Milkha Singh

Milkha Singh Death: মিলখার পদক না পাওয়া ‘সাফল্য’-ই এগিয়ে দিয়েছে পরবর্তী প্রজন্মকে

১৯২৯ সালের ২০ নভেম্বর এখনকার পাকিস্তানের মুজফফরগড় জেলার গোবিন্দপুরায় জন্ম তাঁর। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় ভারতে চলে আসেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২১ ০২:৫১
Share:

মিলখা সিংহ।

সোনা, রূপো, ব্রোঞ্জ কোনও পদকই পাননি। কিন্তু ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিক্সে চতুর্থ হয়েই মিলখা সিংহ কিংবদন্তি হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ মিলখার সেই চতুর্থ হওয়া ভারতীয় খেলাধুলোয় অন্যতম মাইল ফলক হিসেবে ছয় দশক পরেও রয়ে গিয়েছে। সেই পদক না পাওয়াই ভারতের প্রজন্মের পর প্রজন্মকে উৎসাহ দিয়ে আসছে খেলাধুলোয়।

Advertisement

কিংবদন্তি মিলখা যত না চর্চিত, ছোট মিলখার চর্চা তার থেকে কম কিছু নয়। ১৯২৯ সালের ২০ নভেম্বর এখনকার পাকিস্তানের মুজফফরগড় জেলার গোবিন্দপুরায় জন্ম তাঁর। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় ভারতে চলে আসেন। বাবা, মা, ভাই এবং দুই বোনকে দাঙ্গায় চোখের সামনে খুন হতে দেখেন। মিলখার ১৫ ভাই-বোনের মধ্যে ৮জনই দাঙ্গায় প্রাণ হারান।

অনাথ মিলখা ১৯৫২ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। শ্রীনগরে তাঁর চাকরি হয়। তখন সেনাবাহিনীর বিভিন্ন খেলাধুলোয় মিলখাকে দৌড়তে দেখে সেনার আধিকারিকরা তাঁকে আলাদা করে নজর করতে শুরু করেন। স্প্রিন্ট হোক, বা দূরপাল্লার দৌড়, ধারাকাছে কাউকে আসতে দিতেন না। শেষ পর্যন্ত ৪০০ মিটারকেই পাখির চোখ করেন। সেনা কর্তাদের তত্ত্বাবধানেই শুর হয় মিলখার উড়ন্ত শিখ হয়ে ওঠার যাত্রা।

Advertisement

১৯৫৬ সালের মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে সুযোগ পান। কিন্তু প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে যান। দুই বছর পর কার্ডিফে কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম ভারতীয় হিসেবে সোনা জেতেন। ৪৬.৬ সেকেন্ড সময় করে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যালকম স্পেন্সকে হারান মিলখা। ৫২ বছর পর্যন্ত এই নজির মিলখার একারই ছিল। ২০১০ সালে দিল্লি কমনওয়েথল গেমসে ডিসকাস থ্রো-তে কৃষ্ণা পুনিয়া সোনা জিতে মিলখার মাইলফলক স্পর্শ করেন।

১৯৫৬ এশিয়ান গেমসে ২০০ ও ৪০০ মিটারে সোনা জেতেন। ১৯৫৯ সালে পদ্মশ্রী পান। ১৯৬২ সালের এশিয়ান গেমসে ৪০০ মিটারে আবার সোনা জেতেন।

১৯৬০ সালে মিলখার নামের সঙ্গে ‘উড়ন্ত শিখ’ যোগ হয়। লাহোরে ‘ডুয়াল চ্যাম্পিয়নশিপ’-এর সময় পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান মিলখার দৌড় দেখে তাঁকে এই নাম দেন। কিন্তু পাকিস্তানে গিয়ে ‘উড়ন্ত শিখ’-এর মনে ছোটবেলার ক্ষতগুলো বারবার ফিরে আসে। ফলে তাঁর জন্য কঠিন হয়ে যায় এই প্রতিযোগিতা। শেষ পর্যন্ত জওহরলাল নেহরুর কথায় অতীত ভুলে ট্র্যাকে নামেন।

সেই বছরই মিলখার জীবনে সবথেকে বড় সাফস্য আসে। ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিক্সে ৪০০ মিটারের চতুর্থ হন। তার আগে যে ফর্মে তিনি ছিলেন, তাতে অনেকেই মনে করেছিলেন পদক মিলখার গলাতেই ঝুলবে। কিন্তু ২৫০ মিটারে পৌঁছে ভুল করে ফেলেন মিলখা। জিতছেন ধরে নিয়ে গতি কমিয়ে দেন। তাতেই অল্পের জন্য পদক থেকে বঞ্চিত হন।

তরুণ প্রজন্মকে কখনও বঞ্চিত করেননি তিনি। এর জন্য ২০০১ সালে অর্জুন পুরস্কার প্রত্যাখান করেন। ভারত সরকারকে জানান, এই পুরস্কার তরুণদের জন্য, তাঁর মতো বুড়োরা এর যোগ্য নয়।

মিলখার ঘটনাবহুল জীবন দুই মলাটের মধ্যে আসে ‘দ্য রেস অফ মাই লাইফ’ নাম দিয়ে। ২০১৩ সালে এই বই প্রকাশিত হয়। পরে তাঁর বায়োপিক ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ তৈরি হয়। ছোটবেলা থেকে ভাগতে থাকা মিলখার ‘রেস’ অবশেষে ৯১ বছর বয়সে এসে থেমে গেল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement