বিনেশ ফোগট। — ফাইল চিত্র
কুস্তি নিয়ে সরগরম ভারতীয় ক্রীড়ামহল। আরও এক বার স্পষ্ট হয়ে গেল ভারতীয় কুস্তির বিভাজন। পরস্পরের সঙ্গে কথার লড়াইয়ে জড়ালেন যোগেশ্বর দত্ত ও বিনেশ ফোগট। প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের এশিয়ান গেমসের ট্রায়ালে সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেন যোগেশ্বর দত্ত। পাল্টা বিনেশ বলেন, যোগেশ্বর আসলে শারীরিক হেনস্থায় অভিযুক্ত কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ সিংহের চাকর।
লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী কুস্তিগির যোগেশ্বর বলেন, বিনেশরা আন্দোলন করছেন বলেই তাঁদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থার (আইওএ) অ্যাড-হক কমিটিকে তুলোধনা করেছেন। আইওএ-র অ্যাড-হক কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিনেশ, বজরং পুনিয়া, তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ফোগট, সাক্ষী মালিক, তাঁর স্বামী সত্যবর্ত কাদিয়ান এবং জিতেন্দর কিনহাকে ভারতীয় দলে ফেরার জন্য একটি লড়াইয়ের সুযোগ দেওয়া হবে। প্রত্যেকের নিজ নিজ বিভাগে যিনি ট্রায়ালে জিতবেন, তাঁর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।
এর বিরুদ্ধে প্রাক্তন কুস্তিগির তথা বিজেপি নেতা যোগেশ্বর বলেছেন, “জানি না অ্যাড-হক প্যানেল কোন নিয়মে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা-ও আবার নির্দিষ্ট ছ’জন কুস্তিগিরের জন্যে।” যোগেশ্বরের মতে, আরও অনেকে ট্রায়ালের জন্যে যোগ্য ছিলেন। তাঁর কথায়, “রবি দাহিয়া অলিম্পিক্সে পদক জিতেছে। দীপক পুনিয়া কমনওয়েলথে সোনা জিতেছে। আনসু মালিক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছে। তা হলে এই ছ’জনকে ছাড় দেওয়া হল কেন? আগে তো জাতীয় কুস্তি সংস্থায় এই জিনিস দেখা যায়নি। এই অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্যে আমি বাকি সব কুস্তিগিরকে আহ্বান করছি। ভারতের কুস্তির ইতিহাসে কখনও এ জিনিস দেখা যায়নি।”
যোগেশ্বরের কথার পাল্টা দিয়ে বিনেশ জানিয়েছেন, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা শারীরিক অভিযোগ নাকি হেসেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন যোগেশ্বর। এ-ও বলেছিলেন, মহিলা কুস্তিগিরদের ক্ষেত্রে এ রকম নাকি হয়েই থাকে। কুস্তিগিরদের প্রতিবাদের পর সরকার ছ’জনের যে পর্যবেক্ষক কমিটি তৈরি করেছিল, সেখানে ছিলেন যোগেশ্বরও। সেই প্রসঙ্গেই এ কথা বলেন বিনেশ।
তিনি আরও বলেন, “গোটা কুস্তিবিশ্ব বুঝতে পেরেছে যে ব্রিজভূষণের উচ্ছ্বিষ্ট খায় যোগেশ্বর। সমাজে কেউ অবিচারের বিরুদ্ধে সরব হলে ওর বমি পায়। ব্রিজভূষণের পা চাটার জন্যে সবাই যোগেশ্বরকে মনে রাখবে। ওর মতো লোক কুস্তিতে থাকলে শাসকেরা আরও বেশি পেয়ে বসে।”
এখানেই থামেননি বিনেশ। আরও বলেছেন, “পর্যবেক্ষক কমিটিতে থাকার সময় ওর সেই হাসি আজও ভুলিনি। মহিলা কুস্তিগিরদের সাফ বলে দিয়েছিল, ব্রিজভূষণের কিচ্ছু হবে না। আরও বলেছিল, মহিলাদের সঙ্গে এ রকম ঘটনা হয়েই থাকে। এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কিছু নেই। প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বাড়িতে হুমকি দিয়ে মেয়েদের নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলেছে। আগেও কৃষক, জওয়ান, ছাত্রদের বিরুদ্ধে খারাপ কথা বলেছে।”
যোগেশ্বরকে ‘বিষাক্ত সাপের’ সঙ্গে তুলনা করে বিনেশ জানিয়েছেন, সমাজের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার কারণেই আজ পর্যন্ত কোনও ভোটে জেতেননি তিনি।