2020 Tokyo Olympics

Tokyo Olympics: অন্য বারের থেকে আলাদা এ বারের অলিম্পিক্স, কোথায়, কেন কী ভাবে

এ বারের অলিম্পিক্স ক্রীড়াবিদদের জন্যও বেশ কঠিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন করোনা পরীক্ষা করা হবে তাঁদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১ ১১:০৪
Share:

প্রায় দর্শনহীন এ বারের অলিম্পিক্স। ছবি: রয়টার্স

টোকিয়ো অলিম্পিক্স হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালে। করোনার জন্য পিছিয়ে যায় সেই প্রতিযোগিতা। এ বছর সেই অলিম্পিক্স ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আদৌ তা হবে কি না, আশঙ্কা শোনা গিয়েছে স্বয়ং আয়োজক কর্তার গলাতেই। অন্য বারের থেকে যেন অনেকটাই আলাদা এ বারের অলিম্পিক্স। কোথায় তফাৎ?

করোনা বিধি

অলিম্পিক্স মানেই সারা বিশ্ব যেন উৎসব পালন করতে আসে আয়োজক শহরে। এ বারে তা হচ্ছে না।

Advertisement

অলিম্পিক্সের কথা মাথায় রেখে ১২ জুলাই থেকে টোকিয়োতে জরুরি অবস্থা চলছে। প্রায় দর্শকহীন হতে চলেছে এ বারের অলিম্পিক্স। বিদেশি দর্শকদের জাপানে ঢোকার অনুমতি নেই। স্থানীয় মানুষ কিছু কিছু খেলা দেখতে পেলেও নিষেধ রয়েছে তাঁদের ওপরেও।

কেমন নিষেধ? কোনও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা যাবে না, গান গাওয়া যাবে না, চিৎকার করা যাবে না, শিস দেওয়া যাবে না। এমন কিছুই করা যাবে না যাতে করোনা সংক্রমণের সুযোগ রয়েছে।

Advertisement

দল বেঁধেও থাকা যাবে না। শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে দর্শকদের। ৮ অগস্ট অলিম্পিক্স শেষ হলেও টোকিয়োর জরুরি অবস্থা চলবে ২২ অগস্ট পর্যন্ত।

এ বারের অলিম্পিক্স ক্রীড়াবিদদের জন্যও বেশ কঠিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন করোনা পরীক্ষা করা হবে তাঁদের। জাপানে ঢোকার আগে ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে দু’বার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে সকলের। নেগেটিভ ফল নিয়েই জাপানে ঢুকতে হবে সকলকে। গেমস ভিলেজে প্রতি মুহূর্তে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে ক্রীড়াবিদদের।

নারী শক্তির জয়

এ বারের অলিম্পিক্সে বহু বড় দেশের মহিলা প্রতিযোগীর সংখ্যা বেশি। শীর্ষে রয়েছে চিন। তাদের ২৯৮ জন মহিলা এবং ১৩৩ জন পুরুষ প্রতিযোগী। আমেরিকার হয়ে নামবেন ৩২৯ জন মহিলা এবং ২৮৪ জন পুরুষ প্রতিযোগী। গ্রেট ব্রিটেনের হয়ে নামবেন ২০১ জন মহিলা এবং ১৭৫ জন পুরুষ প্রতিযোগী। কানাডা দলেও মহিলাদের সংখ্যা বেশি। ২২৫ জন মহিলা এবং ১৪৫ জন পুরুষ প্রতিযোগী তাদের। অস্ট্রেলিয়া দলে রয়েছেন ২৫২ জন মহিলা এবং ২১৯ জন পুরুষ প্রতিযোগী। রাশিয়ার হয়ে খেলবেন ১৮৩ জন মহিলা প্রতিযোগী এবং ১৪৬ জন পুরুষ।

ভারতীয় দলে যদিও পুরুষদের সংখ্যা বেশি। ১২৭ জনের মধ্যে ভারতীয় দলে ৫৬ জন মহিলা এবং ৭১ জন পুরুষ।

