স্ত্রী সাবি অসুস্থ থাকায় দুই সন্তানের যত্ন নিতে অন্তবর্তীকালীন জামিনের আবেদন করেছিলেন সুশীল। ফাইল ছবি
দীর্ঘ দিন জেলে কাটানোর পর অবশেষে জামিন পেলেন কুস্তিগির সুশীল কুমার। শুক্রবার দু’বারের অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগিরকে অন্তবর্তীকালীন জামিনের অনুমতি দিয়েছে দিল্লির একটি আদালত। ২৭ বছরের কুস্তিগির সাগর ধনখড় হত্যা মামলায় দীর্ঘ দিন ধরেই জেলে ছিলেন সুশীল। এ দিন অন্তবর্তীকালীন জামিন পেলেও তাঁকে ব্যক্তিগত বন্ডে এক লাখ টাকা জমা রাখতে হয়েছে।
তবে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সাক্ষীদের বিপদের কথা মাথায় রেখে এবং অভিযোগকারীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষার খেয়াল রাখার জন্য সর্ব ক্ষণ সুশীলকে চোখে চোখে রাখবেন দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। স্ত্রী সাবি অসুস্থ থাকায় দুই সন্তানের যত্নআত্তি করার কেউ নেই। তাই অন্তবর্তীকালীন জামিনের আবেদন করেছিলেন সুশীল। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এই মামলায় ১৮ জন গ্রেফতার করেছে। সুশীলের বিরুদ্ধে দু’টি চার্জশিট গঠন করা হয়েছে।
গত মাসেই দিল্লির আদালতে সুশীল এবং বাকি ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। দিল্লির ওই আদালত সুশীলদের বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা, হাঙ্গামা, অবৈধ জমায়েত, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে চার্জ গঠন করেছে।
সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে ২০২১ সালের ৪ মে সুশীল এবং কয়েক জন সঙ্গী কুস্তির প্রাক্তন জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সাগর এবং তাঁর বন্ধুদের উপরে হামলা চালান বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম হন সাগর। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে উঠে আসে, ভোঁতা কিছু বস্তু দিয়ে আঘাতের ফলে রক্তক্ষরণে সাগরের মৃত্যু হয়েছে। দিল্লি পুলিশ সুশীল-সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়ের করে। তার মধ্যে রয়েছে খুন, খুনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্র, অপহরণ, ডাকাতির মতো অভিযোগ।
খুনের অভিযোগে ২০২১ সালের ২৩ মে গ্রেফতার করা হয় সুশীলকে। ২ অগস্ট পুলিশের প্রথম চার্জশিটে বলা হয়, সুশীল ষড়যন্ত্র করে এই হামলা চালান। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল তরুণ কুস্তিগিরদের মধ্যে নিজের ক্ষমতা আবার ফিরিয়ে আনা।
২০২১ সালের ২ জুন থেকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন সুশীল। গত বছর ট্রায়াল কোর্টে সুশীলের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল। ট্রায়াল কোর্টের তরফে বলা হয়েছিল, প্রাথমিক ভাবে এই হামলার ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজে সুশীলকে দেখা যাচ্ছে। অলিম্পিক্স কুস্তিতে জোড়া পদকজয়ীর তরফে জামিনের আবেদন করে বলা হয়েছিল, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে। যদিও সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি আদালত।
এ বছরের মার্চ মাস থেকে বন্দিদের কুস্তি শেখানো শুরু করেছিলেন সুশীল। নিজেকে ফিট রাখতে জেলে ফ্রি হ্যান্ড অনুশীলন করতেন। জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়ার পর বাকি বন্দিদেরও তা শেখাচ্ছিলেন।