি— নেমার দ্য সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র। টটেনহ্যামের প্রস্তুতি শিবিরে মঙ্গলবার খোশমেজাজে দেখা গিয়েছে নেমারকে। কখনও তিনি সতীর্থের কান টেনে দিচ্ছেন, কখনও গলা ধরে ঝুলে পড়ছেন। নেমারকে দেখে মনে হয়নি, চোট নিয়ে কোনও উদ্বেগে আছেন।
উইলিয়ানের প্রস্তুতি পর্ব অবশ্য আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই প্রস্তুতির নেপথ্যে রয়েছেন ব্রাজিলের রাগবি দলের প্রাক্তন সদস্য অ্যালান জোসেফ। যিনি চোটের কারণে দু’বছর আগে রিয়ো অলিম্পিক্সে ব্রাজিলের রাগবি দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তার পর থেকে ব্যক্তিগত ভাবে ফিটনেস ট্রেনিং ও ফিজিয়োথেরাপি করান অ্যালান। গত শনিবার ইংল্যান্ডে উড়ে যাওয়ার আগে উইলিয়ানের সঙ্গে ব্রাজিল দলের শিবিরেই দেখা করতে এসেছিলেন অ্যালান। এক বছর আগে রেস্তরাঁয় উইলিয়ানের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। তার পরেই প্রাক্তন এই রাগবি খেলোয়াড়ের সাহায্য চান উইলিয়ান।
আরও পড়ুন: সুস্থ হয়ে বিশ্বকাপে খেলো, সালাহকে বার্তা সুয়ারেসের
সংবাদমাধ্যমকে অ্যালান বলেছেন, ‘‘স্ত্রীর সঙ্গে রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলাম। সেখানেই উইলিয়ান নিজের আসন ছেড়ে উঠে এসে বলে আমাকে ও চেনে। পারফরম্যান্স নিখুঁত করতে আমার কাছে আসতে চায়।’’ অ্যালান যোগ করেন, ‘‘তার পরে উইলিয়ানকে বিশেষ ভাবে তৈরি করেছি বিশ্বকাপের জন্য।’’
কী ভাবে উইলিয়ানকে তৈরি করেছেন অ্যালান? উত্তরে উইলিয়ানের গুরু বলছেন, ‘‘উইলিয়ান গত মরসুমে চেলসির হয়ে ৫৩টি ম্যাচ খেলেছে। এর কারণে পেশি যাতে ক্লান্ত না হয়ে পড়ে, হঠাৎ চোট না পায়— তার জন্য বিশেষ ট্রেনিং করিয়েছি। বদলে দিয়েছি খাদ্যাভ্যাসও।’’ অ্যালান আরও বলেন, ‘‘শেষ ছয় মাসে ঘুমের অভ্যাসও বদল করিয়েছি। ঘুমের অনেকগুলো স্তর আছে। এখন পঞ্চম স্তর পর্যন্ত ঘুমোয় উইলিয়ান। প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরে ‘হার্ট-রেট’ কমে। তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরে পুরুষ হরমোন বৃদ্ধি হয়। আর পঞ্চম স্তরে সারা দিনে পাওয়া নির্দেশ মস্তিষ্ক ধরে রাখে। সেই মতো শরীর চলে পরবর্তী সময়ে। এই স্তরে পৌঁছানো বেশ কঠিন। রজার ফেডেরার, ইউসেইন বোল্ট, মাইকেল ফেল্পসরা এই স্তর পর্যন্ত
রোজ ঘুমান।’’
আর এই পঞ্চম স্তর পর্যন্ত উইলিয়ানকে ঘুমে ডুবিয়ে রাখতে অ্যালানকে বেশ পরিশ্রমও করতে হয়েছে। মজা করে এই প্রাক্তন রাগবি খেলোয়াড় বলছেন, ‘‘রোজ রাত জেগে এনবিএ (বাস্কেটবল)-র ম্যাচগুলো দেখত উইলিয়ান। খেলত ভিডিও গেমসও। সেগুলো সব বকাঝকা করে বন্ধ করিয়েছি।’’
উইলিয়ানও বলছেন, ‘‘বিশেষ ধরনের ব্যায়াম, ঘুমের পদ্ধতি ও খাবারদাবার বদলে বিশ্বকাপের আগে আরও আত্মবিশশ্বাসী মনে হচ্ছে।’’