ভারতীয় দল। ছবি: পিটিআই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ এবং সুপার এইটের সব ম্যাচে জেতা হয়ে গিয়েছে। শনিবার ভারতীয় দল নামছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। বার্বাডোজ়ে ফাইনালে তাদের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের মতোই তারা একটি ম্যাচেও হারেনি। ধারে-ভারে ভারতীয় দলকে পাল্লা দেওয়ার মতো ক্ষমতা রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। শনিবারের দলে কি কোনও পরিবর্তন দেখা যাবে? কেমন হতে পারে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ?
রোহিত শর্মা: ওপেনার হিসাবে রোহিত শর্মার জায়গা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। ভারত যে ক’টি ম্যাচে নজরকাড়া ক্রিকেট খেলেছে, সব ক’টিতেই রোহিত শুরুতে নেমে আগ্রাসী ইনিংস খেলেছেন। রোহিত খেলার মধ্যে কোনও জড়তা দেখা যাচ্ছে না। প্রথম থেকেই হাত খুলে মারছেন। কোনও বোলারকে রেয়াত করছেন না। ফাইনালেও রোহিতের থেকে এমন ইনিংস চাইছেন সমর্থকেরা।
যশস্বী জয়সওয়াল: ফাইনাল হলেও দলে এই পরিবর্তনটি করা উচিত। প্রথম ম্যাচই যদি হয় ফাইনাল, তা হলে যে কোনও ক্রিকেটারেরই চাপে পড়া স্বাভাবিক। তবে যশস্বীর অভিজ্ঞতা আছে। দলের সঙ্গে অনেক দিন ধরে রয়েছেন। ফাইনালে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠানো উচিত তাঁকেই।
বিরাট কোহলি: ওপেনিংয়ে এতগুলি ম্যাচে নেমে কোহলি হতাশ করেছেন। সাত ম্যাচে মাত্র ৭৫ রান সে কথাই বলছে। কোহলি এমন সব শট খেলে আউট হচ্ছেন, যা বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। যতই রোহিত বলুন যে কোহলির সেরাটা জমে রয়েছে ফাইনালের জন্য, যে কেউই জানেন যে, ওপেনিংয়ের থেকে তিন নম্বর জায়গায় কোহলি কত বেশি স্বচ্ছন্দ। তাই ফাইনালে তাঁকে পুরনো জায়গায় নামতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
সূর্যকুমার যাদব: আগের ম্যাচগুলিতে ওপেনারেরা ব্যর্থ হলেও সূর্যকুমার মান রাখছেন। সেমিফাইনালে সূর্যকুমার রোহিতের সঙ্গে জুটি না বাঁধলে কী হত বলা মুশকিল। তাঁর ৪৭ রান সে দিক থেকে মূল্যবান। ফাইনালেও সূর্যকে সামাল দিতে হতে পারে। যদি ওপেনারেরা আবার ব্যর্থ হন, তা হলে সূর্যকেই রান করতে হবে।
ঋষভ পন্থ: দলের প্রয়োজনে এত দিন পন্থ তিনে নামছিলেন। খুব খারাপ খেলেছেন, তা বলা যাবে না। তবে ফাইনালে দলের প্রয়োজনে পন্থকে পাঁচে নামতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। হঠাৎ করে আগ্রাসী ক্রিকেট খেললে চলবে না। দলের প্রয়োজনে ধীরস্থির ইনিংস খেলতে হতে পারে।
হার্দিক পাণ্ড্য: ব্যাট হাতে হার্দিকের অবদান প্রায় প্রতি ম্যাচেই দেখা যাচ্ছে। বলার মতো রান হয়তো করেননি। কিন্তু মাঝের দিকে নেমে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেছেন। শনিবার তাঁকে বল হাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হতে পারে। যদিও এ বারের বিশ্বকাপে বল হাতে খুব বেশি সক্রিয় দেখায়নি তাঁকে।
রবীন্দ্র জাডেজা: যে কোনও ফরম্যাটেই ভারতের ভাল বিকল্প। তবে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খুব একটা ভাল যায়নি জাডেজার কাছে। না বল, না ব্যাট— কোনও ভাবেই দলের হয়ে বলার মতো অবদান রাখতে পারেননি। ফাইনাল বড় ম্যাচ। জাডেজার ব্যাটিং বা বোলিং থেকে এই ম্যাচে দায়িত্বশীল অবদানের আশা রাখছে দল।
অক্ষর পটেল: লোয়ার অর্ডারে ভারতের সবচেয়ে ভাল বিকল্প। এ বারের প্রতিযোগিতায় শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে। হাতে কয়েকটা বল পেলেই চালিয়ে খেলে অন্তত গোটা ১০-১৫ রান করে দিতে পারেন। সেটাই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের পিচে বাড়তি সুবিধাও পাচ্ছেন অক্ষর।
যশপ্রীত বুমরা: তাঁর জায়গা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। চোট সারিয়ে ফিরে আসার পর থেকে বুমরা পিছনে ঘুরে তাকানোর মতো কোনও ইঙ্গিত দিচ্ছেন না। একের পর এক ম্যাচে ভাল বল করছেন। ডেথ ওভার এবং জুটি ভাঙার ক্ষেত্রে বুমরার অবদান অনস্বীকার্য।
কুলদীপ যাদব: সেমিফাইনালে একার হাতে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর ‘চায়নাম্যান’ বোলিং ভারতকে প্রভূত সাহায্য করছে। বার্বাডোজ়ের পিচেও কুলদীপের ভাল বোলিং দেখার অপেক্ষায় দল।
আরশদীপ সিংহ: প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিদের তালিকায় দুই নম্বরে রয়েছেন। ফাইনালে তিনটি উইকেট পেলেই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে যাবেন। এটাই ভাল খেলার অনুপ্রেরণা হতে পারে আরশদীপের কাছে।