নিউজিল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুরমুশ করার পর একদিনের সিরিজ হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বিরাট কোহালির দল। ছয় বছরে এই প্রথম ভারতীয় দল একদিনের সিরিজের কোনও ম্যাচে জিততে পারল না। শেষ বার এমন হয়েছিল ২০১৪ সালে । যখন নিউজিল্যান্ডে এসে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ০-৪ হেরেছিল ভারত। একটি ম্যাচ টাই হয়েছিল।
এই সিরিজে ভারতীয় দলে ছিলেন না রোহিত শর্মা, শিখর ধওয়ন, হার্দিক পাণ্ড্য, ভুবনেশ্বর কুমারের মতো নিয়মিতরা। ফলে, অনেকের কাছেই সুযোগ ছিল নিজেকে চেনানোর। কিন্তু, অধিকাংশ ক্রিকেটারই সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি, বিরাটের সামনে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি। এই অবস্থায় ভারতের একদিনের দল থেকে বাদ পড়তে পারেন অনেকে।
শিবম দুবে ওয়ানডে সিরিজের কোনও ম্যাচ খেলেননি। যাতে পরিষ্কার যে তাঁর উপর ভরসা রাখতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। আর তার কারণও রয়েছে। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সুযোগ পেয়েও নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাঁচ ইনিংসে ১০.২৫ গড়ে ৪১ রান করেছিলেন শিবম। সর্বাধিক ১৩। স্ট্রাইক রেট ছিল ১১৭.১৪। বোলিংয়ে পাঁচ ম্যাচে নয় ওভারের বেশি দেওয়া যায়নি তাঁকে। যাতে ১০২ রান দিয়েছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন দুই উইকেট। ওভার-প্রতি দিয়েছিলেন ১১.৩৩ রান। ব্যাটে-বলে একেবারেই সাদামাটা পারফরম্যান্স।
পরিষ্কার ইঙ্গিত, শিবমের উপর আস্থা হারিয়েছে দল। তা ছাড়া ভারতের পরের একদিনের সিরিজের আগে হার্দিকের সুস্থ হয়ে ওঠার আশা করা হচ্ছে। আর হার্দিক ফিরলে কোনও সন্দেহ নেই, শিবমের জায়গা হবে না স্কোয়াডেও। তিনি অবশ্য এর জন্য শুধু নিজেকেই দোষারোপ করতে পারেন।
সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ ময়াঙ্ক আগরওয়ালও। রোহিত শর্মা চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় শেষ মুহূর্তে ডাক পেয়েছিলেন একদিনের দলে। খেলেওছিলেন তিনটি একদিনের ম্যাচে। পৃথ্বী শ ও তিনি একসঙ্গে ওপেন করেছিলেন তিন ম্যাচে। দুই ওপেনারেরই একসঙ্গে অভিষেক ঘটেছিল একদিনের ক্রিকেটে।
পারফরম্যান্সে অবশ্য ময়াঙ্ককে টেক্কা দিয়েছেন পৃথ্বী। ময়াঙ্ক তিন ইনিংসে ১২ রানে করেছেন ৩৬ রান। সর্বাধিক ৩২। মানে, বাকি দুই ম্যাচে করেছেন মাত্র ৪। যা মোটেই তাঁর পক্ষে স্বস্তির নয়। কারণ, এই সুযোগ কাজে লাগানো দরকার ছিল কর্নাটকির।
যা পরিস্থিতি, তাতে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে স্কোয়াডে থাকার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকছেন পৃথ্বী। তিন ইনিংসে মুম্বইকরের ব্যাটে এসেছে ৮৪ রান। সর্বাধিক ৪০। গড় ২৮। স্ট্রাইক রেট ১০২.৪৩। ফলে, রোহিত শর্মা ও শিখর ধওয়ন ফিরলে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে পৃথ্বীর থাকারই সম্ভাবনা বেশি।
গত বছর ইংল্যান্ডে হওয়া একদিনের বিশ্বকাপের সময় থেকেই কেদার যাদবের দলে থাকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সমস্যা হল, কেদারের বয়স এই মুহূর্তে ৩৪। মার্চের ২৬ তারিখে তা হচ্ছে ৩৫। ফলে, আর কতদিন তিনি জাতীয় নির্বাচকদের ভাবনায় থাকবেন, সেটা বড় প্রশ্ন।
অবশ্য, পারফরম্যান্স থাকলে বয়সকে একটা সংখ্যা বলে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলা যায়। কিন্তু, কেদারের ব্যাট মোটেই ঝড় তুলতে পারছে না। নিউজিল্যান্ডে সিরিজের প্রথম দুই একদিনের ম্যাচ খেলে তিনি করেছেন ৩৫ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৬। তাঁর গড় ৩৫। স্ট্রাইক রেটও আহামরি নয় একেবারেই, ৮৩.৩৩!
পাশাপাশি, বোলার কেদারকেও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। বোঝা যাচ্ছে যে, তাঁর অফস্পিনের উপর বিরাট কোহালির তেমন ভরসা নেই। শেষ একদিনের ম্যাচে কেদারের জায়গায় নেমে মণীশ পাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেও দিয়েছেন। ক্রিকেটমহল মনে করছে ছয় নম্বরে মণীশেরই নিয়মিত সুযোগ পাওয়া উচিত।