নজরে: পুজো দিতে কেরলের এক মন্দিরে পি ভি সিন্ধু। বুধবার। এএফপি
কিংবদন্তি রজার ফেডেরারের দেশ সুইৎজারল্যান্ড থেকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের শিরোপা ছিনিয়ে নিয়ে তিনি ঠিক করে ফেলেছিলেন পরের লক্ষ্য। পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু আবারও জানিয়ে দিলেন, আগামী বছর টোকিয়ো থেকে সোনা জেতাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
বুধবার ভারতের এক নম্বর মহিলা ব্যাডমিন্টন তারকা তিরুঅনন্তপুরমে এসেছিলেন একটি মন্দিরে পুজো দিতে। পরে একটি বর্ণোজ্জ্বল ‘রোড শো’তেও অংশ নিতে হয় তাঁকে। সিন্ধুকে নিয়ে ভক্তদের মধ্যে উন্মাদনাও লক্ষ্য করা যায়। বিকেলে কেরল সরকার এবং কেরল অলিম্পিক সংস্থার তরফে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিন্ধু জানিয়ে দেন, টোকিয়ো অলিম্পিক্সের সোনাকেই পাখির চোখ করেছেন তিনি এবং তার জন্য আরও কঠোর অনুশীলন শুরু করতে চলেছেন।
সামনেই রয়েছে ডেনমার্ক ওপেন এবং প্যারিস ওপেন ব্যাডমিন্টন। সিন্ধু বলেছেন, ‘‘অলিম্পিক্স সোনাই আমার প্রধান লক্ষ্য। তবে সেই কাজ মোটেও সহজ হবে না। আমাকে আরও বেশি কঠোর অনুশীলনে ডুবে যেতে হবে।’’ সেখানেই না থেমে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘অলিম্পিক্সের আগে রয়েছে ডেনমার্ক ওপেন এবং প্যারিস ওপেন ব্যাডমিন্টন। এটা আমার কাছে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনকারী প্রতিযোগিতার মতো। সেখানে ভাল কিছু করতেই হবে।’’ বিশ্ব র্যাঙ্কিং তালিকার ছ’নম্বরে থাকা সিন্ধু আরও বলেছেন, ‘‘হার-জিত জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কোনও সময় আপনি জিতবেন, আবার কোনও সময় হারের তিক্ত স্মৃতির সামনেও দাঁড়াতে হবে। কিন্তু আমি ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই এবং আশা করছি, ডেনমার্ক ওপেনে ভাল ফল করব।’’
সিন্ধুকে দেখার জন্য এ দিন উপস্থিত ছিলেন খুদে ভক্ত এবং স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। উল্লসিত ব্যাডমিন্টন তারকা বলেছেন, ‘‘যে ভাবে সকলে আমাকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন, তাতে অত্যন্ত গর্ব অনুভব করছি। এখান থেকে যে ভালবাসা পেলাম, তা আমার টোকিয়ো অলিম্পিক্স থেকে সোনা জয়ের স্বপ্ন আরও উস্কে দিল।’’
সংবর্ধনা-মঞ্চে উপস্থিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানান, সিন্ধু গোটা দেশের গর্ব। তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতের প্রথম মহিলা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবে সিন্ধু বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমাদের দেশের অন্যতম ক্রীড়াব্যক্তিত্বের নাম পি ভি সিন্ধু। ওর জন্য আমরা সকলেই গর্বিত।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এর আগে দু’বার বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে হারের পরে সিন্ধুকে অনেক বিদ্রুপ সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য ও আত্মবিশ্বাস হারায়নি এবং কোর্টে সিন্ধু কত বড়মাপের যোদ্ধা, তা প্রমাণ করে দিয়েছে। আমি মনে করি, সেই সমালোচনাই ওকে আরও উদ্দীপ্ত করে তুলেছিল জবাব দিতে।’’ রাজ্য সরকারের তরফে সিন্ধুর হাতে তুলে দেওয়া হয় ১০ লক্ষ টাকার চেক।
এ হেন সংবর্ধনায় স্বভাবতই আপ্লুত সিন্ধু। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পরে দু’টি টুর্নামেন্টে সফল হতে পারেননি এই তারকা। অনেকে মনে করছেন কোচ কিম জি হিউন হঠাৎ দায়িত্ব ছাড়ায় তিনি একটা মানসিক ধাক্কা পেয়েছেন।