অ্যালবামে: এই আগ্রাসনই নিয়ে এসেছিলেন সৌরভ। ফাইল চিত্র
বিরাট কোহালির অধিনায়কত্বের ধরনের মধ্যে অনেকটাই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছায়া দেখতে পান জাহির খান। দু’জনেরই নেতৃত্ব দেওয়ার ভঙ্গি আগ্রাসী এবং সাহসী বলে মনে করেন তিনি। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা বাঁ হাতি পেসারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছিল সৌরভের অধীনেই। ২০০০ সালে নাইরোবিতে আইসিসি নক-আউট ট্রফিতে।
জাহির এমন এক জন বোলার, যিনি সৌরভ, ধোনি এবং কোহালি তিন জনের অধীনেই খেলেছেন। তিন অধিনায়কের তুলনা টেনে তিনি বলছেন, ‘‘বিদেশের মাঠে গিয়েও যে আমরা জিততে পারি, সেই বিশ্বাসটা আমাদের মধ্যে এনেছিল সৌরভ। আবার ধোনি কঠিন পরিস্থিতিতেও দারুণ ভাবে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারত। বাইরে আবেগ না দেখালেও ভিতরে ভিতরে আক্রমণাত্মক থাকতে পারত ধোনি। আমরা ওর অধীনে বিশ্বকাপ জিতেছি, তাই ধোনির নেতৃত্বে খেলাটা বিশেষ অনুভূতি হিসেবে থেকে যাবে।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘বিরাট অনেকটাই দাদার মতো। মাঠের মধ্যে নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পিছপা হয় না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সাহসী এবং কঠিন পরিস্থিতিতে দলকে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে পারে। বিরাটের দুর্ধর্ষ ব্যাটিং ফর্মই বলে দেয়, কী ভাবে মাঠে দাঁড়িয়ে ও দলকে নেতৃত্ব দিতে চায়।’’ জাহিরের প্রার্থনা, ‘‘আমি দেখতে চাই, অধিনায়ক বিরাটের হাতে এক দিন বিশ্বকাপ উঠছে।’’
সৌরভের টিম ইন্ডিয়ার পেস বোলিং বিভাগের সেরা অস্ত্র ছিলেন জাহির। সেই সময়ে খুব বেশি ভাল পেস বোলার ছিল না। এখন গতির জোয়ার দেখে তিনি মুগ্ধ। বলছেন, ‘‘ভারতীয় ফাস্ট বোলারদের জন্য এই সময়টা খুবই উত্তেজক। এক সঙ্গে অনেক ভাল পেসার পেয়ে গিয়েছি আমরা। বুমরা, শামি, ইশান্ত, ভুবনেশ্বর, নবদীপ সাইনি। ওরা প্রত্যেকে প্রমাণ করে দিচ্ছে ভারত এখন বোলিংয়ের মহাশক্তি। আমার তো মনে হয় বিশ্বের সেরা বোলিং আক্রমণ এখন ভারতেরই। অন্যদের থেকে আমরা অনেক এগিয়ে।’’ আরও বলছেন, ‘‘ফাস্ট বোলারদের এই উত্থান দেখতে দারুণ লাগছে। চাইব ওরা একই ভাবে পরিশ্রম করে যাক।’’
কোমরের চোটের জন্য আসন্ন টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে গিয়েছেন যশপ্রীত বুমরা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে চোখের সামনে তাঁকে বেড়ে উঠতে দেখেছেন জাহির। ‘‘খুব কম বয়স থেকেই আমি ওকে দেখেছি। খুবই প্রতিভাবান ছিল শুরু থেকে,’’ বুমরা সম্পর্কে বলে দিচ্ছেন জাহির, ‘‘কিন্তু আমার সব চেয়ে ভাল লেগেছে, যে ভাবে ও নিজেকে তৈরি করেছে, সেটা দেখে। যতই ওর অ্যাকশন নিয়ে কথা হোক, ওর জন্য এই অন্য রকম বোলিং ভঙ্গি খুবই কাজে এসেছে। বুমরাকে শুধু ফিটনেসের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। সঙ্গে এটাও দেখা দরকার যে, নিজের উপর খুব বেশি চাপ যেন তৈরি না করে ফেলে।’’
বুমরা না থাকলেও ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে দু’দলের পেস শক্তির মধ্যে আকর্ষণীয় দ্বৈরথ হতে চলেছে। অতিথিদের দিকে থাকছেন কাগিসো রাবাডা, ভার্নন ফিল্যান্ডার, লুনগি এনগিডিরা। ভারতের দিকে শামি, ইশান্ত, উমেশ। যদিও দেশের মাঠে তিন পেসারে ভারতের খেলার সম্ভাবনা প্রায় নেই। ঘূর্ণি পিচে অশ্বিন, জাডেজা, কুলদীপদেরই রাজ করার কথা। জাহির বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমি দেখার অপেক্ষায় আছি, কী ধরনের বোলিং আক্রমণ নামায় ভারত। সাধারণত, দেশের মাঠে অন্তত দু’জন স্পিনার খেলেই। পিচে ফাস্ট বোলারদের জন্য সাহায্য থাকলেও দুই স্পিনার খেলতে দেখা যায়।’’
রোহিত শর্মাকে ওপেন করানোর ভাবনাকেও সমর্থনই করছেন জাহির। বলে দিচ্ছেন, ‘‘রোহিত এত ভাল এক জন ব্যাটসম্যান যে, ওকে দলের বাইরে রাখা যায় না। বিশেষ করে শেষ ছয় মাসে যে রকম দুর্ধর্ষ ফর্ম ও দেখিয়েছে, তার পর যে কোনও ভাবে প্রথম একাদশে ওর জন্য জায়গা করতে চাইবে সব দলই। দেখা যাক ও কেমন করতে পারে। আমার মনে অবশ্য সন্দেহ নেই যে, ও পারবে।’’