আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে উল্লাস ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ছবি: এক্স।
একটি দল নিজেদের প্রথম ম্যাচ হাসতে হাসতে জিতেছে। অন্য দলটি আবার প্রথম ম্যাচে হেরে চাপে পড়ে গিয়েছে। দুই দলের পরিস্থিতি আলাদা। এক দল গ্রুপ শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার পরিকল্পমা করছে। অন্য দলটি আবার বিশ্বকাপে টিকে থাকতে মরিয়া। কিন্তু এই দুই দল যখনই মুখোমুখি হয় তখনই তাদের মধ্যে কেউ ফেভারিট থাকে না। ক্রিকেট বিশ্ব দু’টি আলাদা দলে ভাগ হয়ে যায়। রবিবার আবার সেটাই হতে চলেছে। সে দিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। খোঁচা খাওয়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে ভারতকে।
চলতি বিশ্বকাপে দুই দলের পরিস্থিতি আলাদা। ভারত নিজেদের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে সহজে হারিয়েছে। পাকিস্তান আবার আয়োজক দেশ আমেরিকার কাছে সুপার ওভারে হেরে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, ভারতের কাছে হারলে বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে ফাইনালে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে পাকিস্তানের। তাই তারা জিততে মরিয়া। ভারতকেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, এ বার আমেরিকা যে ভাবে খেলছে তাতে আরও একটা অঘটন ঘটাতে তৈরি তারা। যদি পাকিস্তানকে ভারত হারাতে পারে তা হলে আমেরিকার বিরুদ্ধে খেলা অনেক সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু পাকিস্তানের কাছে হারলে নিজেদের উপরেই চাপ নিয়ে ফেলবেন রোহিত শর্মারা।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হবে নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ থেকেই এই মাঠের পিচ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভারত-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ এই মাঠেই হয়েছিল। সেই ম্যাচে অসমান বাউন্স দেখা গিয়েছিল। কোনও বল উঠছিল বুকের উচ্চতায়, কোনও বল আবার খুব নিচু হয়ে যাচ্ছিল। পিচে যে গন্ডগোল রয়েছে তা আয়োজকেরা মেনে নিয়েছেন। পিচে ঘাস রয়েছে। সেই সঙ্গে ফাটলও রয়েছে। এই ফাটল মেরামত করার চেষ্টা করছেন আয়োজকেরা। ফাটলের কারণেই অসমান বাউন্স তৈরি হচ্ছিল। পিচের উপর রোলার চালানো হচ্ছে। তাতে পিচ আগের থেকে অনেক পাটা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পিচ নিয়ে চিন্তায় রয়েছে ভারতও। শুক্রবার নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে দীর্ঘ সময় অনুশীলন করে ভারতীয় দল। বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদবকে নেটে ব্যাট করতে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু ক্ষণ। ব্যাটিং অনুশীলন সেরেছেন রোহিত-সহ দলের অন্য ব্যাটারেরাও। পিচের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য বোলারদের বিভিন্ন লেংথে বল করতে বলা হয়। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, আরশদীপ সিংহদের বলের গতি কমাতে এবং বৃদ্ধি করতে দেখা গিয়েছে। কী ধরনের শট মারা উচিত আর কোন শট মারা উচিত নয়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ভারতীয় শিবিরে। নিউ ইয়র্কের পিচকেই রবিবারের ম্যাচে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে ভারতীয় দল।
বিরাট ও সূর্য বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত রান না পেলেও আইপিএলে ভাল ফর্মে ছিলেন তাঁরা। সেই ফর্ম পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও ধরে রাখতে চাইবেন তাঁরা। রোহিত ও ঋষভ পন্থ ফর্মে রয়েছেন। তবে ভারতকে ভোগাতে পারে লোয়ার মিডল অর্ডার। শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাডেজারা ব্যাট হাতে এখনও পর্যন্ত ভরসা দিতে পারেননি। পাকিস্তানের চার পেসার মহম্মদ আমির, শাহিন আফ্রিদি, হ্যারিস রউফ ও নাসিম শাহ ভারতের টপ অর্ডারকে সমস্যায় ফেলতে পারেন। সে ক্ষেত্রে লোয়ার মিডল অর্ডারকে দায়িত্ব নিতে হবে।
তবে বোলারেরা ভাল ফর্মে রয়েছেন। পাকিস্তানের ব্যাটারেরা আমেরিকার বিরুদ্ধেই যে ভাবে রান করতে সমস্যায় পড়েছেন তাতে ভারতের সামনে তাঁদের আরও কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারত ও পাকিস্তান মোট সাতটি ম্যাচ খেলেছে। ভারত জিতেছে ছ’টি। পাকিস্তান একটি। রবিবার ৭-১ করার লক্ষ্যে খেলতে নামবেন রোহিতেরা।
রবিবার ভারতীয় সময় রাত ৮টা থেকে শুরু খেলা। টেলিভিশনে দেখা যাবে স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে। ডিজিটাল মাধ্যমে খেলা দেখা যাবে হটস্টার অ্যাপে।