ভারতের কোচ হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত রবি শাস্ত্রী। কপিল দেব-দের কমিটি তাঁকেই যোগ্য হিসেবে বেছে নিলেন এই কাজের জন্য। ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চুক্তি করল ভারতীয় বোর্ড। অধিনায়ক বিরাট কোহালির পছন্দকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কোচ হিসাবে ঠিক কতটা সফল রবি? ব্যর্থতাই বা কতটা এসেছে তাঁর সময়? দেখে নেওয়া যাক।
প্রথম বার ভারতীয় কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীকে দেখা যায় ২০০৭ সালে। সে বার তিনি অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দলের সঙ্গে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। সেবারের ত্রিপাক্ষিক সিরিজের ফাইনালে ভারত ২৫ রানে হেরে যায় পাকিস্তানের কাছে।
তবে স্থায়ী কোচ হিসেবে তাঁকে প্রথম নিযুক্ত করা হয় ২০১৫ সালে। সে বারের বিশ্বকাপ থেকে সেমিফাইনালে বিদায় নেওয়ার পর ডানকান ফ্লেচারকে সরিয়ে ভারতের কোচ করা হয় রবি শাস্ত্রীকে। যদিও সে বার কোচ নয় টিম ডিরেক্টর হিসাবে নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। তবে তাঁকে নিযুক্ত করা হয় এক বছরের জন্য।
২০১৭ সালে অনিল কুম্বলেকে সরিয়ে তৃতীয় বারের জন্য কোচ হয়ে আসেন রবি শাস্ত্রী। সৌরভ, সচিনদের অ্যাডভাইজারি কমিটি সে বার দু’বছরের জন্য কোচ হিসেবে বেছে নেয় তাঁকে। সে বারও বিরাটের পছন্দকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। কোচ রবির ওপরেই দায়িত্ব পরে বোলিং, ব্যাটিং কোচ বেছে নেওয়ার।
কোচ রবির সময়ই প্রথম বারের জন্য অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয় আসে ভারতের। স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারহীন অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারায় কোহালির ভারত। তবে সেই জয়ের মাঝেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কোচ রবি।
ম্যাচের শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে আনন্দের মুহূর্তে হিন্দিতে এমন এক বাক্য ব্যবহার করে বসেন যে বিতর্ক তৈরি হয়। তিনি এও দাবি করেন যে, ভারতের এই সিরিজ জয় ১৯৮৩-র বিশ্বকাপ জয়ের থেকেও বড় ঘটনা।
ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ হারের (১-৪) শোক ভুলিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জয়। কোহালি সেই ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ ম্যাচে ৫৯৩ রান করেন, গড় ৫৯.৩০। সেই টিমকেও রবি ১৫-২০ বছরের মধ্যে সেরা টিম বলে দাবি করেন।
টেস্টে অনেক সিরিজ হারলেও একদিনের ক্রিকেটে অপ্রতিরোধ্য ছিল ভারত। শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দাপটের সঙ্গে সিরিজ যেতে ভারত। শুধু মাত্র ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে তারা।
ইংল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পরেই এশিয়া কাপে দুরন্ত জয় পায় রোহিতের ভারত। ফাইনালে শেষ বলে বাংলাদেশকে হারিয়ে জয় স্মরণীয় করে রাখে তারা।
তবে একদিনের ক্রিকেটে অপ্রতিরোধ্য ভারতকে নিয়ে আশা ছিল বিশ্বকাপ জয়ের। সেই কাজে ব্যর্থ হন রবি। প্রশ্ন ওঠে তাঁর দল নির্বাচন নিয়েও। ভারতের মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার দায় কোনও ভাবেই এড়াতে পারেন না কোচ। ভাবা হচ্ছিল সেই দায় নিয়ে হয়তো সরিয়ে দেওয়া হবে তাঁকে।
কিন্তু এ বারেও তাঁর ওপরেই ভরসা রাখল অ্যাডভাইজারি কমিটি। আরও দু’বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হল তাঁকে। দেখা যাক সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারতের মিডল অর্ডারকে তৈরি করে কোন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন কোচ রবি ও অধিনায়ক কোহালির জুটি।