রজার ফেডেরার। ফাইল চিত্র।
ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলে জয় চান না রজার ফেডেরার। কল্পনাও করতে পারেন না, অতীতে তাঁর উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিনগুলি শূন্য গ্যালারির সামনে ঘটলে কী হত! অল ইংল্যান্ড ক্লাবে আট বারের চ্যাম্পিয়নকে বলতে শোনা গেল, অতিমারির সময়টা কতটা ভয়ঙ্কর তাঁর কাছে। যখন অনেক ক্ষেত্রেই ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলা হয়েছে। অথবা সীমিত সংখ্যক দর্শকের সামনে।
সুইস মহাতারকা দারুণ খুশি সেন্টার কোর্টে ১৫ হাজার দর্শকই আবার খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দেখে। কে বলবে ২০২০-তে কোভিডের জন্য ইংল্যান্ডে খেলাধুলোই একটা সময় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রথম বার যুক্তরাষ্ট্র ওপেনও হয়েছিল ফাঁকা স্টেডিয়ামে। আর ফরাসি ওপেন দেখতে পেয়েছিলেন প্রত্যেক দিন মাত্র এক হাজার দর্শক!
এ বারের উইম্বলডনে চতুর্থ রাউন্ডে লোরেনজ়ো সোনেগোর বিরুদ্ধে জিতে রজারকে দারুণ হাসিখুশি দেখিয়েছে। গ্যালারি থেকে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন প্রচুর মানুষ। কিংবদন্তি তারকার কথায়, ‘‘আমি কল্পনা করার চেষ্টা করছিলাম, অতীতে আজকের মতো দর্শকদের সামনে খেলতে না পারলে কী হত। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ম্যাচে। মনে হচ্ছিল, তা হলে বোধহয় আবেগের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই আর আমার মধ্যে থাকত না।’’ যোগ করেছেন, ‘‘অবশ্যই তা হলেও আমি উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হতাম। কিন্তু অনুভূতিটা মোটেই একই রকম হত না। তাই এখানে আবার এত দর্শক খেলা দেখতে আসায় ভীষণ ভাল লাগল। আশা করি, আগামী দিনেও এ ভাবেই সব কিছু চলবে।’’ ফেডেরারের আরও মন্তব্য, ‘‘বিশ্বাস করুন সোনেগোর বিরুদ্ধে খেলতে নেমে শুধু মনে হচ্ছিল, নিজের একশো শতাংশই দিতে পারছি। সেটা হয়েছে শুধুই এত দর্শক খেলা দেখতে এসেছেন বলে। মনে পড়ছিল প্যারিসে রাতে খেলার সময় গ্যালারিতে মাত্র পাঁচ জন ছিলেন। এ বারের উইম্বলডনের সঙ্গে এই ফারাকটা এককথায় অবিশ্বাস্য।’’
উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে ফেডেরারের সামনে এ বার হুবার্ট হুরকাৎজ্। খেলা বুধবার। একই দিন অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে নোভাক জোকোভিচ মুখোমুখি হবেন মার্টন ফুকসোভিচের। পোলান্ডের অবাছাই হুরকাৎজ্-এর কাছে হেরে ছিটকে গিয়েছেন প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় বাছাই দানিল মেদভেদেভ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে হুরকাৎজ্ জেতেন ২-৬, ৭-৬, ৩-৬, ৬-৩, ৬-৩ সেটে।
মেয়েদের সিঙ্গলসে প্রথম বার উইম্বলডন সেমিফাইনালে উঠলেন ক্যারোলিনা প্লিসকোভা। ৬-২, ৬-২ সেটে সুইৎজ়ারল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া গোলুবিচকে হারালেন তিনি। সেমিফাইনালে তিনি খেলবেন আরিনা সাবালেঙ্কার বিরুদ্ধে। অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে সাবালেঙ্কা ৬-৪, ৬-৩ সেটে হারিয়েছেন তিউনিশিয়ার অনস জাবারকে। এর আগে আরবের কোনও মেয়ে উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতেই পারেননি। সে দিক থেকে জাবার ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। সোমবার ২৬ বছরের এই খেলোয়াড় চমকে দেন গতবারের ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন ইগা শিয়নটেক-কে হারিয়ে। যে ম্যাচে প্রথম সেট ৫-৭ হেরেও দুর্দান্ত ভাবে জাবার ঘুরে দাঁড়ান এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেট জেতেন ৬-১, ৬-১ ফলে। কিন্তু সাবালেঙ্কার বিরুদ্ধে তিনি শেষরক্ষা করতে পারেননি।
মেয়েদের সেমিফাইনালে উঠেছেন এখানকার প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন অ্যাঞ্জেলিক কের্বারও। এই নিয়ে চার বার তিনি উইম্বলডনের শেষ চারে পৌঁছলেন। কের্বারের সামনে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা মুচোভা হেরে যান ২-৬, ৩-৬ সেটে।