UEFA Champions League

যন্ত্রণা ভোলার শপথ সালাহর, হুঙ্কার জিজুর

রিয়াল শিবিরে চোট সারিয়ে ছন্দে ফেরার পরে সাত ম্যাচে ৯ গোল করে ফুটছেন করিম বেঞ্জেমা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৮
Share:

প্রস্তুতি: অনুশীলনে অ্যাজ়ার। তবে তাঁর ম্যাচে নামা অনিশ্চিত। ছবি টুইটার।

তিন বছর আগে ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল এখনও ভোলেননি মহম্মদ সালাহ, সাদিয়ো মানেরা। কিয়েভে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ১-৩ হারতে হয়েছিল তাঁদের!

Advertisement

তার পরে ফের মুখোমুখি হতে চলেছে স্পেন ও ইংল্যান্ডের এই দুই প্রথম সারির ক্লাব। লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদ দ্বিতীয় স্থানে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গত বছরের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল ছ’নম্বরে রয়েছে এই মুহূর্তে।

মহারণের আগে লিভারপুল সমর্থকেদের আবেগে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছেন সালাহ স্বয়ং। স্পেনীয় প্রচারমাধ্যমকে বলেছেন, ‍‘‍‘এখনও অনেক বছর ফুটবল খেলব। স্পেনের ক্লাবে আগামী দিনে আমাকে দেখা যেতেই পারে। রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা—দু’টোই বড় ক্লাব। ভবিষ্যৎ তো আমার হাতে নেই।’’

Advertisement

এর পরেই লিভারপুলের প্রতি সালাহের আবেগ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন ক্লাবের কিছু সমর্থক। ‘মিশরের মেসি’ সালাহ অবশ্য সমর্থকদের এই ক্ষোভ থেকে নিজেকে দূরে রেখে গোল করার কাজটি করে চলেছেন। শনিবারও আর্সেনালের বিরুদ্ধে লিভারপুলের ৩-০ জয়ের ম্যাচে গোল করেছেন।

২০১৮ সালের সেই ম্যাচে রিয়ালের ডিফেন্ডার সের্খিয়ো র‌্যামোসের সঙ্গে সংঘর্ষে চোট পেয়ে প্রথমার্ধেই কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন সালাহ। এ বার ফের সেই রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে তাঁর হুঙ্কার, ‍‘‍‘এই ম্যাচটা জেতার জন্য বিশেষ তাগিদ অনুভব করছি। লিভারপুলকে হারিয়েই সেমিফাইনালে যেতে চাই।’’

মঙ্গলবার রাতে সালাহকে রোখার জন্য রিয়াল মাদ্রিদে রক্ষণে থাকবেন না র‌্যামোস। পেশির চোটের কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দুই পর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক। তিনি না থাকায় যুর্গেন ক্লপের প্রশিক্ষণাধীন লিভারপুলের আক্রমণ ভাগ অনেকটাই চাপমুক্ত থাকতে পারবে। রিয়ালের আক্রমণ সামলাতে এই ম্যাচে ক্লপ খেলাতে পারেন ডিফেন্ডার নাথানিয়েল ফিলিপসকে। তিনি বলছেন, ‍‘‍‘রিয়াল বড় ক্লাব। ভাল ফুটবলারদের ভিড় সেখানে। কিন্তু লিভারপুলের বিরুদ্ধে ওদের এগিয়ে রাখার কারণ দেখছি না।’’

লিভারপুল ম্যানেজার য়ুর্গেন ক্লপও বলেছেন, ‍‘‍‘দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ও কঠিন একটা ম্যাচের অপেক্ষায় রয়েছি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বে সব দলই শক্তিশালী। আমরা তৈরি আছি।’’

রিয়াল শিবিরে চোট সারিয়ে ছন্দে ফেরার পরে সাত ম্যাচে ৯ গোল করে ফুটছেন করিম বেঞ্জেমা। ছন্দে রয়েছেন মার্কো আসেন্সিয়ো, ভিনিসিয়াস জুনিয়রেরাও। আর তাঁদের বল জোগানোর জন্য রয়েছেন লুকা মদ্রিচ, টোনি খোসেরা। বাঁ দিক থেকে লেফ্ট ব্যাক মার্সেলোর ওভারল্যাপও বিপক্ষের ভয়ের কারণ। যা লিভারপুলের ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড, ফিলিপসদের রক্ষণের কাছে বড় চাপ হিসেবেই গণ্য হবে।

রিয়াল ম্যানেজার জ়িনেদিন জ়িদান বিপক্ষ সম্পর্কে বলেছেন, ‍‘‍‘লিভারপুল দুর্দান্ত দল। ওদের আক্রমণ ভাগও বেশ ভাল। দু’দলেই কয়েকজন ফুটবলার নেই। কিন্তু ফুটবলে সেটা হয়েই থাকে।’’ যোগ করেছেন, ‍‘‍‘নকআউট পর্বের এই ম্যাচে ১৮০ মিনিট বা তারও বেশি সময় দুই পর্ব মিলিয়ে খেলতে হতে পারে। ২০১৮ সালের সেই ফাইনাল নিয়ে না ভেবে মরসুমের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ কী ভাবে জিতে ফিরতে হবে, তার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’

একই সঙ্গে বিপক্ষ ম্যানেজার ক্লপকেও ভরিয়ে দিয়েছেন প্রশংসার বন্যায়, ‍‘‍‘ও দারুণ একজন প্রশিক্ষক। দীর্ঘ দিনের কোচিং অভিজ্ঞতা রয়েছে।’’ পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই যে তাঁর দলকে সে ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তা নিয়ে বলেছেন, ‍‘‍‘অনেকেই আমাদের সে ভাবে ভরসা করছেন না। আমার দলকে অবজ্ঞা করাটা বোধহয় ঠিক নয়। আমি জানি, এই দলটা কী করতে পারে। মাঠে কাউকে ছেড়ে দেব না।’’

তাঁর দল সম্পর্কে জিদান বলেছেন, ‍‘‍‘প্রত্যেকেই জানে, তাঁকে কী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমার দলে সবাই সেরা ফুটবলার। বেঞ্জেমা যেমন জানে দলের বাকিদের। তেমনই বাকিরাও ওকে জানে, সেটাই দলের সাফল্যের রসায়ন।’’ এডেন অ্যাজ়ারকে নিয়ে জ়িদান বলেছেন, ‍‘‍‘এডেনকে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। তাড়াহুড়ো না করাই ভাল। ওকে নিয়ে ধাপে ধাপে এগনোর পরিকল্পনা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement