অতিথি: গত মাসে বারুইপুরে সান্তা ক্লজ সেজে এ ভাবেই শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান কোহালি। সেই ভিডিয়ো সম্প্রচারিত হয় রবিবার। টুইটার
শনিবার সকালেই ভিডিয়ো পেয়ে গিয়েছিল ওরা। বারুইপুরের হোমে এইচআইভি আক্রান্ত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সকলে জেনে গিয়েছিল, রবিবার ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচের মাঝে, তাদের সঙ্গে এক মাস আগে সান্তা ক্লজ সেজে বিরাট কোহালির ক্রিসমাস উদযাপনের মুহূর্তগুলো সম্প্রচারিত হবে।
তাই এ দিন ম্যাচের শুরু থেকেই টিভির সামনে বসেছিল হোমের কচিকাঁচার দল। গত ২০ নভেম্বর তাদের সঙ্গে টানা সাড়ে আট ঘণ্টা কাটিয়ে গিয়েছিলেন কোহালি। ‘সিক্স প্যাক’-এর বিরাট তাদের সামনে এসেছিলেন ‘পেট মোটা সান্তা ক্লজ’ সেজে। লাল জোব্বা ও টুপি পরা কোহালি তাঁর নকল সাদা দাড়ি-গোঁফ না খুললে চেনাই যেত না তাঁকে।
হোমের অন্যতম কর্তা কল্লোল ঘোষ এ দিন সন্ধেয় বলছিলেন, ‘‘বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বাচ্চারা কোহালির সঙ্গে সেই বড়দিন উদযাপনের মুহূর্ত টিভিতে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিল।’’
তিনিই জানালেন, ১৮ নভেম্বর বাচ্চাদের জানানো হয়, ২০ নভেম্বর সান্তা ক্লজ আসবে বড়দিনের উপহার নিয়ে। যা শুনে তারা পাল্টা জানতে চেয়েছিল, বড়দিনের এক মাস আগে কেন? তাদের বলা হয়, পরীক্ষার প্রস্তুতি কী রকম চলছে সেটাই দেখতে আসছে সান্তা ক্লজ। বাচ্চাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সান্তার কাজ কী? তারা বলে, ‘‘সান্তা রাতে এসে সব বাচ্চাকে উপহার দেয়। মজা করে। চকোলেট, মিষ্টি দেয়।’’ এ সবই ক্যামেরাবন্দী করা হয়। যা দেখে হেসেছিলেন কোহালি।
সান্তা ক্লজ সেজে হাসতে হাসতে বাচ্চাদের মধ্যে আসেন বিরাট। উপহারও দেন। পরে তাদের কাছে জানতে চান, প্রিয় সুপারহিরোর নাম। উঠে আসে স্পাইডারম্যান, সুপারম্যানের নাম। বিরাট মজা করে বলেন, ওরা এখন ছুটিতে রয়েছে। তখনই একজন বলে বিরাটের কথা। যা শুনে সান্তারূপী বিরাট বলেন, ‘‘তোমরা কি বিরাটের সঙ্গে আলাপ করবে? দাঁড়াও ওকে আনছি।’’ এর পরেই কোহালি নকল দাড়ি-গোঁফ, খুলতেই আনন্দে চিৎকার করে ওঠে বাচ্চারা। জড়িয়ে ধরে বিরাটকে।
হোম সূত্রেই জানা গিয়েছে, বাচ্চাদের সঙ্গেই স্যান্ডউইচ ও চানাচুর ভাগ করে খান বিরাট। নেহা বালা নামে হোমের এক আবাসিক দ্রুত পেন্সিল দিয়ে বিরাটের প্রতিকৃতি এঁকে উপহারও দেয়। যা পেয়ে অভিভূত হন বিরাট। দুই ছাত্র বলে, ‘‘ক্যাপ্টেন, তুমি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২৫৪ করেছিলে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এ বার ২৫৫ করতে হবে।’’ শুনে হাসতে শুরু করে দেন বিরাট।
বিশেষ বড়দিন উদযাপন নিয়ে ভিডিয়োতে বিরাট বলেন, ‘‘এই মুহূর্তটা আমার কাছে বিশেষ। এই বাচ্চাগুলোই তো সারা বছর চিৎকার করে আমাদের উৎসাহ দেয়।’’ ক্যামেরার বাইরে বাচ্চাদের তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রচুর লড়াই করি ২২ গজে সেরাটা দিতে। আর এরা তার চেয়েও কঠোর সংগ্রাম
করে জীবনযুদ্ধে।’’ বারুইপুর ছাড়ার আগে খুদে ভক্তদের তিনি বলেও আসেন, ‘‘নিজেদের ফিট রাখতে হবে। সঙ্গে দরকার শৃঙ্খলাও। তা হলেই অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারবে। সব সময়ে হাসিখুশি থাকতে হবে। তা হলেই জীবনটা তোমাদের কাছে ইতিবাচক হবে।’’