ম্যাচ জিতে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি রোহিত শর্মা (বাঁ দিকে)। হাত দিয়ে চোখ ঢেকেছেন তিনি। রোহিতকে বোঝাচ্ছেন বিরাট কোহলি। ছবি: এক্স।
ইংল্যান্ডকে হারানোর পরে তখন একে একে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা সাজঘরে ঢুকছেন। হঠাৎ সাজঘরের বাইরে একটি চেয়ারে বসে পড়লেন রোহিত শর্মা। তাঁর চোখে তখন জল। বাঁ হাত তুলে চোখ ঢাকলেন। কয়েক সেকেন্ড পরে হাত নামালেন। তাকিয়ে থাকলে সামনের দিকে। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, ফাইনালে উঠে, বিশেষ করে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে কতটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন তিনি। অধিনায়ক হিসাবে ২২৬ দিন পরে ভারতকে আরও একটি ফাইনালে তুলেছেন রোহিত। সেই সব কথাই হয়তো ভাবছিলেন তিনি। কিছু ক্ষণ পরে বিরাট কোহলি সাজঘর থেকে বেরিয়ে রোহিতের সামনে দাঁড়ালেন। তাঁর গায়ে হাত রেখে কথা বললেন। হাসানোর চেষ্টা করলেন। কিছু ক্ষণ পরে হাসি দেখা গেল রোহিতের মুখেও।
শনিবার ফাইনালে ভারতের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচে তাঁরা কেমন ক্রিকেট খেলতে চান সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন রোহিত। ভারত অধিনায়ক বলেন, “দল হিসাবে আমাদের খুব শান্ত থাকতে হবে। কারণ, মাথা ঠান্ডা থাকলে তবেই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। ফাইনালে জিততে হলে ভাল ক্রিকেট খেলা ছাড়া কোনও উপায় নেই। আমরা এ বার আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছি। সেটাই ফাইনালে আরও এক বার খেলতে চাই।”
রোহিত এই ম্যাচেও অর্ধশতরান করেছেন। কিন্তু আরও এক বার ব্যর্থ হয়েছেন বিরাট। চলতি প্রতিযোগিতায় এখনও পর্যন্ত তাঁর ব্যাটে রান নেই। তাতে অবশ্য বেশি চিন্তা করছেন না রোহিত। ফাইনালেও বিরাটই ওপেন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রোহিত বলেন, “বিরাট কেমন ক্রিকেটার তা আমরা সবাই জানি। সবার কেরিয়ারেই খারাপ সময় আসে। ও জাত ক্রিকেটার। সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। খারাপ সময় কেটে যায়। ওর রান করার কতটা তাগিদ রয়েছে সেটা দেখা যাচ্ছে। ফাইনালেও ওই ওপেন করবে।”
দলগত ক্রিকেট খেলেছে ভারত। গায়ানার উইকেটের সঙ্গে খুব ভাল মানিয়ে নিতে পেরেছে। সেটাই তফাত গড়ে দিয়েছে বলে মনে করেন রোহিত। তিনি বলেন, “আমরা দল হিসাবে খুব পরিশ্রম করেছি। এই জয়ে সবার যোগদান রয়েছে। আমাদের কাছে এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সেটা আমরা জিতেছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলেছি আমরা। সেটাই তফাত গড়ে দিয়েছে।”
রোহিত প্রথমে ভেবেছিলেন ১৪০-১৫০ রানের বেশি উঠবে না। কিন্তু তাঁর ও সূর্যকুমার যাদবের ৭৩ রানের জুটি আশা বাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, “একটা সময় তো মনে হচ্ছিল ১৪০-১৫০ রান হবে। তার পরে সূর্যের সঙ্গে আমার জুটি হল। তখন ভাবলাম আরও ২৫ রান করার চেষ্টা করব। আমি শুরুতে একটা লক্ষ্য নিয়ে নামি। কিন্তু কাউকে বলি না। আমি চাই, সবাই নিজের বুদ্ধি খরচ করুক। এই পিচে ১৭০ রান করা কঠিন।”
রান তাড়া করতে নেমে ভারতীয় স্পিনারদের সামনে ভেঙে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। বিশেষ করে অক্ষর পটেল ও কুলদীপ যাদব ৩টি করে উইকেট নেন। স্পিনারদের প্রশংসা শোনা গিয়েছে রোহিতের মুখে। তিনি বলেন, “অক্ষর ও কুলদীপ খুব অভিজ্ঞ স্পিনার। ওরা বুদ্ধি করে বল করে। পরিকল্পনা কাজে লাগায়। আমি জানতাম, ওদের বিরুদ্ধে খেলা সহজ হবে না। সেটাই হল। এই জয় আমাকে খুব স্বস্তি দিয়েছে।”