ওপেনার হিসেবে সাফল্যের জন্য সৌরভকেই কৃতিত্ব দিলেন সহবাগ।
বীরেন্দ্র সহবাগকে টেস্টে ওপেনার বানিয়ে দেওয়া অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুকুটের অন্যতম সেরা পালক। এই সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী হয়ে উঠেছিল। সহবাগ হয়ে ওঠেন সর্বকালের সেরা আক্রমণাত্মক ওপেনারদের একজন।
১৯৯৯ সালের এপ্রিলে অজয় জাডেজার নেতৃত্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল সহবাগের। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। কিন্তু ভারতের টেস্ট দলে সহবাগের জন্য কোনও জায়গা ফাঁকা ছিল না। এই কারণেই টেস্টে ওপেন করতে বীরুকে রাজি করিয়েছিলেন সৌরভ।
কী ভাবে অধিনায়কের কথায় রাজি হলেন ‘নজফগড়ের নবাব’, সেটাই সম্প্রতি জানিয়েছেন তিনি। এক কলামে বীরেন্দ্র সহবাগ লিখেছেন, ‘প্রায়শই এই প্রশ্নের মুখোমুখি হই। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান থেকে কী করে ওপেনার হয়ে গেলাম, জানতে চাওয়া হয়। টপ অর্ডারে আমার নামার নেপথ্যে বিশাল ভূমিকা রয়েছে দাদার। আমাকে একদিন ওপেন করতে বলেছিল দাদা। তখন থেকেই এর সূত্রপাত। আমি পাল্টা বলেছিলাম, তুমি কেন ওপেন করছ না? তুমি তো ওপেন করো, এমনকি সচিনও ওপেন করে।’
আরও পড়ুন: পারফরম্যান্স তলানিতে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজে চাপে থাকবেন ভারতের এই ত্রয়ী
আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে হারের হাস্যকর অজুহাত, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড ফাফ দু’প্লেসি
তার জবাবে সৌরভ ব্যাখ্যা করেছিলেন পরিস্থিতি। ঠিক কী বলেছিলেন অধিনায়ক? সহবাগ জানিয়েছেন, ‘সৌরভ বুঝিয়েছিল যে ওপেনারের জায়গা ফাঁকা রয়েছে। তাই আমি যদি ওপেন করি, তবেই টেস্ট দলে আমার জায়গা নিশ্চিত হব। কিন্তু আমি যদি ওপেন না করি, মিডল অর্ডারেই খেলতে চাই, তা হলে কেউ চোট না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দাদা এর পর বলেছিল যে, ওপেনার হিসেবে আমাকে তিন থেকে চার ইনিংস সুযোগ দেওয়া হবে। আমি যদি ব্যর্থও হই, তা হলেও দাদা আমাকে খেলিয়ে যাবে বলেছিল। আর বাদ দেওয়ার আগে মিডল অর্ডারে সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এই কারণেই টেস্টে ওপেন করতে রাজি হয়েছিলাম।’
সৌরভের উদ্যোগে সহবাগের ওপেন করতে রাজি হওয়া ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে তাৎপর্যের। টেস্টে ওপেনার হিসেবে ৮৫৮৬ রান করেছেন বীরু। একদিনের ক্রিকেটে ওপেনার হিসেবে করেছেন ৭৫১৮ রান। সহবাগ বলেছেন, সৌরভের আস্থাই তাঁকে ইনিংসের শুরুতে নামার ভরসা জুগিয়েছিল। সহবাগের মতে, ‘এটা ছিল ফেয়ার ট্রিটমেন্ট। এই ধরনের স্বচ্ছতাই একজন অধিনায়কের উপর বিশ্বাস তৈরি করে ক্রিকেটারের মনে। এটা আমাকে প্রচুর আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল। ভেবেছিলাম, দাদা যখন আমার উপর এত ভরসা রাখছে, চেষ্টা করেই দেখা যাক না। আমি যা হয়েছি, তা কিন্তু দাদার জন্যই।’