অধিনায়কোচিত: দুরন্ত হাফ সেঞ্চুরিতে দলকে টানলেন কোহালি। টুইটার
অধিনায়ক বিরাট কোহালি এবং মায়াঙ্ক আগরওয়ালের হাত ধরেই প্রাথমিক অস্বস্তি কাটিয়ে উঠল ভারত। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভারতীয় দলের রান ২০৩-৫। ক্রিজে রয়েছেন হনুমা বিহারী (১২ ন.আ) ও ঋষভ পন্থ (১ ন.আ)। ক্যারিবিয়ানদের মধ্যে বল হাতে সফল জেসন হোল্ডার (৩-৩৫)।
চা-পানের বিরতি পর্যন্ত ভারতের স্কোর ছিল ১৫৭-৩। কোহালি অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে। অজিঙ্ক রাহানে খেলছিলেন ২০ রানে। কিন্তু চা পানের বিরতির পরেই দ্রুত ভারতের এই দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরান ক্যারিবিয়ানরা। অধিনায়ক বিরাটের শতরান ফের আসছে য়খন মনে করা হচ্ছিল, তখনই জেসন হোল্ডারের বলে ৭৬ রানে ফেরেন কোহালি। তার আগে কেমার রোচের বলে ২৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন অজিঙ্ক রাহানে।
শুক্রবার টসে হারের পরেই ভারত অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘‘আগে ব্যাটিং করলে প্রথম দু’ঘণ্টা খুবই সতর্ক থাকতে হয়। তবে আগে ব্যাটিং করার সুবিধাও রয়েছে। বোর্ডে বড় রান তুলে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। ফলে সেই লক্ষ্য মাথায় রেখে আমাদের খেলতে হবে।’’ পাশাপাশি কোহালি এও জানিয়ে ছিলেন, ওপেনাররা ৭০-৮০ রানের একটা পার্টনারশিপ গড়ে দিতে পারলে পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল অন্য ছবি। ওপেনিং জুটিতে উঠল মাত্র ৩২ রান। জেসন হোল্ডারের আউটসুইং বুঝতে না পেরে শুরুতেই ফিরে যান কে এল রাহুল (১৩) । স্লিপে তাঁকে তালুবন্দি করেন নবাগত কর্নওয়াল। তিন নম্বরে পূজারা ব্যাট করতে নেমে ফের ব্যর্থ। প্রথম ১৮টি বলে কোনও রানই করেননি অভিজ্ঞ টেস্ট ব্যাটসম্যান। এ দিন কর্নওয়ালের বল কাট করতে গিয়ে শর্ট পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন পূজারা। ২৫ বলে ছয় রান করে ফিরে যান তিনি। বরং সেই সময় ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ‘মাউন্টেন ম্যান’ ১৪০ কেজির রাহকিম কর্নওয়ালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক নিয়ে মেতে উঠেছিল জামাইকার জনতা। চেতেশ্বর পূজারার উইকেট তুলে ক্রিকেটবিশ্বকে চমক দিলেন ২৬ বছর বয়সি এই অফস্পিনার। পাশাপাশি স্লিপে দাঁড়িয়ে নিলেন দু’টি ক্যাচও।
পূজারা ফিরে যাওয়ার সঙ্গেই অস্বস্তি শুরু হয় ভারতীয় শিবিরে। এখনও পর্যন্ত ভারতের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান নিজেদের সেরা ছন্দে ফিরতে পারেননি। এ দিনও ১৭ ওভারে ৪৬ রানে দুই উইকেট হারায় ভারত। সেই জায়গা থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন মায়ঙ্ক আগরওয়াল এবং অধিনায়ক কোহালি। ১২৭ বলে ৫৫ রান করলেন মায়ঙ্ক। ইনিংসে ছিল সাতটি চার। তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে কোহালি তুললেন মূল্যবান ৬৯ রান। দলীয় ১১৫ রানের মাথায় হোল্ডারের বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে ফেরেন মায়াঙ্ক।
তবে কোহালি লক্ষ্যে ছিলেন অবিচল। ঠান্ডা মাথায় ক্যারিবিয়ান বোলিংয়ের মোকাবিলা করে তিনি দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। ১১২ বলে তিনি হাফসেঞ্চুরি করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল সাতটি চার। অ্যান্টিগা টেস্টের নায়ক অজিঙ্ক রাহানে এ দিনও শুরু থেকে ছিলেন সতর্ক। বিশেষ করে, রানিং বিটুইন দ্য উইকেটসে কোহালি-রাহানে জুটি চাপ বাড়িয়ে দেন ক্যারিবিয়ান বোলারদের।
এ দিকে, অ্যান্টিগা টেস্টের দুই ইনিংসের রেশ এখনও কাটেনি রাহানের। ৮১ রান করার পরে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি করেন ১০২ রান। তিনি মনে করেন, ‘‘দু’বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে টেস্টের দশম সেঞ্চুরির জন্য। পরিশ্রমই সাফল্য দিয়েছে আমাকে।’’