মোহনবাগানের নতুন কোচ ‘কিবু’র বিরুদ্ধে খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার টনি। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় এক জনের শেষ। আর এক জনের কেরিয়ার শুরু হতে চলেছে।
ইস্টবেঙ্গল পর্ব শেষ করে শহর ছেড়ে টনি ডোভালে ফিরে গিয়েছেন স্পেনে। অন্য দিকে, হোসে আন্তোনিও ভিকুনা ওরফে ‘কিবু’ পা রাখতে চলেছেন মোহনবাগানে। শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের নতুন কোচ যে তিনিই। তাঁকে নিয়েই আশায় সবুজ-মেরুন শিবির। সমর্থকদের প্রত্যাশা কি পূরণ করতে পারবেন ‘কিবু’? এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে কলকাতার ময়দানে।
মোহনবাগানের নতুন কোচকে অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে টনি বলছেন, ‘‘নতুন দেশে কোচিং করাতে যাচ্ছেন কিবু। ওঁকে শুভেচ্ছা জানাই।’’ ‘কিবু’কে আগে থেকেই চেনেন টনি। মাঠে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিলেন বাগানের নতুন কোচ। পাঁচ বছর আগের এক ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার। টনি বলেন, “মোহনবাগানের নতুন কোচের বিরুদ্ধে আমি খেলেছি।’’
আরও খবর: মোহনবাগানে শুরু স্প্যানিশ-যুগ, কোচের চেয়ারে লোপেতেগুইয়ের বন্ধু ‘কিবু’
সময়টা ২০১৪ সাল। টনি ডোভালে তখন সিডি লুগোর হয়ে খেলেন। ‘কিবু’ তখন ওসাসুনার সহকারী কোচ। হেড কোচ ছিলেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপে পোল্যান্ডের হয়ে খেলা জান আরবান। টনি বলছিলেন, ‘‘আমাদের কোচ ছিলেন কিকে সেটিয়ান। তিনি এখন রিয়াল বেটিসের কোচ। ওসাসুনা তখন দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলে। আমরা ম্যাচটা ৩-০ জিতেছিলাম।’’ ওই একবারই ‘সবুজ-মেরুন’-এর নতুন কোচের মুখোমুখি হয়েছিলেন বেঙ্গালুরু-ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী। তার পরে পেশার তাগিদে দু’জন বদলে ফেলেন ঠিকানা। এখন কিবু আসতে চলেছেন কলকাতায়। আর টনি নতুন ক্লাবের অপেক্ষায়। লাল-হলুদ সমর্থকদের আবেগ শরীরে মেখেই কলকাতা ছেড়েছিলেন টনি। আশা করেছিলেন, নতুন বছরেও তিনি থেকে যাবেন ইস্টবেঙ্গলে। সমর্থকরা টনির কাছে অনুরোধ করেছিলেন, ‘‘থেকে যাও বন্ধু। ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে যেও না।’’ ক্লাব বদলানোর কোনও ইচ্ছাই ছিল না টনির। কিন্তু, ভবিতব্যকে আর খণ্ডাবে কে! দেওয়াললিখন আগেই পড়ে ফেলেন তিনি।
শহরের আবেগের ছোঁয়া আগেই পেয়েছেন টনি। তিনি নিজে নেমেছেন বাংলা ভাগ হয়ে যাওয়া ডার্বিতে। ইস্ট-মোহনের লড়াইয়ে ফুটতে থাকে যুবভারতী। অভিজ্ঞ টনি বলছেন, ‘‘কিবু বিভিন্ন জায়গায় কোচিং করিয়েছেন। ওঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা মোহনবাগানে কাজে লাগাবেন।’’ কিন্তু একটা ডার্বিই যে একজন কোচের পায়ের তলার জমি শক্ত করে। হারলে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় রুখা সুখা জমিতে। জিতলে মেঘের উপর দিয়ে হাঁটেন সেই কোচ। টনি বলছেন, ‘‘দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। একটা ডার্বি জিতলে তো আর গোটা টুর্নামেন্ট জেতা হয় না। একটা ম্যাচের ফলাফলের ভিত্তিতে ছাঁটাই করাও উচিত নয়। কোচকে সময় দিতে হবে। তবেই সাফল্য মিলবে।’’
পোল্যান্ড থেকে কলকাতায় পা রাখার আগে অগ্রজ কোচের জন্য নিজের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার উজাড় করে দিলেন টনি।