Leonel Martinez

৪০ বছরের পরিশ্রমের ফল ৬০ বছর বয়সে, প্রথম পদকের হাত ধরে প্রাপ্তি অলিম্পিক্সের টিকিট

১৯৮৩ সালে প্রথম বার কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ভেনেজুয়েলার মার্টিনেজ়। কখনও পদকের কাছাকাছি যেতে পারেননি। প্রথম পদক জিতলেন চার দশক পর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৩ ২০:২৩
Share:

লিয়োনেল মার্টিনেজ়। ছবি: টুইটার।

গুলির পর গুলি খরচ হয়ে গিয়েছে। তবু পদক আসেনি। বার বার হতাশ হয়েছেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি লিয়োনেল মার্টিনেজ়। ৪০ বছরের চেষ্টায় অবশেষে সহায় হয়েছে ভাগ্য। পদক জিতেছেন ভেনেজুয়েলার শুটার।

Advertisement

১৯৮৩ সালে প্রথম বার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ৬০ বছরের মার্টিনেজ়। শেষ করেছিলেন ৪১তম স্থানে। আন্তর্জাতিক পর্যায় তাঁর সেরা সাফল্যও এসেছিল একই বছরে। প্যান আমেরিকান গেমসে নিজের ট্র্যাপ ইভেন্টে শেষ করেছিলেন অষ্টম স্থানে। তার পর কখনও কোনও প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডেও পৌঁছতে পারেননি মার্টিনেজ়। বার বার ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি ভেনেজুয়েলার শুটার। বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্বকাপ, অলিম্পিক্স— সব বড় বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু ব্যর্থতাই সঙ্গী হয়েছে তাঁর।

চার দশক ধরে ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি। প্রিয় শুটিংকে আঁকড়েই জীবনে এগিয়ে যেতে চেয়েছেন। ১৯৮৪ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে পদক জয়ের অন্যতম দাবিদার ছিলেন মার্টিনেজ়। পারেননি। একটা পদকের জন্য চার দশক ধরে ছুটে বেরিয়েছেন গোটা পৃথিবী। ছোটাই সার। একটার পর একটা প্রতিযোগিতা থেকে খালি হাতে ফিরেছেন। সমালোচনা, গঞ্জনা কম সহ্য করতে হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে তাঁর দক্ষতা নিয়ে। তবু নিজের উপর বিশ্বাস হারাননি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছেন। তাতেও অনুশীলন বন্ধ করেননি। নিশানা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে গিয়েছেন দিনের পর দিন। মাসের পর মাস। বছরের পর বছর। দশকের পর দশক।

Advertisement

শুধু একটা পদক। যে কোনও একটা আন্তর্জাতিক পদককে পাখির চোখ করে উৎসাহিত করেছেন নিজেকে। চার দশক অপেক্ষার পর অবশেষে পেলেন সেই সাফল্য। এ বারের প্যান আমেরিকান গেমসে মার্টিনেজ় অংশগ্রহণ করেছিলেন ব্যক্তিগত ভাবে। পদক হিসাবে কেউ রাখেননি তাঁকে। তাতে অবশ্য মার্টিনেজ়ের কিছু যায় আসেনি। গত চার বছরে এ সব অভ্যাস হয়ে গিয়েছে তাঁর। যাঁরা তাঁকে হিসাবের মধ্যে রাখেননি, তাঁদের হিসাব মেলাতেও দেননি ৬০ বছরের শুটার।

ট্র্যাপ ইভেন্টের প্রাথমিক পর্বের তিন রাউন্ডে ২৩, ৪৬ এবং ৬৯ পয়েন্ট স্কোর করে পঞ্চম হয়ে ফাইনালে উঠেছিলেন মার্টিনেজ়। ফাইনালে তাঁর স্কোর ৪২। ১ পয়েন্টের জন্য সোনা হাতছাড়া হয়েছে তাঁর। এসেছে রুপোর পদক। এটাই বা কম কী! চার দশক ধরে যাঁর গুলি নিশানায় পৌঁছায়নি, তাঁর গলায় পদক। মার্টিনেজ় নিজেই বিশ্বাস করতে পারেননি। কাঙ্খিত সাফল্যে ধরে রাখতে পারেননি চোখের জল।

জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক পদক ছাড়া আরও একটা প্রাপ্তি হয়েছে তাঁর। ১৯৮৪ সালের অলিম্পিক্সে ভেনেজুয়েলার প্রতিনিধিত্ব করা মার্টিনেজ়কে দেখা যাবে প্যারিস অলিম্পিক্সেও। রুপো জয়ের সুবাদে একটা অলিম্পিক্স কোটা জিতেছেন তিনি। ব্যক্তিগত ভাবে জিতেছেন। যা একান্ত ভাবেই ৬০ বছরের শুটারের প্রাপ্তি। ভেনেজুয়েলার শুটিং সংস্থা জানিয়েছে, আগামী বছর প্যারিস অলিম্পিক্সে মার্টিনেজ় দেশের হয়েই প্রতিনিধিত্ব করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement