উইকেট নেওয়ার পর হার্দিক পাণ্ড্য এবং বিরাট কোহলির উচ্ছ্বাস। ছবি: এক্স।
আইপিএলের পর এই প্রথম খেলতে নামল ভারতীয় দল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই দাপট দেখালেন হার্দিক পাণ্ড্যেরা। আইপিএলে যে হার্দিককে সমালোচনায় বিদ্ধ করা হচ্ছিল, তিনিই বুধবার ৩ উইকেট নিয়ে সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে উঠলেন।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হিসাবে হার্দিকের জন্য ছিল শুধুই বিদ্রুপ আর কটাক্ষ। তিনি টস করতে এসে টিটকিরি শুনেছেন, বল করতে এলে গোটা মাঠ জুড়ে শোনা গিয়েছে কটাক্ষ। তার প্রভাব পড়ছিল খেলায়। ব্যাটে, বলে সাফল্য পাননি হার্দিক। অধিনায়ক হিসাবেও দলকে জেতাতে ব্যর্থ। আইপিএলের প্লে-অফেও উঠতে পারেনি রোহিত শর্মার হাত ধরে পাঁচ বার ট্রফি জেতা মুম্বই।
এত দিন হার্দিকের মুম্বইয়ে রোহিত খেলছিলেন ব্যাটার হিসাবে। জার্সি বদল হতেই দায়িত্ব বদল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের অধিনায়ক রোহিত। আর হার্দিক খেলছেন অলরাউন্ডার হিসাবে। তাতে বদলে গিয়েছে হার্দিকের খেলাও। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে তিনটি উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের লরকান টাকার, কার্টিস ক্যামফার এবং মার্ক অ্যাডায়ারকে আউট করেন তিনি। বিপক্ষের মিডল অর্ডারকে ভাঙেন হার্দিক। তাই অধিনায়ক রোহিতও অলরাউন্ডারের পুরো ওভারের কোটা পূরণ করান।
নিউ ইয়র্কের মাঠ বুধবার ভরেনি। খুব কম সংখ্যক দর্শকই সে দেশের সময় অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টার সময় খেলা দেখতে এসেছিলেন। ইনিংসের মাঝে হার্দিক তাঁদের ধন্যবাদ জানান। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “দর্শকদের সামনে খেলতে সব সময়ই ভাল লাগে। আমরা ভারতীয়েরা বিশ্বের সব জায়গায় রয়েছি। আমরা বিশ্বকে শাসন করি। তাই এই মাঠেও দর্শকদের দেখে খুব ভাল লাগছে।” দেশের জার্সিতে ফেরা প্রসঙ্গে হার্দিক বলেছেন, “দেশের হয়ে খেলতে সব সময় ভাল লাগে। আমি গর্বের সঙ্গে দেশের প্রতিনিধিত্ব করি। অতীতে বিশ্বকাপে দলের হয়ে অবদান রেখেছি। ঈশ্বরের আশীর্বাদও আমার সঙ্গে রয়েছে।”
আর সেই দর্শকেরা হার্দিককে ভরিয়ে দিলেন হাততালি আর চিৎকারে। এত দিন আইপিএলে হার্দিক বল করতে এলেই যে কটাক্ষের আওয়াজ শোনা যেত ওয়াংখেড়ে জুড়ে, দেশের জার্সিতে নামতেই সেই হার্দিক উইকেট নিতে শোনা গেল উচ্ছ্বাস। ভারতীয় সমর্থকেরা নিউ ইয়র্কের মাঠে হার্দিকের নামে জয়ধ্বনিও দেন।
হার্দিক নিজেও ফর্মে ফিরে খুশি। তিনি বলেন, “প্রথম উইকেটটা সবচেয়ে ভাল লেগেছে। সাধারণত বোল্ড করি না খুব একটা। আমি খাটো লেংথে বল করেই অভ্যস্ত। তবে আজ ফুল লেংথে বল করতেই হত। এ ধরনের পিচে নিয়ন্ত্রিত বোলিং খুবই দরকার।”
হার্দিকের মুখে স্বস্তির হাসি। এত দিন যে হাসি দিয়ে ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছিলেন তিনি, সেই হাসিই এখন অনেক উজ্জ্বল। ভারতীয় সমর্থকেরা চাইবেন দেশের জার্সিতে আরও অনেক ম্যাচ জেতান তিনি। দু’মাসের আইপিএল ভুলে সমর্থকেরা তাই এখন হার্দিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন পাণ্ড্যকে।