কার্লোস আলকারাজ। —ফাইল চিত্র।
উইম্বলডনের সেমিফাইনালে অনায়াসে পৌঁছে গেলেন শীর্ষ বাছাই কার্লোস আলকারাজ। কোয়ার্টার ফাইনালে ২০ বছরের তরুণ ৭-৬ (৭-৩), ৬-৪, ৬-৪ ব্যবধানে হারালেন হোলগার রুনকে। স্পেনের খেলোয়াড় সময় নিলেন মাত্র ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট।
প্রতিযোগিতা যত এগোচ্ছে তত খেলা খুলছে আলকারাজের। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে তাঁকে দেখে ঘাসের কোর্টে তেমন সড়গড় মনে হয়নি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁকে দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য মেজাজে। ডেনমার্কের ২০ বছরের তরুণ সমানে সমানে লড়াই করার চেষ্টা করলেন বটে। কিন্তু আলকারাজের ফিনিশিংয়ের কাছে হেরে গেলেন একাধিক বার। বুধবারের ম্যাচে আলকারাজ ভুলও করলেন অনেক কম। আগের ম্যাচগুলির থেকে অনেক পরিপূর্ণ টেনিস উপহার দিলেন।
শেষ আটের লড়াইয়ে আলকারাজের একটা সুবিধা ছিল। প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা সব হাতের তালুর মতো জানা ছিল শীর্ষবাছাইয়ের। এটাই আবার তাঁর সব থেকে বড় অসুবিধাও ছিল। তাঁরও সব কিছুও রুনের নখদর্পণে। কারণ একটা সময় তাঁরা ছিলেন ডাবলস পার্টনার। ২০ বছরের দুই বন্ধুর লড়াই দেখতে মুখিয়ে ছিলেন টেনিসপ্রেমীরা। দু’জনকেই ভবিষ্যতের তারকা হিসাবে ধরা হচ্ছে। রুনের থেকে অবশ্য এখনই বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছেন আলকারাজ। ক্রমতালিকায় শীর্ষে স্পেনের তরুণ। ড্যানিস তরুণ ছ’নম্বরে। এক এবং ছয়ের তফাৎ ধরা পড়ল উইম্বলডন সেমিফাইনালের গোটা ম্যাচে। প্রথম সেটে তীব্র লড়াই হল দু’জনের। খেলা চলল ১ ঘণ্টা ৫ মিনিট। কেউ কারও সার্ভিস ভাঙতে পারলেন না। টাইব্রেকারে বাজিমাত করলেন আলকারাজ। সেরা খেলোয়াড়েরা ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জ্বলে ওঠেন। বুধবার আলকারাজও উঠলেন। টাইব্রেকারে বন্ধু এবং প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতে দিলেন না। ১-২ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েও জিতলেন ৭-৩ ব্যবধানে। টাইব্রেকারে নিজের দ্বিতীয় সার্ভিস ব্রেক হওয়ার বদলা নিলেন রুনের তিন বার সার্ভিস ভেঙে।
প্রথম সেটে এগিয়ে যাওয়া পর আলকারাজকে আরও আত্মবিশ্বাসী দেখাল। কখনও বেস লাইন থেকে শক্তিশালী ব্যাকহ্যান্ড আবার কখনও নেটের কাছে এসে আলতো ভলিতে বিভ্রান্ত করলেন রুনকে। নেটের ওপারে থাকা বন্ধু কী করতে পারে, তা আঁচ করে সাধ্য মতো লড়াই করার চেষ্টা রুন করলেন বটে। কিন্তু পেশাদার টেনিসের নির্মম রুক্ষতা তাঁকে সুযোগ দিল না। আলকারাজ নবম গেমে রুনের সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে গেলেন। ৫-৪ ব্যবধানে। পরের গেমে নিজের সার্ভিস ধরে রেখে ৬-৪ ব্যবধানে দ্বিতীয় সেট শেষ করে দিলেন ৩৪ মিনিটে।
২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া আলকারাজকে রোখার ক্ষমতা ছিল না রুনের। মানসিক ভাবেও তিনি তত ক্ষণে বেশ বিধ্বস্ত। এ বার পঞ্চম গেমেই সার্ভিস খোয়ালেন রুন। ১৫-৪০ পয়েন্টে এগিয়ে যাওয়া আলকারাজের বিদ্যুৎ গতির ব্যাকহ্যান্ড রিটার্ন কার্যত দাঁড়িয়ে দেখলেন তিনি। সার্ভিস করার পর তখনও ফলো থ্রু শেষ হয়নি ডেনমার্কের তরুণের। চেয়ার আম্পায়ার ঘোষণা করে দিলেন ‘গেম আলকারাজ’। আর বেগ পেতে হয়নি আলকারাজকে। শুধু নিজের সার্ভিস ধরে রাখলেন শীর্ষ বাছাই। তাতেই ৬-৪ ব্যবধানে সেট এবং ম্যাচ জিতে নিলেন। গত বছর তচুর্থ রাউন্ডে হেরে গিয়েছিলেন। এ বার সেমিফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ তৃতীয় বাছাই দানিল মেদভেদেভ।
বুধবার উইম্বলডনের অন্য সেমিফাইনালে রাশিয়ার মেদভেদেভকে অবশ্য লড়াই করে জিততে হল। ২ ঘণ্টা ৫৮ মিনিট লড়াই করে তিনি ৬-৪, ১-৬, ৪-৬, ৭-৬ (৭-৪), ৬-১ ব্যবধানে হারালেন অবাছাই ক্রিস্টোফার ইউব্যাঙ্কসকে। পুরুষদের ডাবলসের সেমিফাইনালে উঠেছেন ভারতের রোহন বোপান্না। তাঁর এবং অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু এবডেনের ষষ্ঠ বাছাই জুটি ৬-৭ (৩-৭), ৭-৫, ৬-২ ব্যবধানে হারাল নেদারল্যান্ডসের অবাছাই বার্ট স্টিভেনস এবং টেলন গ্রিকস্পুর জুটিকে।