দেশের সংখ্যা কমে গিয়েছে এ বারের অলিম্পিক্সে। ২০১৬ রিও অলিম্পিক্সে অংশ নিয়েছিল ২০৭টি দেশ। এ বারের অলিম্পিক্সে অংশ নিচ্ছে ২০৫টি দেশ।

বৃহত্তর ভারত

১২৭ জন ভারতীয় ক্রীড়াবিদ যোগ দিচ্ছেন এ বারের অলিম্পিক্সে। ১৮টি বিভিন্ন খেলায় অংশ নেবেন তাঁরা। প্রশিক্ষক এবং দলের সঙ্গে যুক্ত বাকিদের নিয়ে ভারতীয় দল ২২৭ জনের। এটাই এখনও অবধি অলিম্পিক্সে পাঠানো ভারতের সব চেয়ে বড় দল।

বক্সিংয়ে ছয় বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মেরি কম এবং হকি দলের অধিনায়ক মনপ্রীত সিংহ এ বারের অলিম্পিক্সে ভারতের পতাকাবাহক। শেষ দিনে ভারতের পতাকাবাহক কুস্তিগীর বজরং পুনিয়া

ভারতীয় হকি দল। ছবি: রয়টার্স

রিও অলিম্পিক্সে ১১৭ জন ভারতীয় খেলোয়াড় যোগ দিয়েছিলেন। পদক এসেছিল দুটি। পি ভি সিন্ধু রুপো জিতেছিলেন ব্যাডমিন্টনে এবং সাক্ষী মালিক ব্রোঞ্জ জেতেন কুস্তিতে। এ বারেও পদকের জন্য সিন্ধুর দিকে তাকিয়ে থাকবে ভারত। সেই সঙ্গে তিরন্দাজ দীপিকা কুমারীর দিকেও নজর থাকবে। পদকের আশা থাকবে কুস্তিগীর অমিত পঙ্ঘলের থেকেও। শুটিংয়ে অনেক ভারতীয় প্রতিযোগীকে নিয়েই আশা রয়েছে।

এ বারের অলিম্পিক্সেই প্রথম বারের জন্য ফেন্সিং এবং সেইলিংয়ে যোগ দেবে ভারতীয় দল। হকির পরে ভারতের সব চেয়ে বড় দল অ্যাথলেটিক্সে। ২৫ জন অ্যাথলিট নামতে চলেছেন এ বারে। তাঁদের মধ্যে ৮ জন মহিলা এবং ১৭ জন পুরুষ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

যুদ্ধ ছাড়াও বাতিল

২০২০ সালের আগে অলিম্পিক্স বাতিল হয়েছিল তিন বার। প্রতি বারই কারণ ছিল যুদ্ধ। ১৯১৬, ১৯৪০ এবং ১৯৪৪ সালে বাতিল হয় অলিম্পিক্স। ১৮৯৬ সাল থেকে আর কোনও বার অলিম্পিক্স বাতিল হয়নি। ২০২০ সালের অলিম্পিক্স বাতিল হল। করোনার কারণে। পিছিয়ে দেওয়া হল তা ২০২১ সালে।

১৯২০ সালের অলিম্পিক্সে জার্মানিকে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শুরু করার অভিযোগে জার্মানিকে বাদ দিয়েই অনুষ্ঠিত হয়েছিল অলিম্পিক্স। ১৯৬৮ সালের অলিম্পিক্স কলঙ্কিত হয় বন্দুকের গুলিতে। মেক্সিকোতে অস্ত্রহীন মানুষের উপর গুলি চালানো হয়। টেলিটলকো গণহত্যা নামে যা আজও অলিম্পিক্সে একটা কালো দাগ।

তবে অলিম্পিক্সে রক্তের দাগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে ১৯৭২ সালে। সে বার মিউনিখ অলিম্পিক্সে ইজরাইল দলের ওপর হামলা চালায় বেশ কিছু প্যালেস্তাইনবাসী। তাঁদের সঙ্গে ছিল জঙ্গিরাও। ১১ জন ইজরাইলিকে খুন করা হয়। প্রথমে দু’জনকে খুন করা হয় এবং ন’জনকে বন্দি করা হয়। পরে তাঁদেরকেও খুন করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement